Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৭ মঙ্গলবার, মে ২০২৪ | ২৪ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

স্বামীকে বোরকা পরিয়ে রেস্টুরেন্টে নিয়ে গেলেন পাকিস্তানি তরুণী

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯ এপ্রিল ২০১৯, ০৭:২৮ PM
আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৯, ০৭:২৮ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


স্বামীকে বোরকা পরিয়ে রেস্তোরাঁয় নিয়ে সামাজিকে যোগাযোগমাধ্যমে একটি ছবি পোস্ট করেছে পাকিস্তানি এক তরুণী। তার এই ছবি মুহূর্তের মধ্যেই ইনস্টাগ্রামে ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে।

ইনস্টাগ্রামে ছবি অনেক দম্পতিই শেয়ার করেন। এতে পরিচিতদের লাইক-কমেন্টও পড়ে অসংখ্য। তবে পাকিস্তানি এই তরুণীর ছবি ভাইরাল হওয়ার পেছনে রয়েছে স্বামীকে বোরকা পরানো। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, রেস্তোরাঁয় স্ত্রীর পাশে বসে রয়েছেন স্বামী; পরেছেন বোরকা। পুরুষতান্ত্রিক সমাজের ছক বাঁধা লিঙ্গবৈষ্যম্যের প্রতি একটি স্পষ্ট বার্তা দিতে চেয়েছেন পাকিস্তানের ওই তরুণী।

‘দ্য মিউলি ওয়েডস’ নামে ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ওই দম্পতি সে ছবি পোস্ট করেছেন দু'দিন আগে। ছবির সঙ্গে রয়েছে ওই তরুণীর দীর্ঘ বার্তা। নিজেকে চেনা ছকে বাঁধা পুরুষের দৃষ্টিতে রেখে পোস্ট লিখেছেন তিনি। একেবারে ঝাঁঝালো ব্যঙ্গাত্মক ভঙ্গিতে নারী-পুরুষের সামাজিক ভেদাভেদের আসল ছবি তুলে ধরেছেন তাতে।

ইনস্টাগ্রামের পোস্টে ওই তরুণী লিখেছেন, এই আমার সুন্দরী স্বামী। আপনারা দেখতে পাচ্ছেন না, কত সুন্দর সে। কেননা তার সৌন্দর্য ঢাকা রয়েছে। কারণ আমিই তার একমাত্র হক্দার। তার সাফল্য, স্বপ্ন সব জীবন আমার কাছে বাঁধা রাখা আছে। তার দিকে কুনজর দেয়াটা পাপ। তাই তার ঘরে থাকাটাই আমার পছন্দের। কারণ এ দুনিয়াটা তো ভালো নয়। যাই হোক, ও যখন আমার সঙ্গে বাইরে বের হয় তখন অবশ্য তা ঠিক আছে।

তথাকথিত আধুনিক সমাজেও যে বহু ক্ষেত্রে নারীর অবস্থান শুধুমাত্র সন্তান উৎপাদনকারী হিসেবেই গণ্য করা হয় তা বোঝাতে ওই পাক তরুণীর তীক্ষ্ণ মন্তব্য, আমরা শুধু এখানেই খেতে আসি। কারণ এখানে স্টেরয়েড ছাড়া চিকেন পাওয়া যায়। এছাড়া আমরা খুবই স্বাস্থ্যসচেতন। বিশেষ করে যখন জানি স্টেরয়েড দেয়া চিকেন খেলে যৌনক্ষমতায় প্রভাব পড়তে পারে। আমি তা চাই না, কারণ তার বেঁচে থাকার প্রধান উদ্দেশ্যই তো সন্তান উৎপাদন করা এবং আমাকে মা হতে দেয়া। ফলে যাই হোক না কেন, আমি তাকে এখানেই খেতে নিয়ে আসব।

এখানেই থেমে থাকেননি ওই তরুণী। নারীদের যে প্রায়শই যৌন হেনস্থার মুখোমুখি হতে হয়, সে চিত্র তুলে ধরেছেন তার লেখনীতে। তিনি লিখেছেন, বাইরে বেরোলে কীভাবে যে নিজেকে লুকিয়ে রাখে সে, এটা আমার খুব ভালো লাগে। কেননা ও তো ‘খুলি তিজোরি’ (খোলা সিন্দুক)। আর আমি চাই না যে ও যৌন হেনস্থার শিকার হোক। যদি তাই হয়, তবে ভাগ্যের পরিহাস ভেবে তা স্বীকার করে নেব। সেই সঙ্গে আশা করব, হেনস্থাকারীর যেন শেষমেশ সাজা হয়।

স্বাধীনতা ভোগ করার ক্ষেত্রেও যে নারী-পুরুষে প্রবল সামাজিক তফাৎ রয়েছে তা বোঝাতেও ব্যঙ্গকেই হাতিয়ার করেছেন ওই তরুণী। তার কটাক্ষ, ‘আমি অবশ্য যেখানে খুশি যেতে পারি, যা খুশি করতে পারি।’ তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমি ওকে বাইরে কাজে যেতে এবং ড্রাইভিং করতে দিই। কারণ, আমি প্রবলভাবে সমান অধিকারে বিশ্বাস করি।’

পোশাক নিয়েও যে প্রতিনিয়ত সমাজের চোখরাঙানি সহ্য করতে হয় নারীদের, তাও উল্লেখ করেছেন ওই পোস্টে। পুরুষতন্ত্রের বিরুদ্ধে এই ব্যঙ্গাত্মক পোস্টের পর নেটিজেনরা কার্যত দু’ভাগ হয়ে নিজেদের মতামত দিয়েছেন। কারও তীক্ষ্ণ ব্যঙ্গ, এতো সুবিধা দেবেন না। এরপর তো লিঙ্গসাম্যের সায় দিতে হবে।

অনেকে আবার কটাক্ষ করে লিখেছেন, আমার মনে হয়, আপনার ওকে কাজ বা ড্রাইভিং করতে দেয়া উচিত নয়। ব্যঙ্গের আড়ালে এই পোস্টের সমর্থনে মন্তব্যের পাশাপাশি অনেকের সমলোচনারও শিকার হয়েছেন ওই পাক তরুণী। সেই সমালোচকদের উদ্দেশে তার মন্তব্য, আপনাদের ব্যঙ্গের অর্থ বোঝানোর দায়িত্বটা আমার কাজ নয়। আপনাদের উদ্দেশেই এই পোস্ট করা হয়েছে। আনন্দবাজার।

Bootstrap Image Preview