লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক ফাতেমা রিপা ফেসবুক লাইভে এসে ২১ মিনিটের বেশি সময় ধরে কান্নাকাটি করেছেন।
গত শনিবার উপজেলা শিক্ষক সমিতির অনুষ্ঠান চলাকালীন ছাত্রলীগের এই নেত্রীকে স্টেজ থেকে জোর করে নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগে ফেসবুক লাইভে এসে কাঁদেন তিনি।
মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ফাতেমা রিপার ফেসবুক আইডিতে তার লাইভে রাখা বক্তব্য দেখা গেছে এবং তা সহস্রাধিক শেয়ারও হয়েছে।
তার কান্নার ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নেতাকর্মী ও জেলাজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। তবে রামগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে এটাকে নিছক ‘পাগলামি’ বলে অবহিত করা হয়েছে।
ভিডিওতে ছাত্রলীগের নেত্রী ফাতেমা রিপা লাইভে সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আমি ফাতেমা রিপা, একমাত্র নেত্রী যে কি না উপজেলার আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগসহ দলীয় সকল কার্যক্রমে অংশ নিই। অথচ দলীয় সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। কেন আমাকে এভাবে অপমানিত করা হবে। বার বার স্টেজ থেকে আমাকে নামিয়ে দেয়া হচ্ছে।’
‘বসার জায়গা না দিক আমি প্রয়োজনে দাঁড়িয়ে থাকবো। আমি ছাত্রলীগ করি আমার দাঁড়িয়ে থাকার অভ্যাস আছে। কিন্তু অনুষ্ঠান চলাকালে স্টেজ থেকে নামিয়ে দেয়ার মতো অপমান আর কোনো কিছুতে নাই।’ এসব কথা বলতে বলতে ছাত্রলীগ নেত্রী ফাতেমা রিপা কান্নায় ভেঙে পড়েন।
‘নির্বাচনের সময় সকালে বের হতাম-ফিরতাম সন্ধ্যায় প্রচার প্রচারনা শেষ করে। খাওয়া-দাওয়ার দিকেও তাকাতাম না। উপজেলাতে কোনো প্রোগ্রাম হলেও আমার সাথে এমন আচরণ করা হয়। জেলা ছাত্রলীগের প্রোগ্রামে আমার সাথে এমন ব্যবহার কখনো করেনি কেউ। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সম্পাদক তারা আমাকে বোনের মতো স্নেহ করেন। অথচ উপজেলা প্রোগ্রামগুলোতে আমাকে বার বার অপমান করা হয়।’
উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি কামরুল হাসান ফয়সাল মাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটা পাগলামি। কারণ এটা ছিল শিক্ষকদের প্রোগ্রাম। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে এই আসনের এমপি মহোদয় ড. আনোয়ার হোসেন খান শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ ও দলের সিনিয়র নেতাদের উপস্থিতি ছাড়া সবাইকে স্টেজ থেকে নেমে যেতে বলেন। আমরাও সবাই স্টেজ থেকে নেমে গেছি। কিন্তু ফাতেমা রিপা না নামায় ঘটনার সময় হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে।’
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জিয়াউল করীম নিশান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি ফাতেমা রিপাকে ডেকে জিজ্ঞাসা করেছি। বিষয়টি নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। কেন এমনটা ঘটলো আমরা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সম্পাদকের সঙ্গে বসে বিষয়টি সমাধান করে দেব।’
প্রসঙ্গত, গত শনিবার রামগঞ্জ পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে রামগঞ্জ উপজেলা শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠান হয়। এতে রামগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য ড. আনোয়ার হোসেন খাঁনকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে ছাত্রলীগের এ নেত্রীকে মঞ্চ থেকে নেমে যাওয়ার জন্য বলার কিছুক্ষণ পরেই লাইভে এসে কান্নাকাটি করেন।