আর মাত্র ৫ দিন পর বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। গ্রামগঞ্জে বসবে বৈশাখী মেলা। আর মেলা মানেই হাতে তৈরি মাটির খেলনা। আর পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার কার্তিকপুর পালপাড়ার কুমার পল্লীর মৃৎশিল্পীদের কর্মচাঞ্চল্য বেড়ে গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, কার্তিকপুর পালপাড়ার কুমার পল্লীতে মাটির তৈরির এসব পণ্য তৈরির পর রোদে শুকানো, আগুনে পোড়ানো এবং রং করার প্রস্তুতি চলছে। তবে মাটি, জ্বালানি, শ্রমিকসহ সব কিছুর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় তারা ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না মৃৎশিল্পী। তারপরেও পহেলা বৈশাখের চাহিদার কথা মাথায় রেখে তারা নতুন নতুন পণ্য তৈরি করে যাচ্ছে।
মানুষের সভ্যতার আদি ও ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প বিলুপ্ত প্রায় তার পরেও এ পেশাকে টিকিয়ে রাখার জন্য কম বেশি প্রায় ১২ মাসই কাজ করে যাচ্ছে এই শিল্পীরা।
পহেলা বৈশাখে বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে এখনও মেলা বসে। আর সেই মেলা উপলক্ষে পাইকাররা দূর-দূরান্ত থেকে এসে এ সকল সামগ্রী কিনে নিয়ে যাচ্ছে বৈশাখী মেলায় বিক্রি করার জন্য। অপরদিকে পাইকাররা বলছে মাটির সামগ্রীর চাহিদা না থাকলেও এবার দাম বেশি চাচ্ছে।
কার্তিক পুরের পাল পাড়ার ডিজাইনার রূপক পাল বলেন, আমার মৃৎ শিল্পটি ৩৩ বৎসর যাবত কাজ করে চালিয়ে রাখছি। তবে সফলতা ও পেয়েছি আমি বাংলাদেশ থেকে একটি কোম্পানি আড়ং এর মাধ্যমে আমার এ মাটির তৈরিপণ্য বিদেশে রপ্তানি করে প্রচুর লাভবান হয়েছি। সারা বৎসর আমার এই মৃৎ শিল্পের তৈরিপণ্য বিদেশে রপ্তানির জন্য অর্ডার পেয়ে থাকি। কিন্তু আমি চাই আমার এই শিল্পটি আরো বড় হোক যাতে করে আমি সরাসরি দেশের বাহিরের বিক্রি করতে পারি। আমাদের দেশের অনেক বেকার লোকের কর্মস্থান করতে পারি। আর এটাই আমার উদ্দেশ্য।
রামভদ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিপ্লব সিকদার বলেন, আমাদের কার্তিকপুর পালপাড়ার মৃৎ শিল্পের তৈরি জিনিসপত্র এখন ইউরোপ আমেরিকা কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়।
ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাব্বির আহমেদ‘র সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, ভেদরগঞ্জ উপজেলার মৃৎশিল্পকে একটা মাস্টার প্লানের মাধ্যমে এনে বহিঃবিশ্বে তাদেরকে আরও পরিচিতি করার জন্যে যা যা করনি তা আমরা করছি। ইতিমধ্যে আমরা জেলা ব্র্যান্ডিং এর আওতায় এ মৃৎশিল্পকে এনেছি এবং আমরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আর্কষণ করছি। যাতে করে আরও আধুনিকায়ন করা যায়।