Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০১ বুধবার, মে ২০২৪ | ১৭ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

দখল হয়ে যাচ্ছে বড়হরপাড়া খাল

জাহিদ রিপন, পটুয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৭ এপ্রিল ২০১৯, ০৪:৫৯ PM
আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৯, ০৪:৫৯ PM

bdmorning Image Preview


বাঁধ দিয়ে পুকুর ঘের তৈরি করে দখল করে নেয়া হচ্ছে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর থানার বড়হর পাড়া খাল। ভূমি অফিসের এক শ্রেণীর অসাধু কর্মচারীর সহায়তায় স্থানীয় প্রভাবশালী চক্র ৬/৭ বছর ধরে ফ্রি-স্টাইলে দখল করে নিচ্ছে খালটি। এতে বর্ষায় দেখা দিচ্ছে জলাবদ্ধতা। শুকনো মৌসুমে চাষের পানির সংকট। বাড়ছে লবনাক্ততা।

স্থানীয়রা জানায়, খালটি দুটি ইউনিয়নের ১১টি গ্রামের মানুষের জন্য আর্শীবাদ হলেও বর্তমানে দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাড়িয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, ধুলাসর ও লতাচাপলী ইউনিয়নের এগারটি গ্রামের প্রায় ২২ হাজার মানুষের কৃষি কাজসহ বর্ষা মৌসুমের পানি নিষ্কাসনের জন্য রড়হর পাড়া খালের উপড় নির্ভরশীল। বর্ষা মৌসুমে অতিরিক্ত পানি এ খাল দিয়ে নেমে যায়। মিষ্টি পানির সংরক্ষণের ফলে শুস্ক মৌসুমে চাষাবাদে সুফল বয়ে আনে। কিন্তু ৬/৭ বছর পূর্বে সাবেক ইউপি সদস্য শাহ আলম ওরফে সাহা মেম্বর তার বাড়ির সামনের অংশসহ খালটির উৎসমুখে বাঁধ দিয়ে তৈরি করেন কয়েকটি মাছের ঘের। তার দেখাদেখি তুলাতলী গ্রামের খলিল, চুননু, ছগির, আবদুল, আবু মিয়াসহ অনেকেই নামেন খাল দখলের মহোৎসবে। তৈরি করছেন মাছের ঘের, পুকুর।

সরজমিনে দেখা যায়, উপজেলার ধুলাসর ইউনিয়নের তুলাতলী সুইজ গেট থেকে শুরু হয়েছে বড়হরপাড়া খালটি। থৌপাড়া, নতুনপাড়া, বড়হরপাড়া, গঙ্গামতি, আসালতপাড়া, মম্বিপাড়া, মুসল্লীয়াবাদ, হোসেনপাড়া, মিস্ত্রীপাড়া ও তুলাতলী গ্রাম হয়ে প্রায় সাত কিলোমিটার দীর্ঘ খালটি শেষ হয়েছে লতাচাপলী ইউনিয়নের কুয়াকাটা ঘোজা এলাকায়। খালটির পানি প্রবাহের উৎসমুখ তুলাতলী সুইজ গেট এলাকার দু’পাড়ে বাঁধ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে অন্তত পঞ্চাশটি মাছের ঘের এবং পুকুর। ভূমি অফিস থেকে বন্দোবস্ত নিয়ে খালপাড় দখল করে তৈরি হয়েছে বসতভিটা। চলছে বাঁধ দিয়ে পুকুর তৈরির চেষ্টা। এভাবে দখলের ফলে খালের প্রশস্ততা অবশিষ্ট রয়েছে মাত্র এক চতুর্থাংশ। শেষ প্রান্ত কুয়াকাটা ঘোজা এলাকায় পেতে রাখা হয়েছে অসংখ্য ক্ষুদ্র ফাঁসের নিষিদ্ধ জাল। এতে পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্থ হয়ে খালটির গভীরতা কমে এসেছে এক তৃতীয়াংশে।

বড়হরপাড়া গ্রামের কৃষক ওমর ফারুক জানান, মাছ চাষের সুবিধার্থে ঘের ও পুকুর মালিকরা শুস্ক মৌসুমে খালে লবন পানি প্রবেশ করায়। ফলে মাটিতে বেড়ে যায় লবনাক্ততা। দেখা দেয় মিষ্টি পানির সংকট। এত প্রায় পাঁচ হাজার কৃষকের রবি মৌসুমে কৃষি কাজ চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

অভিযুক্ত সাবেক ইউপি সদস্য শাহ আলম ওরফে সাহা মেম্বর জানান, খালে বাধ দিয়ে মাছের ঘের তৈরি করা অবৈধ কাজ। তবে সরকার চাইলে তিনি খালের দখল ছেড়ে দিবেন।

লতাচাপলী ইউপি চেয়ারম্যান আনসার উদ্দিন মোল্লা বলেন, অবৈধ দখলদারের উচ্ছেদ করে দ্রুত খালটি খননের মাধ্যমে প্রশস্থ এবং গভীর করা প্রয়োজন। জলাবদ্ধতা দূরীকরণ ও রবিশষ্যসহ বোরো চাষের সুবিধার্থে সুইজ গেট বা জলকপাট পরিচালনার দায়িত্ব স্থানীয় প্রকৃত কৃষকদের হাতে দেয়া উচিৎ।

কলাপাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অনুপ দাস বলেন, খুব দ্রুত অবৈধ দখলদারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। অবৈধ দখলদারীত্ব উচ্ছেদ করে বড়হর পাড়া খালটি মুক্ত করা হবে। যাতে কৃষকসহ সাধারণ মানুষ এটি ব্যবহার করতে পারে।

Bootstrap Image Preview