Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০২ বৃহস্পতিবার, মে ২০২৪ | ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

‘নারীবাদ কি? বোঝা, না বোঝা’

নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৬ এপ্রিল ২০১৯, ০৯:২৫ PM
আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০১৯, ০৯:২৫ PM

bdmorning Image Preview


নারীবাদ শুধু নারীর বিষয় না। এটি নারী-পুরুষ সম্মিলিত প্রত্যেক মানুষের বিষয়৷ নারীবাদের নোংরা চর্চা না করে নারীবাদ কি সে বিষয়ে স্পষ্ট হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন মানবাধিকার কর্মী খুশী কবির।

আজ  শনিবার  ওয়াও- উইমেন অব দ্য ওয়ার্ল্ড ফেস্টিভ্যালে ‘নারীবাদ কি? বোঝা, না বোঝা’ শিরোনামে এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।

রাজধানীতে প্রথমবারের মতো আয়োজিত হয় এ  ওয়াও- উইমেন অব দ্য ওয়ার্ল্ড ফেস্টিভ্যাল। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে গতকাল শুক্রবার (৫ এপ্রিল) থেকে শুরু এই আয়োজনের সমাপ্তি পর্ব ছিল আজ শনিবার। যুক্তরাজ্যের ‘ওয়াও ফাউন্ডেশন’ এর অংশীদারিত্বে ব্রিটিশ কাউন্সিল এ অনুষ্ঠানের আযোজন করে।

নারী ও কিশোরীদের সফলতা ও অর্জনসমূহ উদযাপন এবং বিশ্বজুড়ে তারা যে ধরনের প্রতিকূলতার সম্মুখীন হয় তার ওপর আলোকপাত করেই অনুষ্ঠিত হয় ‘ওয়াও আন্তর্জাতিক ফেস্টিভ্যাল।’

সকাল ১০ টা থেকে অনুষ্ঠিত এই আয়োজন চলেছে ৭টা ৩০ মিনিট পযর্ন্ত৷

উদ্যোক্তাদের কাজের প্রদর্শনী ও তাদের পণ্য বিক্রির জন্য নির্বাচিত স্টল ছিল। পাশাপাশি দর্শকদের জন্য চিত্র প্রদর্শনী, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, পারফর্মিং আর্টস ও পূর্ণাঙ্গ থিয়েটার,  সেল্ফ ডিফেন্স ওয়ার্কশপ, পাপেট সো। 'নারীবাদ কি?  বোঝা, না বোঝা' সেমিনারের মধ্য দিয়ে সর্বশেষ মিউজিক্যাল পারফরমেন্সের মাধ্যমে শেষ হলো দু’দিন ব্যাপী এই অনুষ্ঠান।

নারীবাদ কি? বোঝা, না বোঝা সেমিনারে বক্তব্য রাখেন খুশী কবির।

তিনি বলেন, নারীবাদ শুধু নারীর বিষয় না। এটি নারী-পুরুষ সম্মিলিত প্রত্যেক মানুষের বিষয়৷ নারীবাদের নোংরা চর্চা না করে নারীবাদ কি সে বিষয়ে স্পষ্ট হওয়া প্রয়োজন৷

তিনি আরো বলেন, ‘নিজেরা করি’ প্রতিষ্ঠান থেকে আমরা বর্তমানে গ্রামের মেয়েদের প্রতি বেশি নজর দিচ্ছি। তাদের নিয়ে কাজ করছি।

জেন্ডার সমতার অগ্রগতিতে এ ফেস্টিভ্যালের গুরুত্ব নিয়ে ব্রিটিশ কাউন্সিলের ডেপুটি ডিরেক্টর অ্যান্ড্রিউ নিউটন বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ায় আর্টস প্রোগ্রাম পোর্টফোলিওর অধীনে নারী ও কিশোরীদের ক্ষমতায়নে আমাদের কাজের অগ্রগতির ক্ষেত্রে ‘ওয়াও ফেস্টিভ্যাল’ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা বিশ্বাস করি, অন্তর্ভুক্তিমূলক, উদার ও সম্ভাবনাময় সমাজ বিনির্মাণের পাশাপাশি, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ৫ নম্বর লক্ষ্য ‘জেন্ডার সমতা ও নারীর ক্ষমতায়ন’ অর্জনের ক্ষেত্রে জেন্ডার সমতা অর্জন অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। সাংস্কৃতিক বোঝাপড়া শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের চর্চা ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করা এবং স্থানীয় প্রেক্ষিতে তা বাস্তবায়নের প্রভাবশালী মাধ্যম ওয়াও ফেস্টিভ্যাল।

তিনি আরো বলেন, বিশ্বজুড়ে নারী ও কিশোরীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধিতে, তাদের জন্য সুযোগ তৈরিতে, দক্ষতা ও আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধিতে, তাদের সম্ভাবনা অর্জনে এবং জীবন পরিবর্তনকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রভাব তৈরিতে পরামর্শক হিসেবে কাজ করে ওয়াও ফেস্টিভ্যাল।

ওয়াও ঢাকার লক্ষ্যের ওপর গুরুত্ব দিয়ে ব্রিটিশ কাউন্সিলের হেড অব আর্টস নাহিন ইদ্রিস বলেন, ‘ওয়াও ঢাকার অন্তর্ভুক্তিমূলক জাতীয় প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে আমাদের প্রত্যাশা, এ শহর এবং এখানে যারা প্রতিদিন বাস করেন এবং কাজ করেন তাদের ওপর গুরুত্বারোপ করা। পাশাপাশি, ফেস্টিভ্যালে দর্শনার্থী বক্তা, প্যানেল আলোচক ও নারীদের অনুপ্রাণিত ও উৎসাহী করা হবে। আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে, নারী ও কিশোরীদের অর্জনগুলো উদযাপনের মাধ্যমে সকল মানুষের কাছে পৌঁছানো এবং নারীরা তাদের পূর্ণ সম্ভাবনা অর্জনের ক্ষেত্রে যে প্রতিকূলতার সম্মুখীন হয়েছেন এবং সফলভাবে সে সমস্যা সমাধান করেছেন, সহস্রাধিক নারীর সে গল্প তুলে ধরার মাধ্যমে অন্যদের অনুপ্রাণিত করা।’

ওয়াও ফেস্টিভ্যাল নারীদের জন্য বিশ্বের সর্ববৃহৎ ফেস্টিভ্যাল। ২০১০ সালে লন্ডনে এ ফেস্টিভ্যাল যাত্রা শুরু করে। এখন এটি একটি বৈশ্বিক ফেস্টিভ্যাল যা পাঁচটি মহাদেশে অনুষ্ঠিত হয়। ১৫ লাখের বেশি নারী ক্রমবর্ধমান ওয়াও মুভমেন্টের অংশ হচ্ছেন। যেখানে পুরুষ ও কিশোররাও জেন্ডার ভারসাম্যতাপূর্ণ বিশ্বের অংশ হিসেবে উপকৃত হবে। বিগত বছরগুলোতে অসংখ্য খ্যাতিমান ব্যক্তিদের নিয়ে এ উৎসব উদযাপিত হয়েছে। যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন: নোবেলবিজয়ী মালালা ইউসুফযাই, সালমা হায়েক পিনল্ট, এলিস ওয়াকার, ভিভিয়েন ওয়েস্টউড, ক্রিস্টিন লাগার্দে, সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন এমপি, অ্যানি লেনক্স, রুবি ওয়াক্স, প্যাট্রিক স্টুয়ার্ট, সিনাড ও’কনোর, জেসি নরম্যান, জুলি ওয়াল্টার্স, নাওমি উলফ, নওয়াল আল সাদাউই, শেরি ব্লেয়ার, কিরণ বেদী, ব্যারনেস হেলেনা কেনেডিসহ আরও অনেকে যারা প্রত্যকেই নিজ নিজ ক্ষেত্রে অসামান্য ভূমিকা রেখেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক ও বাল্টিমোর, ফিনল্যান্ড, করাচি এবং যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়া, হারগিসা ও সোমালিল্যান্ড সহ পাঁচটি মহাদেশের ২০টিরও বেশি শহরে উদযাপিত হচ্ছে ‘ওয়াও’ কার্যক্রম এবং দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে সারাবিশ্বে। সাউথব্যাংক সেন্টারের সহায়তায় ওয়াও ফেস্টিভ্যাল আয়োজন করা হয়েছে।

গত বছর ব্রিটিশ কাউন্সিল রংপুর, সিলেট, খুলনা, রাজশাহী ও চট্টগ্রামে ওয়াও চ্যাপ্টারস এর কয়েকটি অনুষ্ঠান আয়োজন করে। দেশের পাঁচটি বিভাগীয় শহরে ওয়াও চ্যাপ্টারস আয়োজনের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় এবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে ওয়াও ঢাকা ফেস্টিভ্যাল।

এর আগে অনুষ্ঠিত ওয়াও চ্যাপ্টারসে ২৫ হাজারের বেশি মানুষ অংশগ্রহণ করে। দক্ষিণ এশিয়ার কিশোরী ও নারীরা যেসব সমস্যা বা বাধার মুখোমুখি হন তা নিয়ে এবং পাশাপাশি তাদের নানা সফলতাকে উদযাপন করতে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘ওয়াও ঢাকা ২০১৯।

Bootstrap Image Preview