Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৫ রবিবার, মে ২০২৪ | ২২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

লিবিয়ায় নতুন করে সংঘাত শুরু

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬ এপ্রিল ২০১৯, ১২:২১ PM
আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০১৯, ১২:২১ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


লিবিয়ার বিদ্রোহী বাহিনী নতুন করে সংঘাত শুরু হয়েছে। দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠী লিবিয়ান ন্যাশনাল আর্মি (এলএনএ) নেতা খলিফা হাফতার তার বাহিনীকে রাজধানী অভিমুখে রওনা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। 

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, দক্ষিণের একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে তাদের লড়াই চলছে। নতুন করে শুরু হওয়া এই সংঘাতের নিন্দা জানিয়েছে ধনী দেশগুলোর গ্রুপ জি-৭ এবং জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ।

এর আগে ২০১১ সালে মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতনের পর ত্রিপোলিতে আন্তর্জাতিক স্বীকৃত সরকারের কর্মকাণ্ড চলছে। এই সরকারকে সমর্থন দিচ্ছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। বিদ্রোহী বাহিনী রওনা দেওয়ায় রাজধানী ত্রিপোলিতে সতর্ক অবস্থান নিয়েছে জাতিসংঘ বাহিনী।

বৃহস্পতিবার লিবিয়ার সংকট নিয়ে আলোচনা জন্য ত্রিপোলিতে ছিলেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সেদিনই নিজের বাহিনীকে রাজধানী অভিমুখে রওনার নির্দেশ দেন এলএনএ নেতা খলিফা হাফতার। শুক্রবার বেনগাজিতে গুতেরেসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে হাফতার তাকে জানিয়ে দেন ‘সন্ত্রাসীদের’ পরাজিত না করা পর্যন্ত তার বাহিনীর অভিযান থামবে না।

১৯৬৯ সালে কর্নেল মুয়াম্মার গাদ্দাফির ক্ষমতা দখলের সময় সহায়তা করেছিলেন সাবেক সেনা কর্মকর্তা খলিফা হাফতার। পরে তার সঙ্গে মতবিরোধের হলে যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসনে চলে যান তিনি। ২০১১ সালে গাদ্দাফি বিরোধী আন্দোলন জোরালো হলে ফিরে আসেন হাফতার। আর বনে যান এক বিদ্রোহী নেতা। গত ডিসেম্বরে লিবিয়ার আন্তর্জাতিক স্বীকৃত প্রধানমন্ত্রী ফয়েজ আল সেরাজ এর সঙ্গে এক সম্মেলনে দেখা করেন হাফতার। তবে আনুষ্ঠানিক আলোচনায় বসতে অস্বীকার করেন তিনি। গত সপ্তাহে সৌদি আরব সফর করে বাদশাহ সালমান ও যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে আলোচনা করেছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার রওনা দিয়েই ত্রিপোলির একশো কিলোমিটার দক্ষিণের শহর গারিয়ানের নিয়ন্ত্রণ নেয় হাফতারের এলএনএ-এর সদস্যরা। এছাড়া ২০১৪ সাল থেকে বন্ধ থাকা রাজধানীর একটি বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার খবরও জানা যাচ্ছে। তবে এই খবর নিয়ে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে।

ত্রিপোলির পূর্বাঞ্চলীয় শহর মিসতারার বাসিন্দারা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, রাজধানী রক্ষায় তাদের শহর থেকে যোদ্ধা পাঠানো হয়েছে। ত্রিপোলির সরকার সমর্থক সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো শুক্রবার বার্তা সংস্থাটিকে জানিয়েছেন তারা বহু এলএনএ সদস্যকে বন্দি করেছে।

এ বছরের শুরুতে লিবিয়ার দক্ষিণাঞ্চল এবং ওই এলাকাগুলোর তেলক্ষেত্রের নিয়ন্ত্রণ নেয় এলএনএ-যোদ্ধারা।

এক টুইট বার্তায় জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, গভীর দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে লিবিয়া ছেড়ে যাচ্ছেন তিনি। পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ থাকলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন রাজধানীতে নতুন যুদ্ধ এড়ানোর উপায় রয়েছে। পরে সামরিক অভিযান বন্ধের আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দেয় শিল্পোন্নত দেশগুলোর গ্রুপ জি-৭। 

বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমরা লিবিয়ায় যেকোনও ধরণের সামরিক ব্যবস্থার কঠোর বিরোধী’। দেশটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ নেতৃত্বাধীন পদক্ষেপের ওপর তাদের সমর্থনের কথা পুর্নব্যক্ত করা হয় ওই বিবৃতিতে।

শুক্রবার রাতে রুদ্ধ-দ্বার বৈঠক করেছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। বৈঠকের পর জাতিসংঘে নিযুক্ত জার্মান দূত ক্রিস্টোফ হেউজেন বলেন এলএনএ বাহিনীকে সামরিক গতিবিধি বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে সদস্য দেশগুলো। তিনি বলেন, এই সংঘাতের কোনও সামরিক সমাধান নেই।

এব্যাপারে রাশিয়ার এক মুখপাত্র বলেন, খলিফা হাফতারের অভিযানে সমর্থন নেই ক্রেমলিনের। ক্রেমলিন শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক উপায়ে সংঘাতের সমাধান চায় বলেও জানান তিনি।

Bootstrap Image Preview