টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার হেমনগর ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাসে আওয়ামী লীগ নেতার সেই গরুর খামারটি অভিযান চালিয়ে উচ্ছেদ করেছে প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার গোপালপুর উপজেলা প্রশাসন টানা চার ঘণ্টা অভিযানে আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুবুল হাসান টুটুলের এই খামারটি উচ্ছেদ করা হয়।
উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্ব দেন গোপালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিকাশ বিশ্বাস। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- হেমনগর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আব্দুল মালেক, কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নুরুল ইসলাম ও প্রেস ক্লাব সভাপতি অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন প্রমুখ।
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নুরুল ইসলাম বলেন, জমিদার হেমচন্দ্র চৌধুরীর পরীদালান নামে খ্যাত রাজবাড়ীর ৬.৩৩ একর জমিতে ১৯৭৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় হেমনগর ডিগ্রি কলেজ। হেমনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং ইউপি সদস্য মাহবুব হাসান টুটুল প্রভাবশালী মহলের যোগসাজশে কলেজ ক্যাম্পাসে সম্প্রতি গায়ের জোরে গরুর খামার তৈরি করেন। খামার দেখাশোনার জন্য তিনি সেখানে ঘরদরজা, খড়ের গাদা ও অন্য অস্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করেন। খামারে যাতায়াতের জন্য রাজবাড়ীর দৃষ্টিনন্দন প্রাচীরটি গায়ের জোরে ভেঙে ফেলেন টুটুল মেম্বার। খামার এলাকায় অবৈধভাবে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে মাদকসেবীদের জন্য করে দিয়েছিলেন নিরাপদ জোন। যেখানে অহরহ ঘটে ছিনতাইয়ের ঘটনা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ নেতা টুটুলের যোগসাজশে জমিদার বাড়ি ও কলেজ ক্যাম্পাসের বিরল প্রজাতির গাছপালা পাচার করা হয়। এতে রাজবাড়ীর সৌন্দর্যহানি ঘটেছে।
স্থানীয় প্রশাসনের উচ্ছেদ অভিযানের খবর পেয়ে ওই আওয়ামী লীগ নেতা টুটুল মেম্বার খামার থেকে ১৫-২০ গরু আগেই সরিয়ে ফেলেন। অভিযানে চারটি টিনের ঘর উচ্ছেদ করা হয়। কাঁটাতারের বেড়া খুলে ফেলা হয়। দুটি খদের গাঁদা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেন ইউএনও বিকাশ বিশ্বাস।
কলেজের গভর্নিং বড়ির সদস্য এবং হেমনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রওশন খান আইয়ুব বলেন, বেআইনি লিজের ছুতোয় টুটুল মেম্বার সেখানে গরুর খামার বানিয়ে শিক্ষার পরিবেশে বিঘ্ন ঘটিয়েছেন। প্রশাসনের সহযোগিতায় সেটি উচ্ছেদ করা হলো। এ উচ্ছেদে এলাকার জনসাধারণ আনন্দিত।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিকাশ বিশ্বাস বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুব হাসান টুটুলকে নোটিশ করে অফিসে ডেকে অবৈধ গরুর খামার এক মাসের মধ্যে সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু তিনি প্রশাসনের নির্দেশ মানেননি। এমতাবস্থায় বৃহস্পতিবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে অবৈধ গরুর খামারটি উচ্ছেদ করা হয়।