নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার বুক চিরে প্রবাহিত আত্রাই নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে নীতিমালা উপেক্ষা করে ড্রেজার মেশিন দিয়ে ড্রেজিং করে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। প্রশাসনের নাকের ডগায় বালু লুটপাটের মহোৎসবে এলাকাবাসী আতঙ্কিত হলেও রহস্যজনক কারণে প্রশাসন নিরব।
এ ব্যাপারে কতৃপক্ষ দর্শকের ভূমিকায় চুপচাপ থাকায় সরকারি নীতিমালা একটি কাগুজি আদেশে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আত্রাই নদীর মহিশবাথান ঘাটে সারি বেধে কয়েক হাত পর পর অসংখ্য ড্রেজার বসিয়ে নদী গর্ত করে চলছে বালু লুটপাটের হিড়িক। নদীর জলধারা থেকে ড্রেজিং করে যেভাবে বালু উত্তোলন চলছে তাতে ওই স্থানে নদীর গতিপথ পরিবর্তন যাওয়ার আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধসহ আশে পাশের কৃষি জমি হুমকির মুখে পড়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের রহস্যজনক নিরব ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে স্থানীয় সচেতন মহলে। তারা এ অনিয়ম রোধে প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ ও ভ্রাম্যমান আদালতের নিয়মিত অভিযান কামনা করেন।
অর্ধ শতাধিক এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বললে তারা জানায়, অবৈধ বালু উত্তোলনে এলাকা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। বেপরোয়া বালু বহনকারী ট্রাক চলাচলে ধুলো-বালি উড়ে রাস্তার দু-পার্শ্বের বাড়ি ঘর বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। জন স্বাস্থ্য হুমকির মুখে ও রাস্তাঘাট নষ্ট হয়ে গেলেও দেখার কেউ নেই।
এলাকাবাসী আরো জানায়, এখানে যেভাবে বালু লুটপাট চলছে দেশের অন্য কোথাও এদৃশ্য আছে কিনা বোধগম্য নয়। সব জায়গায় প্রশাসন ব্যবস্থা নিলেও আত্রাই নদীর ক্ষেত্রে প্রশাসন নিরব।
বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ এর ধারা ৫ এর ১ উপধারা অনুযায়ী পাম্প, ড্রেজিং বা অন্য কোনো মাধম্যে ভূ-গর্ভস্থ বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। ধারা ৪ এর (খ) অনুযায়ী সেতু, কালভার্ট, ড্যাম, ব্যারেজ, বাঁধ, সড়ক, মহাসড়ক, বন, রেল লাইন ও অনান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা হইলে অথবা আবাসিক এলাকা হইতে সর্বনির্ম্ম ১ কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বলা বাহুল্য এ আইন প্রয়োগ ও প্রতিপালনের কোনো উদ্যোগ নেই এখানে। ফলে বালু উত্তোলনকারীরা বেপরোয়া।
মহিশবাথান ঘাটে বালু উত্তোলনকারী মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, আমরা নীতিমালা অনুসরণ করে বালু উত্তোলন করছি। এ নীতিমালা যদি আপনার পছন্দ না হয়। তাহলে আপনার কাছে অন্য কোনো নীতিমালা থাকলে পাঠাবেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোবারক হোসেনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিষয়টি দেখার জন্য এসিল্যান্ডকে কিছুক্ষণের মধ্যেই সেখানে পাঠানো হবে।
এ ব্যাপারে নওগাঁ জেলা প্রশাসক মো. মিজানুর রহমান জানান, বিষয়টি দেখার জন্য আমি ইউএনও কে বলতেছি।