নরসিংদী সদরের ২টি হাসপাতালে মেডিকেলর যন্ত্রপাতি ক্রয়ে দুর্নীতির বিষয়ে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে।
অভিযোগের ভিত্তিতে এসব হাসপাতালের কর্মকর্তারা পরিচয় গোপন রাখার শর্তে বলেন, হাসপাতাল গুলোতে ঔষধ সরবরাহের ব্যপক অনিয়মের কথাও বলেন। এমনকি হাসপাতাল এর মেরামত ও রান্না-বান্না এবং পরিচ্ছনতা কর্মীদের থেকেও মোটা অঙ্কের ঘুষ বাণিজ্য করছে কর্তৃপক্ষরা বলে জানান তারা।
এছাড়াও তারা আরো বলেন, সংবাদকর্মীদের শুধু দুই টাকার দালালদেরই নজরে পড়ে কিন্তু মিথ্যা ভাউচারের মধ্যে কোটি টাকার বাণিজ্য করছে তারা তা নজরে পড়ছে না কারোর।
এতদিন এই দুই হাসপাতালের দালালদের বিরুদ্ধে দূর্নীতি প্রকাশ হলেও গোপন থেকে যায় মূল দূর্নীতি গুলো।
রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় বিনামূল্যে জরুরী চিকিৎসা সেবা জনগণের অন্যতম মৌলিক অধিকার। সরকারি খাতের চিকিৎসা সেবার মানোন্নয়ন এবং সহজলভ্য করতে বর্তমান সরকার নানাবিধ উদ্যোগ গ্রহণ করলেও স্বাস্থ্যখাতে অনিয়ম-দুর্নীতির পুরনো চিত্র মোটেও বদলায়নি।
কোন কোন ক্ষেত্রে আগের চেয়ে দূর্নীতি বেড়েছে এই দুই হাসপাতালে অভিযোগ চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের। শুধু তাই নয় এই হাসপাতাল গুলোতে দায়িত্বে থাকা আরএমও এর সাথে সুসম্পর্ক তৈরী করে বিভিন্ন দূর্নীতি মাকড়সার জালের মতো বেড়েই চলেছে এই দুই হাসপাতালে। ৫ টাকার জিনিস ৩০ টাকার দাম দেখিয়ে বিভিন্ন ভাউচারের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্বাস্থ্যখাতে বছরে এই জেলার দুটি হাসপাতালে কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দ দেয়া হলেও এসব বরাদ্দের কতটা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে, এর থেকে জনগণ কতটা সুবিধা পাচ্ছে, এ বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে তেমন তত্ত্ব তালাশ নেয়া হয়না বললেই চলে।
মাঝে মাঝে পত্রিকা বা গণমাধ্যমের অনুসন্ধানী রিপোর্টে এই দুই হাসপাতালের ভেতরকার অনিয়ম-দুর্নীতির কদাকার চিত্র বেরিয়ে আসলে নামমাত্র তদন্ত কমিটি হয়। বেশিরভাগ তদন্ত কমিটির রিপোর্ট বা সুপারিশ বাস্তবায়িত হয়না। অনিয়ম-দুর্নীতির সাথে জড়িতদের জবাবদিহিতা বা দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি না হওয়ায় অবস্থার কাঙ্খিত পরিবর্তনও হয়না।
এছাড়াও এই দুই হাসপাতালে ১ম দূর্নীতির বিষয়ে অনুসন্ধান করতে গেলেই জানা যায়, সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত বিধি-বিধান অমান্য করে দ্বিগুণ থেকে ৫০ গুণ বেশী দামে কেনা হয়েছে। কোন কোন ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
প্রতিদিন এই নরসিংদী জেলার ৭২টি ইউনিয়ন থেকে হাজার হাজার মানুষ চিকিৎসার জন্য এই দুই হাসপাতালে আসে। যেখানে এই জেলার হাজার হাজার দরিদ্র মানুষ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, সরকারি হাসপাতালগুলোতে কাঙ্খিত সেবা না পেয়ে প্রাইভেট ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসার শিকার হচ্ছেন, সেখানে সরকারি হাসপাতালের একশ্রেণির দুর্নীতিবাজ ডাক্তারের সহায়তায় এই জেলায় ব্যাঙের ছাতার মত মানহীন হাসপাতাল-ক্লিনিক গজিয়ে উঠছে।