Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৩ শুক্রবার, মে ২০২৪ | ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

এত সাহস ওসিরা কোথায় পান: হাইকোর্ট

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২ এপ্রিল ২০১৯, ০৬:৪২ PM
আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৯, ০৬:৪২ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


যেখানে সেখানে কোর্ট বসান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা (ওসি)। সব জায়গায় রাতে কোর্ট বসান, এত সাহস তারা কোথায় পান? নিজেরা বিচার বসান কেমন করে, কোন সাহসে?’

সাতক্ষীরার শ্যামনগর থানায় মামলা না নেয়ার ঘটনায় হাইকোর্টে করা এক রিট আবেদনের শুনানিতে মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এমন মন্তব্য করেন।

এ সময় আদালত বলেন, ওসি মামলা নিলেন না কেন? আমরা রুল দিয়ে দেখি কেন তিনি মামলা নিলেন না? ওসি সাহেবরা সব জায়গায় কোর্ট বসিয়ে দেন। ওসি কি সালিশ করতে বসেছেন? তারা সুবিধামতো হলে মামলা নেবেন। অথচ টাকা ছাড়া থানায় একটা জিডিও হয় না।

কিছু পুলিশের জন্য গোটা পুলিশের বদনাম হয় উল্লেখ করে আদালত বলেন, ‘অনেক পুলিশ খুব কষ্ট করে দিনযাপন করেন অথচ আমরা দেখি অনেক পুলিশের আবার সুন্দর সুন্দর বাড়ি। দেশটা কি চোরের দেশ হয়ে গেছে?’

আদালতে রিট করেন সাতক্ষীরার বাসিন্দা ফজলুর করিম। তার পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট শামসুল হক কাঞ্চন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুল আলম।

জায়গা-জমি নিয়ে বিরোধের জেরে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১১টার দিকে ইউসুফ আলীসহ অন্য লোকজন নিয়ে সাতক্ষীরার শ্যামনগর থানার সোরা গ্রামের মো. ফজলুর করিমের বাড়িতে গিয়ে তাকে মারধর করেন।

এ সময় তারা নগদ দুই লাখ টাকা, ৮০ হাজার টাকা মূল্যের দুটি স্বর্ণের চেইন ও ৫০ হাজার টাকার মালামাল লুট করেন। যাওয়ার সময় তারা বাড়ির সীমানাপ্রাচীরও ভেঙে ফেলেন। কিন্তু ইউসুফ ও ইউসুফের সঙ্গে আসা ব্যক্তিরা ফজলুর করিমের বাড়িতে হামলা চালানোর সময় শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) ফোন দিয়ে সাহায্য চাইলে ওসি বলেন, অন্য কাজে তিনি ব্যস্ত আছেন, পরে বিষয়টি দেখবেন।

এরপর ফজলুর করিম কালিগঞ্জ সার্কেলের এএসপিকে ফোনে বিষয়টি জানানোর পাশাপাশি ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চাইলে শ্যামনগর থানার এএসআই ঘটনাস্থলে যান। কিন্তু ততক্ষণে হামলাকারীরা পালিয়ে যান।

তখন ঘটনাস্থল থেকে এএসআই শ্যামনগর থানার ওসিকে ফোন করে বাদী ফজলুর করিমকে ফোন ধরিয়ে দেন ওসির সঙ্গে কথা বলার জন্য। ওসি তখন ফোনে ফজলুর করিমকে বলেন, উপর মহলে নালিশ করিস, তোর মামলা হবে না। কোর্টে মামলা কর।

তখন ফজলুর করিমের বাবা অনুনয়-বিনয় করলে ওসি বলেন, কাল সকালে আবার তদন্ত হবে। সে কথা মতো, শ্যামনগর থানার এসআই মরিুজ্জামান ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করে বলেন, মামলা হবে না। পারলে চেয়ারম্যানের সঙ্গে বসে মীমাংসা করতে বলেন তিনি।

শালিসের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে ফজলুর করিম সাতক্ষীরার পুলিশ সুপারের কাছে পুরো ঘটনা তুলে ধরে লিখিত অভিযোগ করেন। সে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি এসপি শ্যামনগর থানার ওসিকে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নিতে লিখিত নির্দেশ দেন। তা সত্ত্বেও ওসি কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় তা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্ট এসে গত ৩ মার্চ রিট আবেদন করেন ফজলুর করিম।

এরপর গত ১০ মার্চ প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিষয়টি খোঁজ নিতে মৌখিক নির্দেশ দেন আদালত। আজ এ বিষয়ে আবার শুনানি শুরু হলে ঘটনার আংশিক সত্যতা আছে বলে আদালতকে জানান সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল।

Bootstrap Image Preview