২০১৪ সালের ২৯ নভেম্বর হবিগঞ্জ নিউফিল্ডে বিশাল জনসভায় জেলাবাসীর পক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট তিনটি বড় দাবি উপস্থাপন করেছিলেন জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সংসদ সদস্য এডভোকেট মোঃ আবু জাহির। দাবিগুলো ছিল- হবিগঞ্জে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ এবং শায়েস্তাগঞ্জকে উপজেলা ঘোষণা।
বারবার নৌকার বিজয়ের কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হবিগঞ্জের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি থাকায় নিজের বক্তৃতার সময় সকল দাবি বাস্তবায়নের ঘোষণা দিলে নিউফিল্ডে অবস্থিত লাখো জনতার মাঝে সৃষ্টি হয় উল্লাস। এই ঘোষণার অল্পদিনের মাঝেই বাস্তবায়ন হয় মেডিকেল কলেজ। নামকরণ হয় শেখ হাসিনার নামে।
গত বছর নিকারের বৈঠকে ঘোষণা করা হয় শায়েস্তাগঞ্জকে নতুন এবং দেশের সর্বশেষ উপজেলা। ইতোমধ্যে উপজেলাটির প্রথম আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সবচেয়ে বড় দাবি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ও এবার বাস্তবায়নের পথে।
সোমবার (১ এপ্রিল) মন্ত্রীপরিষদের বৈঠকে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইন নীতিগতভাবে অনুমোদন পেয়েছে।
আগামী জাতীয় সংসদ অধিবেশনে সেখানে সর্বসম্মতিক্রমে পাশ হলে আইন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ভেন্ডিং হবে এই আইন। যথাসময়ে এই কার্যক্রম শেষ হলে চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম শুরু হবে বলে সম্ভাবনা রয়েছে।
হবিগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট মোঃ আবু জাহির বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রীপরিষদের সভায় আইনটি নিয়ে আলোচনা হলে তা নীতিগতভাবে অনুমোদন লাভ করে।
তিনি আরও জানান, আইনটি সংসদের আগামী অধিবেশনেই যাতে পাশ হয় তার জন্য চেষ্টা করব। এতে করে চলতি শিক্ষাবর্ষে যারা এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন তারা ভর্তি হতে পারবেন। প্রাথকিভাবে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এর কার্যক্রম শুরু হবে। পরে স্থায়ী ক্যাম্পাস গড়ে তোলা হবে।
সোমবার মন্ত্রী পরিষদে হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইন নীতিগতভাবে অনুুমোদনের খবর ছড়িয়ে পড়লে হবিগঞ্জে সবার মাঝে আনন্দ-উল্লাশ বিরাজ করে।
হবিগঞ্জ সদর উপজেলার চেয়ারম্যান এবং পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোতাচ্ছিরুল ইসলাম বলেন, এই কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতি পাওয়ায় হবিগঞ্জবাসী অনেক আনন্দিত। হবিগঞ্জকে অতীতে কোন সরকার এত বড় উন্নয়ন এনে দিতে পারেননি।
তিনি আরো বলেন, হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এডভোকেট মো. আবু জাহিরের প্রচেষ্টা আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতার জন্যই সম্ভব হয়েছে।
হবিগঞ্জ সরকারি বৃন্দাবন কলেজের সহকারী অধ্যাপক ড. সুভাষ চন্দ্র দেব বলেন, হবিগঞ্জ একসময় অবহেলীত ছিল। এখন এই জেলা অনেক সমৃদ্ধ হয়েছে। একটি এলাকাকে আরও এগিয়ে নিতে এ ধরণের উদ্যোগের বিকল্প নেই।
এখানে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হলে হবিগঞ্জ আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে। তবে এটি যাতে গতানুগতিক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় না হয় সেদিকে নজর দিতে হবে।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হবিগঞ্জের সন্তান ড. জহিরুল হক শাকিল বলেন, হবিগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া সময়ের দাবি ছিল। বিশেষ করে জনপ্রতিনিধি যখন নিজ এলাকায় শিক্ষার উন্নয়নে আন্তরিকভাবে কাজ করেন তখন এ ধরনের দাবি পূরণ সহজ হয়ে যায়।
তিনি বলেন, এমপি আবু জাহির যেভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন এবং নতুন নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলছেন তার মাধ্যমে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়ন হবে এই প্রত্যাশা আমাদের ছিল।
তিনি আরও বলেন, হবিগঞ্জে যে হারে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টি চালু হলে নতুন মাত্রা যোগ হবে। যখন শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাস হয়ে যাবে তখন হাওর এলাকার মূল কেন্দ্রবিন্দু হবে হবিগঞ্জ জেলা।