Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ সোমবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

দুই কন্যা রেখে পরকীয়া প্রেমিকের সাথে পালাল গৃহবধূ

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৯ মার্চ ২০১৯, ১০:৪৯ PM
আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৯, ১০:৪৯ PM

bdmorning Image Preview


সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার পারুলিয়া ইউনিয়নের সন্যাসখোলা এলাকায় পরকিয়ার জের ধরে অসহায় হয়ে পড়েছে দুই পরিবার। প্রেমের টানে দুই কন্যা সন্তানের জনক-জননী উধাও হয়েছেন। এ ঘটনায় এক পরিবারে মাতৃহারা হয়েছে নবম শ্রেণিতে পড়ুয়াসহ দুই কন্যা এবং আর এক পরিবারে বাবাহারা হয়েছে দুই বিবাহিত কন্যা।

জানা যায়, পারুলিয়ার সেকেন্দ্রা গ্রামের সানা পাড়ার আলমগীর সানার স্ত্রী রেহেনা আক্তার পলির সাথে একই এলাকার আব্দুর রউফের পুত্র আশরাফুল ইসলামের দীর্ঘদিনের পরকিয়া সম্পর্ক চলে আসছিল। সেই সূত্র ধরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে পরিকল্পনা অনুযায়ী বাড়ি থেকে বের হয়ে যায় রেহেনা। এ সময় গতিবিধি খারাপ লাগায় পরিবারের সদস্যরা তার পিছু নেয়।

পরিবারের সদস্য খোঁজ নিয়ে জানতে পারে- তারা রেহেনার সহযোগী একই এলাকার তরিকুল ইসলামের স্ত্রী পারভীন আক্তার মনির বোনের বাড়িতে পরিকল্পনা করছে। এ সময় রেহেনার শ্বশুর বাড়ির পরিবারের সদস্যরা হজির হন উত্তর সখিপুর গ্রামের বাসিন্দা সখিপুর হাসপাতালের আয়া শিরিনা ওরফে শিরিনের বাড়িতে। তখন সেই বাড়ির রুমের ভিতর অবস্থান করছিল আশরাফুল ইসলাম আশরাফ ও তার সহযোগী হাফিজুল এবং রেহেনা আক্তার ও পারভীন আক্তার।

রেহেনার শ্বশুর বাড়ির সদস্যদের উপস্থিতি টের পেয়ে কৌশলে পালিয়ে যায় আশরাফ ও হাফিজুল। এরপর ঐ দুই গৃহবধূকে নিয়ে আসা হয় তাদের শ্বশুর বাড়িতে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য, গণ্যমান্য ব্যক্তি ও দেবহাটা থানার পুলিশের উপস্থিতিতে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টায় প্রায় মধ্যরাত হয়ে যায়। এরপর ঐ দুই গৃহবধূর মধ্যে একজন স্বামীর বাড়িতে ফিরে গেলেও ফেরেননি রেহেনা আক্তার। আর তাকে নিয়ে বেকায়দায় পড়তে হয় পুলিশের।

অবশেষে জনপ্রতিনিধি ও রেহেনা আক্তারের সম্মতিক্রমে তাকে রেখে আসা হয় গরুরহাট এলাকায় তার মামার বাড়িতে। কিন্তু রাত পার হওয়ার সাথে সাথে প্রেমিক আশরাফের হাত ধরে নতুন জীবনে পাড়ি জমিয়েছেন সে।

এ দিকে, নগদ টাকা, স্বর্ণলঙ্কার ও মূল্যবান জিনিষপত্র নিয়ে স্বামীকে ফাঁসানোর চেষ্টার অভিযোগ এনে দেবহাটা থানায় শুক্রবার (২৯ মার্চ) অভিযোগ দায়ের করেছেন রেহেনার স্বামী আলমগীর হোসেন সানা।

বিষয়টি নিয়ে আলমগীর হোসেন সানা জানান, আশরাফ আমার স্ত্রীকে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে সংসার নষ্ট করেছে। আমার স্ত্রী রেহেনা নগদ টাকা, বিভিন্ন জিনিসপত্র নিয়ে চলে গেছে। আমি নিজের নিরাপত্তা রক্ষার্থে দেবহাটা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছি।

আলমগীর হোসেন সানার পরিবারের সদস্যরা জানান, প্রায় সময় রেহেনা সাজগোজ করে বের হয়ে চলে যেত। দীর্ঘ সময় পর বাড়িতে ফিরে আসত। কোন প্রশ্ন করার আগেই ঝগড়া-ঝাটি বাধিয়ে দিত। এমনকি আশরাফের সাথে রেহেনা দীর্ঘ ৫ বছরের বেশি সময় প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন বলে জানান। এর আগে ২ বার স্থানীয়দের হাতে আপত্তিকর অবস্থায় ধরা পড়ার ঘটনাও জানান তারা।

সানার পরিবারের সদস্যরা আরও জানাত, সবকিছুর পরেও ২ সন্তানের জননীকে ফিরে নিতে চেয়েছিল পরিবারে। কিন্তু কারো কথা না শুনে প্রেমের টানে নিজের ইচ্ছাকে প্রধান্য দিয়ে চলে গেছেন ঐ ২ কন্যা সন্তানের জননী রেহেনা।

এ দিকে, আশরাফুল ইসলাম আশরাফের সাথে যোগাযোগের জন্য চেষ্টা করলে তার ব্যাবহৃত মোবাইল বন্ধ দেখাতে থাকে। তবে, অভিযোগ রয়েছে আশরাফ এক সময়ের চোরাচালনা সিন্ডিকেটের সক্রিয় সদস্য থাকায় কোটিপতি বনে গেছে। আর তাতে বারবার এমন অপকর্ম করেও পার পেয়ে যান আশরাফ। এমনকি সে আগামীতে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও ইউপি সদস্য পদে অংশগ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। তার বিরুদ্ধে মাদক, চেরাচালানসহ একাধিক মামলাও রয়েছে।

এ বিষয়ে ইউপি সদস্য ও পারুলিয়া ইউনিয়েন যুবলীগের সভাপতি ফরহাদ হোসেন হিরা জানান, পরকিয়ার জের ধরে গৃহবধূ পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় আমাকে খবর দিলে বিষয়টি পারিবারিকভাবে সমাধানের চেষ্টা করি। কিন্তু আমাদের চেষ্টা ব্যর্থ হয়। পরে ঐ গৃহবধূকে তার মামার বাড়িতে রেখে আসি। সকালে খবর পেয়েছি সেখান থেকে সে পালিয়েছে।

এ ঘটনায় দেবহাটা থানার এএসআই মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, থানা পুলিশকে খবর দিলে আমরা উপস্থিত হওয়ার আগে দোষিরা পালিয়ে যায়। তবে এ ঘটনায় মহিলার স্বামী আলমগীর সানা দেবহাটা থানায় আভিযোগ দায়ের করেছে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Bootstrap Image Preview