Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ সোমবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

বাবার কাছে ক্ষমা চেয়ে যৌন হয়রানির শিকার স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৯ মার্চ ২০১৯, ১০:৪৬ PM
আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৯, ১০:৪৬ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় চাঁদনী আক্তার মুন্নী (১৫) নামে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। স্বজনদের দাবি, বখাটেদের হাত থেকে রক্ষা পেতে মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে।

এদিকে তার লাশের পাশে পাওয়া যায় একটি চিরকুট যেখানে লেখা আছে, ‘আব্বু আমাকে তুমি ক্ষমা করে দিও। আমি জানি না কী করে, কী হয়ে গেল। আমি তোমার মান-সম্মান বাঁচাতে পারলাম না। আর আমি কোনো কিছু ইচ্ছে করে করেনি। এ কাজ আমাকে জোর করে করানো হয়েছে। মুন্নী আরও লেখে, জয়নাল আমাকে জোর করে নিয়ে গেছে। আর রাজপাড়ার মিঠুন, আঙ্গুর তোমার মেয়ের ক্ষতি করল। আমি যদি মরে থাকি তাহলে তুমি মনে করবা রাজপাড়ার ছেলেদের কারণে আমি মারা গিয়েছি।’

গতকাল বৃহস্পতিবার নিজ বাসা থেকে চাঁদনীর লাশ উদ্ধার করা হয়। মিরপুর উপজেলার কেবিএইচ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিল চাঁদনী। সে উপজেলার কাতলমারী গ্রামের হেকমত আলী ভাষার মেয়ে। তার স্বজনরা অভিযোগ করেন, যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে সে। এ কারণেই মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে।

নির্যাতন ও আত্মহত্যার ঘটনায় চাঁদনীর পরিবার পাঁচ যুবকের বিরুদ্ধে মিরপুর থানায় মামলা করেছে। তবে পুলিশ এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।

উপজেলার সদরপুর ইউনিয়নের কাতলাগাড়ি গ্রামের হেকমত আলীর মেয়ে মুন্নীর চাচাতো ভাই সুজন বলেন, ওই বখাটেরা প্রায়ই মুন্নীকে উত্ত্যক্ত করত।

মুন্নির চাচা হাসেম আলী বলেন, শুক্রবার আমার বড়ভাইয়ের মেয়ের বিয়ে। এজন্য বৃহস্পতিবার দুপুরে মুন্নী ও আমার মেয়ে আমলা বাজারে ফুল কিনতে যায়। এ সময় জয়নালসহ ৫ বখাটে তার পেছনে লাগে। বখাটে জয়নাল প্রলোভন দেখিয়ে মুন্নীকে আমলা ভিত্তি বীজ আলু উৎপাদন খামারে নিয়ে যায়। এ সময় মুন্নী চলে আসতে চাইলে বাধা দেয় বখাটেরা। তখন আমলা পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এএসআই আশরাফ এসে মুন্নীকে উদ্ধার করেন।

তিনি বলেন, দুপুরে আমলা আলু ভিত্তি বীজ উৎপাদন খামারের সামনে থেকে মেয়েটিকে উদ্ধার করে স্থানীয় মহিলা ইউপি সদস্য রেজেলা খাতুনের কাছে হস্তান্তর করি।

ইউপি সদস্য রেজেলা খাতুন জানান, পুলিশ মেয়েটিকে উদ্ধার করে বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার জন্য আমার কাছে দিলে আমি তাকে নিয়ে যাচ্ছিলাম। পথিমধ্যে জয়নাল, মিঠুন, আঙ্গুর, রাজু, পারভেজসহ বেশ কয়েকজন মেয়েটিকে আমার কাছ থেকে কেড়ে নেয়। বখাটেরা জোর করে মুন্নীকে পার্শ্ববর্তী সাদিমনের বাড়িতে নিয়ে যায়।

সাদিমন জানান, দুপুরে একটি মেয়েকে জোর করে আমার বাড়িতে নিয়ে আসে পাঁচ ছেলে। তারা মেয়েটিকে গালাগাল করছিল। সন্ধ্যার দিকে মেয়ের বাড়ির লোকজন এসে মেয়েটিকে নিয়ে যায়।

মুন্নীর পরিবারের সদস্যরা জানান, বাড়ি ফিরে সন্ধ্যার পর চিরকুট লিখে নিজের ঘরে গলায় ফাঁস দিয়ে আÍহত্যা করে মুন্নী। কিছুক্ষণ পর টের পেয়ে বাড়ির লোকজন দ্রুত তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মুন্নীকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।

মিরপুর থানার ওসি (তদন্ত) আবদুল হালিম বলেন, মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তাপস কুমার সরকার বলেন, ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। রিপোর্ট এলে বোঝা যাবে যৌন হয়রানি করা হয়েছে কিনা।

Bootstrap Image Preview