Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০২ বৃহস্পতিবার, মে ২০২৪ | ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

‘স্বপ্না আমি বাইচ্যা আছি’ স্বামী-স্ত্রী জড়িয়ে ধরে কান্না

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৮ মার্চ ২০১৯, ০৫:১২ PM
আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৯, ০৫:১২ PM

bdmorning Image Preview


রাজধানীর বনানীর ২২তলা বিশিষ্ট এফ আর টাওয়ারের ভয়াবহ আগুনে এখন পর্যন্ত ৪ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অনেকে। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুরে টাওয়ারের ৯ তলা থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া শকসার্কিট থেকে আগুন লেগেছে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।

বনানীর আগুন লাগা একুশ তলা ভবনের তের তলা থেকে বেরিয়ে আসার পর ফুটপাতে বসে মোবাইল ফোনে এসব কথা বলছিলেন আরিফ নামে এক ব্যক্তি। তিনি স্ত্রীকে ফোন করে বলেন, 'স্বপ্না, আমি বাইচ্যা আছি'।

তিনি বলেন, আগুন লাগার সময় আমাদের অফিসে ৭-৮ জন ছিলাম। আমরা পাঁচবার সিঁড়ি দিয়ে নামার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্ত ধোঁয়া আর আগুনের তাপের কারণে নামা যাচ্ছিল না।

আরিফ বলেন, বাঁচার আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। অফিসের গামছা আর তোয়ালে ভিজিয়ে মুখের ওপর ধরে রেখেছি সবাই। আর কিছুক্ষণ থাকলে হয়তো বাঁচতাম না।

আরিফ বলেন, গ্লাস ভেঙে হাতের ইশারা করলে ফায়ার সার্ভিসের ক্রেন জানালার কাছে যায়। তারপর ক্রেন দিয়ে প্রথমে আমি আর ইকবাল নেমে আসি। অন্যরা পরে নামতে পেরেছে কিনা তা বলতে পারছি না।

এ সময় সেখানে উপস্থিত হন আরিফের স্ত্রী স্বপ্না। তারা দু’জনে একে-অপরকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে থাকেন।

কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে মেডিকেল অফিসার ডা. ফরিদা ইয়াসমিন জানিয়েছিলেন, আমরা এখন পর্যন্ত আগুনের ঘটনায় দু’জনকে পেয়েছি। এদের মধ্যে একজনকে ব্যক্তিকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। যখন আনা হয় তখনই তার দেহে প্রাণ ছিল না। বয়স আনুমানিক ৩০ বছর হবে। আরেকজনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।

এ দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে বর্তমানে ফায়ার সার্ভিসের ১৭টি ইউনিটের সাথে কাজ করছে বিমান বাহিনীর দুটি হেলিকপ্টার। ফায়ার সার্ভিসের কন্ট্রোল রুমের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এনায়েত হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী রায়ান খান বলেন, আমরা তিন-চারজন নিচে দাঁড়িয়ে নাস্তা করছিলাম। ভবনটির ৯ কিংবা ১০ তলায় দাউ দাউ করে প্রচুর ধোঁয়া বের হতে দেখি আমরা। অনেককে চিৎকার করে নিচে নামতে দেখি। তখনই আমি ৯৯৯ এ ফোন দেই। পাশাপাশি আরও ২-৩ জন ফায়ার সার্ভিসে ফোন দিয়েছে। কয়েক মিনিটের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের একাধিক ইউনিট সেখানে উপস্থিত হয়। এর মধ্যে ল্যাডার ইউনিট (বহুতল ভবন থেকে উদ্ধারকারী সিঁড়ি) ও মোটরসাইকেল ইউনিট ছিল।

ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিস ছাড়াও ভবনের নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মীরা অবস্থান করছেন। ভবনের অধিকাংশ লোকই নিচে নেমে অবস্থান নিয়েছে।

ভেতরে অনেকে আটকা পড়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ ছাড়া বহুতল ভবনটির পাইপ বেয়ে অনেককে নিচে নামার চেষ্টা করতেও দেখা গেছে।

Bootstrap Image Preview