Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ৩০ মঙ্গলবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৭ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

গোপালগঞ্জে নির্বাচনী সহিংসতা বন্ধে প্রধানমন্ত্রীকে সাংবাদিক জয়ের খোলা চিঠি

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৭ মার্চ ২০১৯, ০৯:০৫ PM
আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৯, ০৯:০৫ PM

bdmorning Image Preview


গোপালগঞ্জে নির্বাচনী সহিংসতা বন্ধে সহায়তা করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে খোলা চিঠি দিয়েচে এম আরমান খান জয় নামের একজন সাংবাদিক।

তিনি আজ তার ফেসবুক পেজে চিঠিটি পোস্ট করেন।

তিনি তার চিঠিতে লেখেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বড় কষ্ট ও বেদনা নিয়ে আপনার উদ্দেশে এই নিরুপায় কলম তুলে নিয়েছি। শুরুতেই ২৬ শে মার্চের লাখো শহীদদের স্মরণ করছি...
রক্তে ভেজা শক্ত মাঠি,
ভিজে গেছে ঘাস।
বুকের মাঝে ঘুমিয়ে আছে
"৩০ লক্ষ" লাশ।
পরম শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায়।
আমার সোনার বাংলা,
আমি তোমায় ভালোবাসি।

না বললে নয় বাংলাদেশ এখন সারা বিশ্বের বিস্ময়। আর এই বিস্ময় বাংলাদেশের ম্যাজিকের রূপকার আপনি বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আপনি উপজেলা নির্বাচনে ১০০% নৌকাপ্রেমী গোপালগঞ্জবাসীর আবেদনে দলীয় নির্বাচন না দিয়ে গোপালগঞ্জবাসীর আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটিয়ে অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন।

এই নির্বাচন নিয়ে আমার ছোট আরেকটি আবেদন ও আপনি কবুল করবেন বলে আশা রাখি।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, দেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে তৃতীয় বিশ্বের একজন অসহায় সাংবাদিকের ফরিয়াদ পৌঁছানোর উপায় হয়তো একমাত্র গণমাধ্যমই। আমার এই ফরিয়াদ আপনার কাছে আদৌ পৌঁছাবে কিনা, এই লেখাটি আপনি পড়বেন কিনা, আপনাকে কেউ বলবে কিনা, আপনার টেবিলের দৈনন্দিন পেপার ক্লিপিংয়ে এর স্থান হবে কিনা আমি জানি না। তবু কবি কামাল চৌধুরীর ‘রক্তাক্ত পঙক্তিমালা’ কবিতা ‘তুমি পড়বে না জানি তবু এই চিঠি পাঠিয়ে দিলাম’ স্মরণ করে এই লেখাটি লিখছি।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমি আপনার মধুমতির পাড়ে গড়ে ওঠা ছোট্ট শহর গোপালগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার কাঠি ইউনিয়নে সন্তান। পেশায় একজন কলমসৈনিক।

লেখার শুরুতেই মুক্তিযুদ্ধে অর্জিত আমাদের জন্মভূমির ইতিহাসখ্যাত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার জন্মস্থান গোপালগঞ্জের দীর্ঘায়ু কামনা করছি। বলতে চাই গোপালগঞ্জ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মস্থান। আপনি হয়তো অবগত আছেন গোপালগঞ্জ জেলার উপজেলাগুলোতে নির্বাচন পরবর্তী পরিস্থিতি কি? সংক্ষেপে বলবো, একটু লক্ষ করলে দেখবেন গোপালগঞ্জ সদর, টুঙ্গিপাড়া, কাশিয়ানী, মুকসুদপুর, কোটালীপাড়া সব জায়গাতেই নির্বাচনী ফলাফল নিয়ে প্রশ্ন থাকছে সাধারণ ভোটারদের মনে। পরাজিত প্রার্থীরা অভিযোগ আনছে নির্বাচনে কারচুপি করা হয়েছে, আবার জয়ী প্রার্থী বলছে জনগণ তাদের প্রকৃত নেতাকে চিনছে তাই তারা নির্বাচিত হয়েছে। কেউ বলছে নির্বাচনী ফলাফল সাধারণের ভোটের উপর নির্ভর করে হয়নি হয়েছে ক্ষমতা আর প্রার্থীর উপর নির্ভর করে। এমন সব ধারণাতেই চলছে সহিংসতা।

সবাই চাচ্ছে সহিংসতা বন্ধ হোক। এভাবে সহিংসতা হলে পুরো নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়েই প্রশ্ন উঠবে। অনেকের কাছে সহিংসতা কেন- তার কারণ খুঁজে পাওয়াই মুশকিল হয়ে যাচ্ছে। এর পেছনে কোনো স্যাবোটাজ আছে কি-না, তাও বড় প্রশ্ন হিসেবে সামনে এসেছে।

এভাবে সংঘাত, সহিংসতা চলতে থাকলে নির্বাচিত প্রার্থী জনগণের প্রকৃত ভোটে বিজয়ী হলেও নির্বাচনের সেই ফল নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। আমার প্রশ্ন হচ্ছে- এই প্রশ্ন তোলার মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হচ্ছে কেন?

প্রচারের শুরু থেকেই যেভাবে সহিংসতা হচ্ছে, তাতে আরও একটা প্রশ্ন আসছে। পরিস্থিতির ওপর কি জেলার উদ্ধতন কতৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণ নেই, কিংবা কতৃপক্ষ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছে? এ প্রশ্নের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণ হারালে চলবে না। নিয়ন্ত্রণ নির্বাচন কমিশনকেই নিতে হবে। কমিশনকে অবশ্যই এ সহিংসতা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

সহিংসতার পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য থাকলে তাও খুঁজে বের করতে হবে। আজ থেকেই সহিংসতা বন্ধ হোক, ভোটের মাঠে শান্তিপূর্ণ, উৎসবমুখর পরিবেশ বজায় থাকুক- এটাই প্রত্যাশা করি।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি আমাদের অভিবাবক, আপনি আমাদের সকলের ভাল চান, দেশের মানুষের ভাল চান তাই বড্ড আশা করি এই বেদনাহত সাংবাদিক এবং ছোট ভাইটির আবেদনে সাড়া দিয়ে আপনি উত্তাপ্ত গোপালগঞ্জকে শান্ত করছে সাধারনের গ্রহনযোগ্য নির্বাচনী ফলাফল অথবা সহিংসতা বন্ধ করে করে আরেকটি অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করবেন। পরিশেষে আপনার সুস্বাস্থ্য এবং দীর্ঘায়ু ও মঙ্গল কামনা করে আপনার সুচিন্তিত উত্তরের অপেক্ষায়।
বিনীত
এম আরমান খান জয়
সভাপতি, গোপালগঞ্জ অনলাইন প্রেসক্লাব, গোপালগঞ্জ

Bootstrap Image Preview