প্রতিদিনই পৃথিবীতে নতুন প্রাণের আগমন ঘটছে, সাথে সাথে পৃথিবী ছেড়ে মহাকালের উদ্দেশ্যে রওনা হচ্ছে কত মানুষ তারও হিসাব নেই। জন্ম নিয়ে মানুষের যতটা না কৌতূহল রয়েছে, মৃত্যু নিয়ে রয়েছে তার চেয়ে বেশি, সাথে আছে একটু ভয়ও। অধিকাংশই মৃত্যুকে ভয় পায় এবং সহজ উপায়ে মৃত্যু কামনা করে থাকে। তথাপি প্রতিদিন দুর্ঘটনাতেই বেশি মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। মৃত্যু তাই খুব অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু স্বাভাবিক এই প্রক্রিয়া মাঝে মাঝে অস্বাভাবিক এবং অদ্ভুত হয়ে ওঠে এর ধরনের জন্য। এমন কয়েকটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর কথা জেনে নেয়া যাক চলুন।
স্টিভ ইরউইন
২০০৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের গ্রেট ব্যারিয়ার রিফে ‘ওসান’স ডেডলিয়েস্ট’ নামের একটি ডকুমেন্টরি তৈরি করছিলেন জিওগ্রাফিক চ্যানেলের ক্রোকোডাইল হান্টার স্টিভ ইরউইন। এ সময় সমুদ্রের নিচে এক নিরীহ স্টিনগ্রে বার্বের লেজের কাঁটার আঘাতে মারা যান। তার হৃদযন্ত্র ফুটো করে দিয়েছিল কাঁটা।
ভয়ঙ্কর কুমিরদের সঙ্গে নিজের শিশুসন্তান নিয়ে খেলা করে শেষ পর্যন্ত নিরীহ এক জলচর প্রাণীর আঘাতে মারা গেলেন স্টিভ।
লেস হার্ভি
১৯৭২ সালে ব্যান্ড দল স্টোন অব ক্রোসের স্কটিশ গিটারিস্ট লেস হার্ভি সোয়ানসির টপ র্যাঙ্ক বিঙ্গো ক্লাবের মঞ্চে ইলেক্ট্রিক গিটার বাজাচ্ছিলেন। সেসময় আর্থিং না করা একটি মাইক্রোফোন ভেজা হাতে ধরার কারণে তিনি বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যান।
জে. জি. প্যারি থমাস
রেসিং ড্রাইভার প্যারি থমাস রেকর্ড গড়তে গিয়ে ১৯২৭ সালে মৃত্যুবরণ করেন। মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগেই ম্যালকম মার্শাল তার গড়া আগের ল্যান্ড স্পিড বিশ্ব রেকর্ডটি পেন্ডাইন স্যান্ডস সৈকতে ভেঙে দেন। প্যারি থমাস তার রেকর্ড পুনরুদ্ধার করার সংকল্প করেন।
জানা যায়, তিনি যে গাড়িটি ব্যবহার করছিলেন সেটির ড্রাইভ হুইলের সঙ্গে ইঞ্জিনের সংযোগের চেনটিতে কোনো কভার দেওয়া ছিল না। তাছাড়া উঁচু ইঞ্জিন কভারের কারণে তাকে মাথা ডান দিকে কাত করে গাড়ি চালাতে হচ্ছিল। শেষ রানের সময় ডান দিকের ১৭১ মাইল বেগে বিশ্বরেকর্ড গড়ে ড্রাইভ চেনটি ছিঁড়ে যায়। সেই সঙ্গেই মৃত্যু হয় প্যারি থমাসের।
জেরোমি আরভিং রোডেল
১৯৭১ সালের এক টিভি শোতে অর্গানিক ফুড মুভমেন্টের একজন প্রধান উদ্যোক্তা জেরোমি আরভিং রোডেলের ইন্টারভিউ রেকর্ডিং চলছিল। এসময় অর্গানিক ফুডসের প্রয়োজনীয়তার ওপর বলতে গিয়ে তিনি ঘোষণাই দিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি ১০০ বছর বাঁচবেন। তখন তার বয়স ছিল ৭২ বছর।
কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে ওই শো রেকর্ডিংয়ের সময়ই হার্ট অ্যাটাকে মারা যান অর্গানিক ফার্মিং অ্যান্ড গার্ডেনিং’ ম্যাগাজিনের এই জনক।