১০ দিনেও খুঁজে পাওয়া যায়নি নাটোরের বাহিমালী গ্রামের এক খ্রিস্টান গৃহবধূ ও তার আড়াই বছরের কন্যা সন্তানকে।
গত ৯ মার্চ সকাল পৌনে ১০টার দিকে শিশুটিসহ সে আকস্মিকভাবে নিখোঁজ হন। নিখোঁজ গৃহবধূর নাম রঞ্জিতা দাস (২৭) ও শিশুটির নাম শ্রাবন্তি পিউরি। এ ব্যাপারে রঞ্জিতার স্বামী অমল পিউরী ৪ জনকে অভিযুক্ত করে বড়াইগ্রাম থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিলিপ কুমার দাস অভিযোগটি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বনপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলামকে দায়িত্ব প্রদান করেছেন।
অভিযোগে প্রকাশ, নাটোরের লালপুরের পলাশের ভাটা রামকৃষ্ণপুর গ্রামের তাজেম আলীর ছেলে আতাউর রহমান (৩৭) বাহিমালী গ্রামে এসে নিজেকে হাসান নামে পরিচয় দেয় এবং পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থা কারিতাসের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে গরীবদের বিনামূল্যে ঘর ও গরু দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়।
তিনি এজন্য বিভিন্ন বাড়ি থেকে ঘর প্রতি ৫'শত ও গরু প্রতি ১ হাজার টাকা করে আদায় করে। এ সময় তার সাথে পরিচয় হয় রঞ্জিতা দাসের। পরবর্তীতে মোবাইলে নিয়মিত তাদের কথা হলে এতে আপত্তি জানায় রঞ্জিতার স্বামী অমল।
এ ঘটনা প্রতারক আতাউর জানান, সে রঞ্জিতাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু রঞ্জিতা এতে রাজী হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, প্রতারণার জাল ফেলে, ফুঁসলিয়ে বা প্রলোভন দেখিয়ে ওই প্রতারক আতাউর রঞ্জিতাকে অপহরণ করে নিজের কাছে রেখেছে।
এ দিকে রঞ্জিতার ভাই পলাশ দাস ঘটনার পর প্রতারক আতাউরের গ্রামের বাড়িতে গেলে সেখানে তাকে পাওয়া যায়নি।
তার স্ত্রী মুর্শিদা বেগম জানান, তাদের ঘরে দুই ছেলে সন্তান রয়েছে। সে বা কোন আত্মীয়-স্বজনই তার কোন খোঁজ দিতে পারেনি।
রঞ্জিতার ভাই পলাশ আরও জানায়, গত রবিবার দিবাগত রাত ১টা ১২ মিনিটে আতাউর তাকে ০১৩০৪৬৭৭০৮৪ নাম্বার থেকে ফোন করে 'রঞ্জিতার বড় মেয়ে কেমন আছে, কার কাছে আছে জানতে চায়' এবং এরপরই সে মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য জাহিদ আলী জানায়, রঞ্জিতা নিখোঁজ হওয়ার পর তার আরেকটি মেয়ে অর্পিতা পিউরি (৫) সারাক্ষণ 'মায়ের কাছে নিয়ে চলো' বলে কান্নাকাটি করছে। স্বামী অমলও স্ত্রী’র শোকে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এমতাবস্থায় দ্রুত পুলিশের সহায়তায় রঞ্জিতাকে উদ্ধারের দাবি জানান তিনি।
বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিলিপ কুমার দাস জানান, এ ঘটনায় থানায় মামলা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে। মোবাইল ফোন ট্র্যাকের মাধ্যমে প্রতারক আতাউরকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।