Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০২ বৃহস্পতিবার, মে ২০২৪ | ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

রাস্তাঘাট আর ইমারত তৈরিতে অস্তিত্ব সংকটে বরাক নদী

আজিজুল ইসলাম সজীব, হবিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
প্রকাশিত: ১৬ মার্চ ২০১৯, ১০:১৫ PM
আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৯, ১০:১৫ PM

bdmorning Image Preview


প্রায় ৮০০ নদ-নদী বিপুল জলরাশি নিয়ে ২৪ হাজার ১৪০ কিলোমিটার জায়গা দখল করে দেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হতো। কালের বিবর্তন আর নদী শাসনের ফলে কমে গেছে নদ-নদীর পরিমাণ।

হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার উপর দিয়ে শাখা বরাক প্রবাহিত হয়ে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীতে গিয়ে মিলিত হয়েছে। এক সময় এই নদীর উপরই নির্ভরশীল ছিল নবীগঞ্জ উপজেলার অর্থনৈতিক অবস্থা। জেলেদের মাছ আহরণসহ ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য সারাদেশের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ছিল শাখা বরাক নদী।

কিন্তু এখন আর সেই অবস্থা নেই। দখল আর দূষণের কবলে পড়ে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে নদীটি। কিছু অংশে নদীর গতিপথ থাকলেও অধিকাংশ অংশে নদীকে খোঁজে পাওয়াই দায়। রাস্তাঘাট আর বড় বড় ইমারত তৈরি করা হয়েছে নদীর উপরে। আর যে অংশে নদীর কিছুটা অস্তিত্ব রয়েছে সেখানেও ফেলা হচ্ছে ময়লা আবর্জনা।

নদীটি রক্ষায় আন্দোলন করে যাচ্ছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), সুরমা রিভার ওয়াটারকিপার, খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপারসহ বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো। কিন্তু বার বার আন্দোলন করেও কোন ফল পাচ্ছেন না তারা। উল্টো বিভিন্ন প্রভাশালীদের তোপের মুখে পড়তে হয়েছে তাদেরকে।

এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, এক সময় শাখা বরাক নদী দিয়ে লঞ্চ, স্টিমার, জাহাজ চলাচল করত। নবীগঞ্জ থেকে সুরমা, কুশিয়ারা দিয়ে ভৈরব এসে বিভিন্ন মালামাল আমদানি-রপ্তানি করা হতে। সেই সাথে সাধারণ মানুষের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যমও ছিল এই নদীটি। কিন্তু বর্তমানে এই নদী দিয়ে লঞ্চ-স্টিমার-জাহাজতো দূরের কথা, একটি ছোট নৌকাও যেতে পারে না। কচুরীপানা আর ময়লা আবর্জনায় ভরপুর দিয়ে ঠিক-টাকভাবে বৃষ্টির পানিও নিষ্কাশন হতে পারে না।

এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলার বাউসা গ্রামের আব্দুর রশিদ জানান, দখলদারদের কারণে নদীটি আজ অস্তিত্ব সংকটে। অথচ একসময় এই নদী দিয়ে লঞ্চ, স্টিমারসহ বড় বড় জাহাজ চলাচল করত। নদীটি দখলমুক্ত ও খনন করা প্রয়োজন। এতে এলাকার পরিবেশ সুন্দর থাকাসহ কৃষকদের জমি পানি সংকট থেকে মুক্তি পাবে।

এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তৌহিদ বীন-হাসান জানান, গতমাসে এক সভায় শাখা বরাক নদীকে দখলমুক্ত করার কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছিল। কিন্তু উপজেলা নির্বাচনের কারণে তা পিছিয়ে দেয়া হয়েছে।

খননের বিষয়ে তিনি বলেন, প্রথমে দখল উচ্ছেদ করতে হবে। পরে পানি উন্নয়ন বোর্ডেও সাথে আলোচনা করে খননে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জ জেলা শাখা সহ সভাপতি তাহমিনা বেগম গিনি বলেন, বার বার বাপাসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে নদীটি রক্ষায় আন্দোলন করে আসছি। কিন্তু প্রশাসন কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না। যার ফলে দিন দিন শাখা বরাকসহ দেশের সবগুলো নদ-নদী হারিয়ে যাচ্ছে। 

 

Bootstrap Image Preview