নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে শুক্রবার জুম্মার নামাজের সময় দু'টি মসজিদে হামলার ঘটনায় ৪০ জন নিহত হওয়ার পর সেখানকার সব মসজিদ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষ পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সব মসজিদ বন্ধ থাকবে।
ভয়াবহ ওই হামলায় ২০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছে। ওই হামলাকে নজিরবিহীন ভয়াবহ হামলা বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্দা আরডান বলেছেন, ক্রাইস্টচার্চে যা ঘটেছে, সেটা সন্ত্রাসী হামলা। এখন পর্যন্ত আমরা যা জেনেছি, তাতে এটা পরিষ্কার যে, এ হামলা ছিল সুপরিকল্পিত।
তিনি বলেন, হামলাকারীর গাড়িতে দুটি বিস্ফোরক ডিভাইস যুক্ত করা ছিল। তাদের কাছ থেকে অস্ত্র নিয়ে নেয়া হয়েছে।
ক্রাইস্টচার্চের আল নুর মসজিদে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ৪০ মুসল্লিকে হত্যা করেছেন অস্ট্রেলিয়ার এক শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী সন্ত্রাসী। এতে আরও অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।-খবর এএফপির
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, একটি আধা স্বয়ংক্রীয় শর্টগান ও রাইফেল দিয়ে সাউথ আইল্যান্ডে আল নুর মসজিদে অন্তত ৫০টি গুলি ছোড়েন ২৮ বছর বয়সী এই যুবক।
টুইটারে হামলাকারী নিজের পরিচয় দিয়েছেন ব্রেনটন ট্যারেন্ট নামে। তিনি নিউ সাউথ ওয়েলসের গ্রাফটন থেকে এসেছেন।
এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ার সময় মসজিদের ভেতর থেকে সামাজিক মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করেন এই শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী।
শুক্রবার জমার নামাজ চলার সময় এই নৃশংস হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় জড়িত সন্দেহে এখন পর্যন্ত এক নারীসহ চার ব্যক্তিকে কারাগারে আটক রাখা হয়েছে। আটকের সময় তাদের একজন সুইসাইড ভেস্ট পরা অবস্থায় ছিলেন।
হত্যাকাণ্ড ঘটনার আগে টুইটারে ৮৭ পাতার ইশতেহার আপলোড করেছেন হামলাকারী। এরমাধ্যমে সন্ত্রাসী হামলার আভাস আগেই তিনি দিয়েছিলেন।
নিউজিল্যান্ডের হেরাল্ড নিউজেও এক হামলাকারীকে অস্ট্রেলীয় নাগরিক বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ইসলামপন্থি জঙ্গি এবং অভিবাসীদের ওপর ক্ষোভ থেকেই ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে হামলা চালানো হয়েছে।
নিজেকে ব্রেনটন ট্যারেন্ট বলে পরিচয় দেয়া ওই হামলাকারী হামলার পেছনে নিজের উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানিয়ে একটি ম্যানিফেস্টোতে এ তথ্য প্রকাশ করেছেন। সেখানে তিনি ওই হামলা সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য দিয়েছেন।
নিজেকে তিনি ডানপন্থী নীতির পক্ষে এবং অভিবাসী নীতি বিরোধী বলে উল্লেখ করেছেন। হামলা চালানোর সময় সামাজিক মাধ্যমে লাইভে ছিলেন ওই হামলাকারী। ১৭ মিনিট ধরে ওই হামলার লাইভ ভিডিও প্রচারিত হয়। ২৮ বছর বয়সী অস্ট্রেলিয়ান-বংশোদ্ভূত ওই হামলাকারী নিজেকে সাধারণ শ্বেতাঙ্গ নাগরিক বলে উল্লেখ করেছেন।
তিনি জানিয়েছেন, ইউরোপের মাটিতে সরাসরি অভিবাসীদের সংখ্যা কমাতেই তিনি এই হামলা চালিয়েছেন। এই ন্যাক্কারজনক হামলা চালিয়ে তিনি অভিবাসী ও ইসলামপন্থি জঙ্গিদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।