খাদ্য শষ্য হিসেবে পরিচিত উত্তরের জনপদ দিনাজপুর জেলা। আর জেলার দক্ষিণে বরেন্দ্র এলাকা হিসেবে পরিচিত ঘোড়াঘাট উপজেলা। এই উপজেলার বেশির ভাগ জমি উচুঁ হওয়ায় জমিতে পানি আটকে থাকতে না। আর যে কারণে উপজেলাতে ধান চাষ অনেকটাই কম হয়। তবে এই উপজেলায় সারাবছর ভুট্রাসহ বিভিন্ন জাতের শাকসবজি চাষ হয়ে থাকে।
কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, ৫'শ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের শাকসবজি চাষ হয়ে থাকে। এই উপজেলায় কিছু পতিত জমিতে কৃষি অফিসের সহযোগিতায় দুই-এক জায়গায় হাইব্রিড (ব্যাংকক-১) জাতে মিষ্টি কুমড়ার চাষ শুরু হয়েছিলো। স্বল্প খরচে ফলন বেশি ও লাভ বেশি হওয়ায় বর্তমানে এ জাতের কুমড়ার চাষ এলাকায় বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রথমদিকে এ জাতের কুমড়ার চাষ কম হলেও বর্তমানে কৃষি অফিসের সহযোগিতায় দিন দিন এই উপজেলায় বাড়ছে এর চাষ।
মিষ্টি কুমড়া চাষী শামিম বলেন, আমি আগে এই জমিটা ফেলে রাখতাম । উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় এবার ৩ বিঘা জমিতে হাইব্রিড (ব্যাংকক-১) জাতে মিষ্টি কুমড়ার চাষ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে, দামও ভালো পাচ্ছি। এখন পর্যন্ত আমি এই জমিতে থেকে ১০ হাজার টাকার মিষ্টি কুমড়া বিক্রি করেছি।
প্রতিটি মিষ্টি কুমড়া স্থানীয় বাজারে ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আশা রাখি এবার বিঘা প্রতি ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকার কুমড়া বিক্রি করতে পারবো।
মিষ্টি কুমড়া চাষী আকবর আলী বলেন, এ জাতের কুমড়ায় রোগবালাই তেমন নেই। খরচ কম লাগে আর যে কারণে অল্প খরচে লাভ বেশি পাওয়া যায়। এক একটি কুমড়ার ওজন ৪ থেকে ৫ কেজি পর্যন্ত হয়। আমাদের স্থানীয় বাজারে এর চাহিদা ব্যাপক রয়েছে।
প্রতিদিন আমার জমি থেকে পাইকার ও স্থানীয়রা এসে কুমড়া কিনে নিয়ে যায়। আমরা এ জাতের কুমড়া চাষ করে লাভবান হচ্ছি। বিঘা প্রতি ১০ হাজার টাকা খরচ হয়। আর ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকার কুমড়া বিক্রি করতে পারি। কৃষি বিভাগ থেকে প্রতিনিয়িত সহযোগিতা পাই।
ঘোড়াঘাট উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোঃ-কামাল হোসেন বলেন, এই উপজেলায় সারাবছর কম বেশি বিভিন্ন জাতের শাকসবজি চাষ হয়ে থাকে। আমরা কৃষকদেরকে সরকারিভাবে বিনামূল্যে সার, বীজ দিয়ে সহযোগিতায় করে যাচ্ছি যাতে এই এলাকায় পতিত জমিগুলোতে ফসল ফলিয়ে কৃষকরা উন্নতি করতে পারে।
তিনি আরো বলেন, হাইব্রিড (ব্যাংকক-১) জাতের মিষ্টি কুমড়া প্রথম অবস্থায় পরীক্ষামূলকভাবে দুই এক জায়গায় চাষ হলে বর্তমানে এর ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। বর্তমানে ৩০ হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে হাইব্রিড (ব্যাংকক-১) জাতের কুমড়ার।আমাদের কৃসি সম্প্রসারণের মাঠকর্মীরা সারাদিন কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেযাতে ভবিষ্যতে বড় পরিসরে এ ধরনের কুমড়ার চাষ হয়।