Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৬ সোমবার, মে ২০২৪ | ২২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

মেয়াদোত্তীর্ণ যুদ্ধবিমান ওড়াচ্ছে ভারতীয় বিমানবাহিনী, বলছেন পাইলটরাও

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯ মার্চ ২০১৯, ০৫:০৩ PM
আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৯, ০৫:০৩ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


সম্প্রতি বির্তকের জালে আটকে গেছে ভারতীয় মিগ। জানা গেছ, মিগ বিষয়ে নেতিবাচক মন্তব্য ছুঁড়ছেন ভারতীয় বিমান বাহিনীর অনেক পাইলটও।

গেল শুক্রবার ভারতীয় বিমান বাহিনীর একটি মিগ-২১ রাজস্থানে বিধ্বস্ত হয়েছে। এর আগে ২৭ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত আজাদ কাশ্মিরের আকাশে যুদ্ধে বিধ্বস্ত মিগ-২১সহ দুইটি বিমান। এসব ঘটনার পর মিগ-২১ কেন বারবার দুঘর্টনার কবলে পড়ছে সে প্রশ্ন তুলেছেন ভারতীয়রা। মিগ-২১ বিষয়ে এ প্রশ্ন এর আগেও উঠেছিল।

মিগ-২১কে ‘উড়ন্ত কফিন’ এবং ‘বিধবা তৈরির’ বিমান বলছেন ভারতীয় যুদ্ধবিমান চালকেরা।

এদিকে ২০১২ সালে ভারতের তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী দেশটির সংসদে এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, রাশিয়া থেকে কেনা ৮৭২টি মিগ বিমানের মধ্যে অর্ধেকের বেশি দুর্ঘটনার মধ্য দিয়ে বিধ্বস্ত হয়ে গেছে।এতে দুই শতাধিক প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে বলে তথ্য দিয়েছিলেন তিনি। সে হিসেবে এখনও মেয়াদোত্তীর্ণ মিগ-২১ বিমানের বহর ব্যবহার করছে ভারত!

এনডিটিভি ও ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবরে প্রকাশ, গেল শুক্রবার মিগ ২১ মডেলের একটি বিমান নিয়মিত উড্ডয়নের অংশ হিসেবে উড্ডয়ন করে। পরে তা বিধ্বস্ত হয়।

পরে পাখির কারণে বিমানটি স্বাভাবিকভাবে চলতে না পেরে বিধ্বস্ত হয়েছে জানায় সামরিক বাহিনীর এব মুখপাত্র। এর আগে ২৭ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত আজাদ কাশ্মীরের আকাশে একটি মিগ-২১সহ দুইটি বিমান বিধ্বস্ত হয়।

এ নিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে দুই মিগ-২১সহ তিনটি বিমান হারালো ভারত।

ভারতীয় মিগ কেন এতো বিধ্বস্ত হচ্ছে তার কারণ খুঁজেছেন বিশ্লেষকরা।

মিগ-২১ মোটেও ত্রুটিপূর্ণ বিমান নয় জানিয়ে বিশ্লেষকরা বলেছেন, ভারতীয় মিগ-২১গুলোর অধিকাংশই মেয়াদোর্ত্তীণ।

তারা আরও জানিয়েছেন, মিগ-২১ বিমান ঘণ্টায় প্রায় সাড়ে তিনশ মাইল গতিতে রানওয়ে স্পর্শ করে। বিমানের এতো প্রচণ্ড গতি দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হতে পারে।

ভারতের আবহাওয়ায় মিগের জন্য উপযুক্ত নয় বলে জানিয়েছেন অনেকে।

তার বলছেন, ভারতের আবহাওয়া উষ্ণ হওয়ায় মিগের ইঞ্জিন থেকে আকাশে ওঠার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি বা থ্রাস্ট ১২ শতাংশ কম পাওয়া যায়। পাশাপাশি মিগের ডানারও ওড়ার শক্তি ১২ শতাংশ কমে যায়।

ভারতীয় যুদ্ধবিমান পাইলটদের অনেকের মতে, মিগের জানালা এমন ভাবে তৈরি যে অবতরণের সময়ে রানওয়ে ভালভাবে দেখা সম্ভব হয় না।

মিগের বিরুদ্ধে রয়েছে আরও কিছু অভিযোগ। জরুরি পরিস্থিতিতে মিগ থেকে পাইলটের বের হয়ে আসার বিষয়টি কিছুটা জটিল ও সময়সাপেক্ষ বলছেন তারা।

তাদের অভিযোগ, জরুরি অবস্থায় মিগ থেকে পাইলটকে বের করে আনার আসন ব্যবস্থা আধুনিক নয়।

বিশেষ করে নিচু দিয়ে ওড়ার সময় জরুরি পরিস্থিতিতে পাইলটকে বিমান ছাড়দে তুলনামূলক বেশি সময় লাগে বলে অনেকেই সফল হয় না।

এ কারণে বেশ কয়েকজন মিগ-২১ পাইলট প্রাণ হারিয়েছেন।

ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোতে দেয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত এক দশকে ৮৫ জনের বেশি বৈমানিককে হারিয়েছে ভারতীয় বিমান বাহিনী।

বেশির ভাগ মিগ-২১ বিমানই কারিগরি ত্রুটির জন্য দুর্ঘটনা পড়েছে, মানবিক ভুলের জন্য নয়।

প্রসঙ্গত, ভারতীয় বিমান বাহিনীর ‘মেরুদণ্ড’ বলা হয় মিগ-২১ যুদ্ধবিমানকে। গত অর্ধ শতক ধরে মিগের ওপর ভর করেই দাপট দেখাচ্ছে ভারতীয় বিমান বাহিনী।

Bootstrap Image Preview