এক বছরের প্রেম। পরিবারের অগোচরে বিয়ে। দাম্পত্য জীবনেরও তিন বছর পার হয়েছে। পোশাককর্মী স্ত্রী রোজগার করেন। স্বামীর পড়ালেখা চলে সেই টাকায়।
সব ঠিকঠাকই চলছিল। এক ছাদের নিচে বলা চলে সুখী দম্পতি মনিরুল ইসলাম (২৬) ও প্রিয়া আক্তার (২১)। হঠাৎ করেই আরেক বিয়ের নেশা পেয়ে বসে মনিরুলের। এরপর থেকে তিনি প্রিয়াকে আর চিনতে পারছেন না।
এদিকে দ্বিতীয় বিয়ের খবরে সোজা স্বামীর বাড়ি টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার শিমলা গ্রামে চলে এসেছেন। সেখানেই গত ৪ মার্চ থেকে অনশন করছেন। অগত্যা তাকে রেখেই মনিরুল ও তার পরিবারের সদস্য বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছেন।
মনিরুল উপজেলার শিমলা গ্রামের আলাউদ্দিনের ছেলে। আর প্রিয়া একই উপজেলার পৌর এলাকার বানিয়পাড়া গ্রামের আব্দুল হামিদের মেয়ে।
মনিরুলের বাড়িতে বসে প্রিয়া আক্তার জানান, মনিরুলের সঙ্গে এক বছর প্রেমের পর তারা বিয়ে করেন। চট্টগ্রামে মনিরুল পড়াশুনা করত। আর প্রিয়া একটি পোশাক কারখানায় চাকরি। একটি ভাড়া বাসায় দু’জনের সংসার।
তিনি বলেন, ‘মনিরুল বেকার। আমার বেতনের টাকা থেকেই ওর পড়াশোনা চলতে থাকে। মাস্টার্স পরীক্ষা শেষে একদিন বলল, গ্রামে যাব। ১০ হাজার টাকা লাগবে। আমার কাছে থাকা ৬ হাজার টাকা নিয়ে সে বাড়ি চলে আসে।’
প্রিয়ার ভাষ্যে, কিছুদিন পর জানতে পারি পরিবার থেকে মনিরুলকে বিয়ে দেয়া হচ্ছে। পরে আমি তার জন্য যে মেয়ে পছন্দ করা হয়েছে, তার বাড়িতে গিয়ে সব খুলে বলি। কাবিননামাও দেখাই। মেয়েটি মনিরুলকে বিয়ে করবে না বলে আমাকে জানাই। কিন্তু, পরে আমি চট্টগ্রাম চলে আসার পর মনিরুলের সঙ্গেই মেয়েটির বিয়ে হয়।
এরপর আবার প্রিয়া ছুটে আসেন মনিরুলের বাড়িতে। সেখানে বিগত চার দিন তিনি অনশন করছেন। মনিরুলের পরিবারের সদস্য পালিয়ে গেছেন। প্রিয়া স্ত্রীর স্বীকৃতি না পাওয়া পর্যন্ত অনশন ভাঙবেন না বলে জানান।
মনিরুল ও তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
প্রিয়ার বাবা আব্দুল হামিদ বলেন, ‘আগে জানতাম না। কিছুদিন আগে মনিরুলকে বিয়ের বিষয়টি জানিয়েছে। মেয়ের সিদ্ধান্ত আমরা মেনে নিয়েছি। কিন্তু, এখন সেই মনিরুলই ওকে কাঁদাচ্ছে।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য শিহাব উদ্দিন বলেন, ‘আগে একবার সালিস বৈঠক হয়েছে। বিষয়টি সমাধানে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। এখন প্রিয়া নিজেই মনিরুলের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন বলে শুনেছি।’