Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ সোমবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

শিক্ষিকার জন্য কাঁদলেন পুরো স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭ মার্চ ২০১৯, ১০:৪৯ PM
আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৯, ১০:৪৯ PM

bdmorning Image Preview


সারাদেশে শিক্ষকদের নিয়ে যখন নানা সমালোচনা ঠিক তখনই এ হৃদয়স্পর্শী ঘটনাটি ঘটেছে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার ৬৩নং দক্ষিণ হিরণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রিয় ওই শিক্ষিকার নাম মৌমিতা। অন্যত্র বদলি হওয়ার খবর শুনে স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এসময় শিক্ষার্থীদের বুকে জড়িয়ে ধরেন প্রিয় শিক্ষিকা মৌমিতা। প্রিয় ম্যাডামকে চোখের পানিতে বিদায় দেয় কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। মমতাময়ী ম্যাডামও চোখের জল ফেলতে ফেলতে বিদায় নেন। আর শিক্ষার্থীরা ও শিক্ষিকা হাত নাড়িয়ে একে অপরকে বিদায় দেন।

ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের কান্নায় ভেঙ্গে পড়া দেখে সেখানে যারা উপস্থিত ছিলেন তারাও তাদের কান্না ধরে রাখতে পারেননি। আর এমন বিদায়ের একটি ভিডিও সোস্যাল মিডিয়া ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে পড়েছে।

‘গোপালগঞ্জের ফেরিওয়ালা’ নামে একটি ফেসবুক গ্রুপে মুন্সি তুহিন নামের এক ব্যাক্তি মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭ টার দিকে এ ঘটনার একটি ভিডিও ও ছবি পোস্ট করেছেন। এরপরই ভাইরাল হতে শুরু করে তার পোস্টটি। একের পর এক লাইক, কমেন্টস ও শেয়ার হতে থাকে ভিডিওতে। তার পোস্টটি ছিল এমন, গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলাধীন ৬৩ নং দক্ষিণ হিরণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মৌমিতা ম্যাডামের অন্যত্রে বদলি হওয়ার খবর শুনে স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। চোখের জলে বিদায় জানালেন প্রিয় ম্যাড্যামকে! শিক্ষকের প্রতি শিক্ষার্থীদের এমন ভালবাসা বাংলাদেশের প্রতিটি স্কুলে সৃষ্টি হোক এমনটা প্রত্যাশা করি। কমেন্টে অনেকেই সংশ্লিষ্ট শিক্ষা অফিসারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে লিখেছেন এই বিষয়টি তদন্ত করে ওই শিক্ষিকাকে বদলি না করার জন্য সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।

পোস্টটিতে সাদ আহমেদ নামে একজন মন্তব্য করেন, এই শিক্ষিকা তো মহান, তবে তার শিক্ষার্থীরা যে এক একজন ভাল মানুষ হবে তা বোঝা যাচ্ছে। ম্যাডামের শিক্ষা ওদের গড়ে তুলবে মহান। স্যালুট ম্যাডাম।

মুনজুর হোসেন নামে একজন লেখেন, সংশ্লিষ্ট শিক্ষা অফিসারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এই বিষয়টি তদন্ত করে শিক্ষিকাকে বদলি না করার জন্য আপনার সুদৃষ্টি কামনা করছি।

কমলেশ কমল লেখেন, এরকম শিক্ষিকা কজনে হতে পারেন। আমার জীবনে প্রথমবার দেখলাম। শিক্ষিকার প্রতি ছাত্র ছাত্রীদের এতো ভালোবাসা। আপা মনির জীবন সার্থক। তিনি এমন একজন শিক্ষিকা হতে পেরেছেন। আমি চাই বাংলার প্রত্যেকটা স্কুলে যেন এরকম শিক্ষিকার জন্ম হোক। ম্যাডাম গড ব্লেস ইউ।

জুয়েল রানা তার মন্তব্যে লেখেছেন, মমতাময়ী শিক্ষিকা। আপনার মতো শিক্ষিকা যদি ১ লাখ ৩৪ হাজার ১ শত ৪৭ টা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে থাকতো। তাহলে ছাত্র-ছাত্রীরা শ্রেণি কক্ষে তার মায়ের শাসন ও ভালবাসা খুঁজে পেত।

প্রসেনজিৎ বিশ্বাস মন্তব্য করেন, এই শিক্ষিকার শিক্ষকতা জীবন ধন্য। আসলে শিক্ষকতা যে একটা মহান পেশা এটা তিনি প্রমাণ করে গেলেন। নিঃসন্দেহে এটা ছোট ছোট বাচ্চাদের ভালোবাসা পাওয়া আসলে একটা বিরাট ব্যাপার। যা সবাই পায় না।

কোটালীপাড়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রুবাইয়া ইয়াসমীন জানান, এই আধুনিক যুগে অনেকে মনে করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সম্পর্ক আগেই ভাল ছিল। এখন আর সে অবস্থা খুঁজে পাওয়া যায়না।

এ ধারনা সঠিক নয় বলে তিনি উল্লেখ করে বলেন, এখন কিছুটা অবস্থা পাল্টালেও ফিফটি ফিফটি অবস্থা রয়েছে। এখনও শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা একে অপরের সাথে এমন সু-সম্পর্ক রয়েছে।

গোপালগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আনন্দ কিশোর সাহা বলেন, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে এমন ভালবাসার সম্পর্ক এখন আর দেখা যায় না। শিক্ষার্থীদের কতটুকু ভালবাসলে তাদের কাছ থেকে এমন ভালবাসা পাওয়া যায় এটি তার একটি উজ্জ্বল উদাহরণ। একটি সকল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অনুকরনীয় হবে।

Bootstrap Image Preview