Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ সোমবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

চা আর মিষ্টি খেয়ে টাকা দেন না যে ওসি

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭ মার্চ ২০১৯, ১০:২৭ PM
আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৯, ১০:২৭ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিন খানের বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ স্থানীয়দের। এমনকি তার কর্মকাণ্ডে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

ওসি শাহিনের কর্মকাণ্ডের হাত থেকে রেহাই পেতে স্থানীয় এমপি পংকজ নাথের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বাজারের ব্যবসায়ীরা।

জানা যায়, আটক করে থানায় নিয়ে উৎকোচ আদায়, ইগলু আইসক্রিমের ডিলারের ফ্রিজ এনে দীর্ঘদিন বাসায় রেখে দেয়া, আড়ৎ থেকে বিনা পয়সায় চালের বস্তা বাসায় নিয়ে যাওয়া, মুদি দোকান থেকে পেঁয়াজ-রসুন ও মিষ্টির দোকানে মিষ্টি খেয়ে টাকা না দেয়াসহ নানা কারণে ওসি শাহিন খানকে নিয়ে অতিষ্ঠ স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।

পাতারহাট বন্দরের একাধিক ব্যবসায়ী জানান, গত অক্টোবর মাসে মা ইলিশ রক্ষা অভিযানের সময় ওসি শাহিন খান পাতারহাট বাজারে ইগলু আইসক্রিমের ডিলার মো. বাবলুর দোকানের ফ্রিজ নিজের বাসায় নিয়ে যান। পরে অভিযানে জব্দ হওয়া মা ইলিশ ওসির বাসার ফ্রিজে মজুত করেন।

দীর্ঘদিন ফ্রিজ ফেরত না দেয়ায় একপর্যায়ে বিষয়টি স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান ডিলার বাবলু। পরে স্থানীয় সাংবাদিকদের চাপে প্রায় চার মাস পর ইগলু আইসক্রিমের ডিলার বাবলু ফ্রিজ ফেরত পান।

এক মাস আগে পাতারহাট বন্দরের আব্বাসের চালের আড়ৎ থেকে দুই বস্তা চাল নিয়ে যান ওসি শাহিন খান। এর ১ সপ্তাহ আগে একই বাজারের সুনীল পালের মুদি দোকান থেকে নিয়ে যান পেঁয়াজ-রসুন। একই দিন কাপুড়িয়াপট্টির নন্দী বাবুর দোকান থেকে মিষ্টি খেয়ে টাকা না দিয়ে চলে যান ওসি।

বাজারের ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, বুধবার বেলা ১১টার দিকে মেহেন্দিগঞ্জের পাতারহাট বন্দরের স্বর্ণকারপট্টির আজম হাওলাদারের চা দোকানে চা খেতে যান ওসি শাহিন খান। চায়ের টেবিল অপরিচ্ছন্ন দেখে পরিষ্কার করে দিতে বলেন ওসি। দোকানি আজম কাপড় দিয়ে টেবিল মুছে দেন।

কিন্তু এমন পরিষ্কার ওসির মনমতো হয়নি। দোকানি আজমকে টিস্যু দিয়ে টেবিল মুছে দিতে বলেন ওসি। আজমের দোকানে টিস্যু নেই, তাই টিস্যু কোথায় পাবেন প্রশ্ন রাখেন ওসিকে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওসি শাহিন খান চা দোকানি আজমকে মারধর করেন। আজমকে রক্ষা করতে গেলে তাই ভাই আজাদ হাওলাদারকেও মারধর করেন ওসি। পরে দুই ভাইকে থানায় নিয়ে আটকে রাখেন ওসি। পরে বিষয়টি এমপি পংকজ নাথকে জানানো হয়। প্রায় ১ ঘণ্টা থানায় থাকার পর এমপির নির্দেশে দুই ভাইকে ছেড়ে দেন ওসি।

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ প্রসঙ্গে মেহেন্দিগঞ্জ থানা পুলিশের ওসি মো. শাহিন খান বলেন, একটি মহল আমার কাছ থেকে অবৈধ সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করেছিল। সুবিধা না পেয়ে ভিত্তিহীন খবর ছড়াচ্ছে। এর মধ্যে একটি অভিযোগও সত্য নয়।

মেহেন্দিগঞ্জে ওসির নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, শাহিন খানের বিরুদ্ধে কোনো লিখিতি অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ওসি শাহিন খান আগে ভোলার মনপুরা থানায় ছিল। সেখান থেকে স্থানীয় এমপি পংকজ নাথ তাকে পছন্দ করে এখানে এনেছেন।

বরিশাল-৪ (হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য পংকজ নাথ বলেন, কয়েক জন ব্যবস্যায়ী ওসি শাহিন খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন। যদি ওসি কোনো বিতর্কিত কর্মকাণ্ড করেন তাহলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন। ওসির কোনো অপকর্মের দায়ভার আমি নেব না।

এর আগে সাইফুল ইসলাম বরগুনার পুলিশ সুপার থাকা অবস্থায় শাহিন খান বেতাগী থানার ওসি ছিলেন। ওই সময় নানা কারণে শাহিন খানকে বেতাগী থানা থেকে রেঞ্জ অফিসে প্রত্যাহার করেছিলেন।

Bootstrap Image Preview