ভরা বসন্তে শীত শুধু নিজে ফিরেছে তাই নয়, সঙ্গে করে এনেছে রোগবালাইও। এতে মানুষের বিপদ আরও বাড়ছে। ফলে শীতের পোশাক গায়ে দিয়ে আবার মানুষকে ছুটতে হচ্ছে হাসপাতাল-ক্লিনিকে।
কখনও গরম, কখনও ঠাণ্ডার এ টানাপড়েনে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে রোগজীবাণু। তার জেরে এখন ঘরে-ঘরে সর্দি, কাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্ট, অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শীত আবার ফিরে আসায় রাজশাহীতে ঠাণ্ডাজনিত অসুখ জ্বর, সর্দি ও কাশিতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে গেছে। নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস, টাইফয়েড ও ডায়রিয়ায়ও আক্রান্ত হচ্ছেন কেউ কেউ।
শিশু ও বয়স্করা শ্বাসকষ্টজনিত অসুখে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। ঠাণ্ডা-গরমের এই লুকোচুরিতে রোগজীবাণু দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে আবহাওয়াজনিত কারণে।
ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে বসন্ত শুরু হওয়ার পর রাজশাহীতে তাপমাত্রা উঠছিল দ্রুত। হঠাৎ করে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ভোরে রাজশাহীসহ উত্তরাঞ্চলে হয়ে যায় ভারী শিলাবৃষ্টি। গত কয়েক দিন ধরেও রাজশাহীতে বৃষ্টি হয়েছে কয়েকবার।
এর পর থেকে টানা গত কয়েক দিন রাজশাহীসহ উত্তরাঞ্চলজুড়ে ঠাণ্ডা বেড়েছে। ছেড়ে দিয়েও লোকজনকে আবার শীতের পোশাক গায়ে তুলতে হয়েছে।
এদিকে গত সোমবার বৃষ্টির পর রাজশাহীসহ উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে তাপমাত্রা নেমে যায় ৪ থেকে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। গত শনিবার রাজশাহীতে রাতের তাপমাত্রা নেমে যায় ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
মঙ্গলবারও রাজশাহীর আকাশ ঘনকুয়াশায় আচ্ছন্ন থাকা সূর্যের দেখা মেলে দুপুরের পর। বুধবার সকালেও পৌষ মাসের মতো ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে রাজশাহীসহ গোটা উত্তরাঞ্চল।
এদিনও সূর্যের দেখা মেলে দুপুরে। সকাল থেকেই গাড়ির হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে যানবাহন চলতে দেখা গেছে। ঘন কুয়াশা আর উত্তরে হিমেল হাওয়ায় আবার ভরা শীতের আঁচ যেন ফাল্গুনের শেষে।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক লতিফা হেলেন জানান, মঙ্গলবার ভোরে তারা রাজশাহীতে তাপমাত্রা রেকর্ড করেন ১৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন সোমবার ভোরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৫ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এর আগের দিন রবিবার ভোরের তাপমাত্রা ছিল ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বুধবার রাজশাহীতে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজশাহী মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাহিদা খাতুন জানান, হঠাৎ করেই আবারও আবহাওয়া পরিবর্তিত হয়ে শীতের আমেজ এসেছে প্রকৃতিতিতে।
ফলে কখনও গরম, কখনও ঠাণ্ডার এই টানাপড়েনে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে রোগজীবাণু। তার জেরে এখন ঘরে-ঘরে সর্দি, কাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্ট, অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। সর্দি-কাশির মতো রোগবালাই বেড়ে গেছে হঠাৎ করেই।
এখন নানা রকম ভাইরাসের কারণে রোগবালাই হওয়ায় আক্রান্ত হলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তবে প্রথমেই নিজের থেকে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া চলবে না।