Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ সোমবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

মহাদেবপুরে রাইগাঁ উচ্চ বিদ্যালয়টি প্রধান শিক্ষক শূন্য, সকল কার্যক্রম স্থবির

ইউসুফ আলী সুমন, মহাদেবপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৪ মার্চ ২০১৯, ০১:০০ PM
আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৯, ০১:০০ PM

bdmorning Image Preview


নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী রাইগাঁ উচ্চ বিদ্যালয় দীর্ঘদিন ধরে চলছে প্রধান শিক্ষকবিহীন। এতে করে ওই বিদ্যালয়ের পাঠদান চরমভাবে ব্যহত হচ্ছে। স্থবির হয়ে পড়েছে বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ কর্মকাণ্ড।

জানা যায়, ১৯৩০ সাল থেকে অঞ্চলের মানুষের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে আসছে ঐতিহ্যবাহী এই বিদ্যাপীঠ। প্রতিদিন এই বিদ্যালয়ে প্রায় ১২০০ শিক্ষার্থীরা পাঠদান গ্রহণ করে। নিভৃত পল্লী এলাকার অনেক মানুষ এই ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয় থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে আলোকিত করেছে দেশের বিভিন্ন অঙ্গনকে, কিন্তু বর্তমানে নানা সমস্যায় জর্জরিত বিদ্যালয়টি। ২০১৭ সালের নভেম্বর মাস থেকে অভিভাবকহীন হয় বিদ্যাপীঠটি। ওই বছরেই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আনোয়ারা বেগম।

তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করার পর ২০১৭ সালের ২ ডিসেম্বর মাসে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের জন্য পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। আবেদনের মেয়াদ ছিল বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ১৫ দিন। আর ওই বিজ্ঞপ্তি অনুসারে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের মেয়াদ ছিল ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত, কিন্তু আজ পর্যন্ত নানা জটিলতার কারণে বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়নি। যার কারণে বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক না থাকায় পাঠদান চরমভাবে ব্যহত হচ্ছে এবং বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীন কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়েছে।

বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাদিতা জামান ও ইশরাত জাহানসহ অনেকেই জানায়, দীর্ঘ এক বছর পার হলেও আমরা অভিভাবকহীন অবস্থায় রয়েছি। প্রধান শিক্ষক না থাকায় একজন অভিজ্ঞ শিক্ষকের পাঠদান থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। প্রধান শিক্ষক না থাকায় অন্যান্য শিক্ষকরা গুরুত্ব সহকারে পাঠদান করায় না। এতে করে শিক্ষার্থীরা চরম বিপাকে পড়েছে। বিদ্যালয়ে দ্রুত একজন অভিজ্ঞ প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে পাঠদানসহ অন্যান্য কর্মকাণ্ডকে ত্বরানিত করা হোক এটাই তাদের দাবি।

অভিভাবক রিপন হোসেনসহ অনেকেই বলেন, বিদ্যালয় একজন মহিলা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে চলতে পারে না। বর্তমানে বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকরা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককের সকল নির্দেশনাকে মেনে না চলার কারণে বিদ্যালয়ের পাঠদান চরমভাবে ব্যহতসহ অভ্যন্তরীণ কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়েছে। বিদ্যালয়টি তার ঐতিহ্য হারাতে বসেছে।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আনোয়ারা বেগম বলেন, ভারপ্রাপ্ত হিসেবে সব কাজ করা সম্ভব হয় না। অন্যান্য শিক্ষকরাও সব নির্দেশ পুরোপুরি মানতে চায় না। এতে করে বিদ্যালয়ের পাঠদান থেকে শুরু করে অনেক কাজই বর্তমানে স্থবির হয়ে পড়েছে। বিদ্যালয়ের হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনতে দ্রুত অভিজ্ঞ প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান জানান, স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করায় প্রধান শিক্ষকের নিয়োগ হয়নি। তাই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে চলছে বিদ্যালয়টি। ম্যানেজিং কমিটি প্রধান শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে চূড়ান্ত ভুমিকা রাখলে এ সমস্যা থেকে দ্রুত উত্তরণ পাওয়া সম্ভব।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য সামসুজ্জামান বলেন, আভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে ঐতিহ্যবাহী এই বিদ্যালয়টি প্রধান শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। তবে দ্রুত এ সমস্যার সমাধান করা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

Bootstrap Image Preview