গোসলের সময় এক যুবক গোপনে দেখে ফেলায় লোকলজ্জায় সুমি রাণী রায় (১৪) নামে এক স্কুল ছাত্রী আত্নহত্যা করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বাঙ্গলীপুর ইউনিয়নের পশ্চিম লক্ষণপুর ভুজারীপাড়ার।
এদিকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে একইএলাকার সূর্য্য চন্দ্র রায় ওরফে মটুরু নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছেন ওই স্কুলছাত্রীর মা ময়না রানী রায়। গত শনিবার রাতে সৈয়দপুর থানায় ওই মামলা দায়ের করা হয়।
মামলায় সূত্রে জানা যায়, সৈয়দপুর উপজেলার তিন নম্বর বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের পশ্চিম লক্ষণপুর ভুজারীপাড়ার দিনমজুর হরেন চন্দ্র রায় ও গৃহিনী ময়না রাণী রায় দম্পতির তৃতীয় সন্তান সুমি রাণী রায়। পাশের বাঙ্গালীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর মানবিক শাখার মেধাবী ছাত্রী। একই এলাকার সূর্য্য চন্দ্র রায় নামে এক যুবক দীর্ঘদিন ধরে সুমিকে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। ঘটনাটি স্কুল ছাত্রী সুমির বাবা-মা একাধিকবার সূর্য্যরে পরিবারকে অবহিত করার পরও কোন কাজ হয়নি।
ঘটনার দিন গত শনিবার (২ মার্চ) সুমি তাদের বাড়ির গোসলখানায় গোসল করছিল। এ সময় তার বাবা-মা বাড়িতে ছিলেন না। আর সুমির এক বড় বোন ববিতা রায় কাজে সৈয়দপুর শহরে এবং ছোট বোন ভরসা রায় বাড়ির বাইরে খেলছিলেন।
এ সুযোগে সূর্য্য সুমিদের বাড়িতে ঢুকে গোপনে সুমির গোসলের দৃশ্য দেখছিল। এর এক পর্যায়ে সে গোসলখানায় গিয়ে স্কুল ছাত্রী সুমিকে জাপটে ধরে। এ সময় তার চিৎকারে সম্পর্কের ভাই বকুল চন্দ্র রায় সুমিদের বাড়িতে আসা মাত্রই সূর্য্য রায় দ্রুত পালিয়ে যায়।পরবর্তীতে সবার অজান্তে নিজের ও পরিবারের আত্মসম্মান এবং লোকলজ্জায় বাড়ির একটি ঘরে তীরের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস লাগিয়ে সুমি আত্মহত্যা করে।
পরে বাড়ির লোকজন ঘটনাটি টের পেয়ে তাকে উদ্ধার করে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। খবর পেয়ে সৈয়দপুর থানা পুলিশ রাতেই হাসপাতালে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। রবিবার (৩রা মার্চ) ময়নাতদন্তের জন্য সুমির লাশ নীলফামারী আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (অপারেশন)নুরুজ্জামান বেগ বলেন, নিহত সুমির মা ময়না রাণী রায় বাদী হয়ে সূর্য্যকে অভিযুক্ত করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্তকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।