Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৩ শুক্রবার, মে ২০২৪ | ২০ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

কাদেরের অবস্থা ক্রিটিকেল

রায়হান ও লায়ন, বিএসএমএমইউ থেকে
প্রকাশিত: ০৩ মার্চ ২০১৯, ০৬:১৪ PM
আপডেট: ০৩ মার্চ ২০১৯, ০৬:৫৩ PM

bdmorning Image Preview


আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের চোখ খুলছেন, কথা বলছেন কিন্তু ক্রিটিকেল অবস্থায় রয়েছেন। আগামী ২৪ ও ৭২ ঘণ্টার আগে কিছুই বলা যাচ্ছে না বলে জানান হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী আহসান।

এছাড়াও সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালে উপাচার্য কনক কান্তি বড়ুয়া।

আজ রবিবার বিকালে ওবায়দুল কাদেরের শারীরিক অবস্থা নিয়ে শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) এক সাংবাদিক সম্মেলনে এসব কথা জানানো হয়।

তিনি বলেন, ৮টার দিকে তার ইসিজি করা হয়। তাতে দেখা যায় হার্ট ধীরে ধীরে অচল হয়ে যাচ্ছে। আগে থেকেই ডায়াবেটিস ছিল। সেটি কন্ট্রোলে নেই। আমরা সবাই সিদ্ধান্ত নিয়ে তার এলইডি ব্লক খুলে দিই। তারপর ২ ঘণ্টা ভালো ছিলেন। কিছুক্ষণ পর প্রেসার কমে যায়।

হেমোডাইনামিক স্টেবল আছেন। চোখ খুলছেন। হাত-পা নাড়াচ্ছেন। তিনি ক্রিটিকেল স্টেটেজিতে আছেন।

ডাক্তারদের আশা তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন। তবে তিনি এখনো শঙ্কামুক্ত নন। সিঙ্গাপুর থেকে ডাক্তারদের টিম আসলে অবস্থা দেখে তারা সিদ্ধান্ত নিবেন ওবায়দুল কাদেরকে সিঙ্গাপুরে নেয়া হবে কিনা। এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণরুপে তাদের উপর নির্ভর করছে।

সকালে তার এনজিওগ্রাম ও ইসিজি করা হয়েছে। আগামী ২৪ ও ৭২ ঘণ্টার আগে তার অবস্থা নিয়ে পুরোপুরি বলা যাচ্ছে না।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, এই মুহূর্তে দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার মতো অবস্থায় নেই উল্লেখ করে চিকিৎসকরা জানান, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ওবায়দুল কাদেরের শারীরিক পরিস্থিতি বারবার অবনতি হচ্ছে। এ কারণে এই মুহূর্তে দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার মতো অবস্থায় নেই।

বিএসএমএমইউ’র কার্ডিওলজি বিভাগের চেয়ারম্যান সৈয়দ আলী আহসান জানান, ওবায়দুল কাদেরের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল তবে শঙ্কামুক্ত নন। আগামী ৭২ ঘন্টা তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।

অধ্যাপক আলী আহসান বলেন, এনজিওগ্রাম করানো হলে তার তিনটি আর্টারিতে (অক্সিজেনবাহী রক্তনালী, ধমনী) ব্লক পাওয়া যায়। তার আগে থেকেই ডায়াবেটিস ছিল, সেটিও এ সময় একদমই অনিয়ন্ত্রিত ছিল। এ অবস্থায় আমাদের দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা সিদ্ধান্ত নেই, তার হৃদযন্ত্রের বাম পাশের প্রধান যে ধমনী, যেটাকে আমরা এলএডি (লেফট অ্যান্টেরিয়র ডিসেন্ডিং) আর্টারি বলি, সেটা খুলে দেওয়া হবে। প্রাথমিকভাবে পিসিআইয়ের (পারকিউটেনাস করোনারি ইন্টারভেনশন) মাধ্যমে তার ওই ধমনীতে স্টেনটিং (রিং পরানো) করা হয়।

আলী আহসান বলেন, এ সময় ওবায়দুল কাদের ঘণ্টা দুয়েক ভালো ছিলেন। তারপর ফের তার অবস্থার অবনতি ঘটে। ইলেকট্রোলাইন ইমব্যালেন্স (রক্তে ক্যালসিয়াম, ক্লোরাইড, সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম প্রভৃতি পদার্থের মাত্রায় অসামঞ্জস্যতা) দেখা দেয়।

ওবায়দুল কাদেরের সর্বশেষ অবস্থা প্রসঙ্গে অধ্যাপক আলী আহসান বলেন, এখন তিনি অনেকটাই স্ট্যাবল। চোখ খুলছেন, কথা বলার চেষ্টা করছেন। পা নাড়াচ্ছেন। তবে তার অবস্থা ক্রিটিকেল।

এর আগে রোববার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে হঠাৎ অসুস্থবোধ করলে ওবায়দুল কাদেরকে বিএসএমএমইউর ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) নেয়া হয়।

সেখান থেকে জরুরি ভিত্তিতে তাকে সিসিইউতে (করোনারি কেয়ার ইউনিট) নিয়ে ভর্তি করা হয়। পরে এনজিওগ্রাম শেষে ওবায়দুল কাদেরের হার্টে তিনটি ব্লক ধরা পড়ার কথা জানান চিকিৎসকরা।

‘জীবন শঙ্কায়’ থাকা ওবায়দুল কাদেরকে দেখতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ছুটে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এরপর ওবায়দুল কাদেরকে দেখতে হাসপাতালে আসেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এরপর হাসপাতালে ছুটে আসেন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতকর্মীরা।

তার সুস্থতা কামনায় দেশবাসীর দোয়া চেয়েছে আওয়ামী লীগ ও তার পরিবার।

আজ রবিবার এয়ার অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালের তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সন্ধ্যার দিকে ঢাকায় পৌঁছাবেন বলে জানা গেছে। চিকিৎসকদের মধ্যে একজন ভারতীয় ও বাকি দুজন সিঙ্গাপুরের। তবে তাদের নাম এখনো জানা যায়নি।

Bootstrap Image Preview