Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৭ মঙ্গলবার, মে ২০২৪ | ২৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

এশিয়ায় পরমাণু যুদ্ধের আশঙ্কা!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩ মার্চ ২০১৯, ০৪:১৫ PM
আপডেট: ০৩ মার্চ ২০১৯, ০৪:১৫ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে পাকিস্তানের প্রায় ৮০ কিলোমিটার ভেতরে হামলা চালায় ভারতীয় বিমানবাহিনী। কয়েক ঘণ্টা না যেতেই ভারতের ভেতরে পাল্টা হামলা চালায় পাকিস্তানি বিমানবাহিনী। দুই প্রতিবেশী দেশের সীমান্তে ছড়িয়ে পড়ে চরম উত্তেজনা

এ উত্তেজনা পরমাণু শক্তিধর দেশ দুটিকে ভয়াবহ সংঘাত ও একটি পূর্ণ যুদ্ধের এতটা কাছে নিয়ে যায়, যা দুই দশকে আর দেখা যায়নি। এশিয়ায় উঁকি দেয় পরমাণু যুদ্ধের আশঙ্কাও।

সীমান্তে চরম উত্তেজনার মধ্যেই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে দুই দেশের পরমাণু অস্ত্রের কথা পরিষ্কার করে উল্লেখ করেন। বলেন, আমি ভারতকে বলছি, আপনাদের যে অস্ত্র আছে, আমাদেরও সেটি আছে।

তা হলে কি আমরা ভুল হিসাব কষতে পারি? আটক ভারতীয় এক পাইলটকে শুক্রবার দেশে ফিরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্তে সেই চরম পরিস্থিতি কিছুটা হলেও শান্ত হয়েছে। নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর বুধবার সকাল থেকে চলা উভয়পক্ষের সেনাদের অবিরাম গোলাবর্ষণ থেমে গেছে।

কিন্তু পরিস্থিতি যে কোনো সময় খারাপ হতে পারে। কেননা দশকের পর দশক এভাবেই চলে আসছে। ফলে পরমাণু যুদ্ধের খক্ষ ঝুলেই থাকছে পাকিস্তান ও ভারতের ওপর। শনিবার সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এমন শঙ্কার কথা উঠে এসেছে। ১৯৪৭ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করার পর থেকে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে সাপে-নেউলে সম্পর্ক।

৭০ বছরে চারটি বড় যুদ্ধে জড়িয়েছে দুই পক্ষ। সর্বশেষ ১৯৯৯ সালের কারগিল যুদ্ধ। যাতে বিতর্কিত ভূখণ্ডের কাশ্মীর সীমান্তে কয়েক হাজার বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। সর্ব সংঘাতের পর থেকে উভয় দেশই সন্তর্পণে নিজেদের সামরিক সক্ষমতা বাড়িয়েছে।

সামরিক পাল্লা দিতে গিয়ে গত দুই দশকে জঙ্গিবিমান, সেনাসংখ্যা, ট্যাঙ্ক ও হেলিকপ্টারের সংখ্যার দিক দিয়ে পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে দিয়েছে ভারত। ভারতের সেনাসংখ্যা যেখানে ৩০ লাখ, সেখানে পাকিস্তানে মাত্র ১০ লাখ। ইসলামাবাদের চেয়ে নয়াদিল্লির সামরিক বাজেটও কয়েকগুণ বেশি। গত বছরও পাকিস্তানের সামরিক বাজেট যেখানে ছিল ১১ বিলিয়ন ডলার, ভারতের ৬৪ বিলিয়ন।

১৯৯৮ সাল থেকে পাক-ভারত পাল্লা দিয়ে পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইন্সটিটিউট জানিয়েছে, ২০১৭ সালের শুরুতে ভারতের ১৩০টি পারমাণবিক অস্ত্র ছিল।

আগের বছরে যেখানে ১১০টি ছিল, সেখানে এক বছরের মাথায় ২০টি বাড়িয়েছে। পক্ষান্তরে পাকিস্তানের ভাণ্ডারে রয়েছে ১৪০ থেকে ১৫০টি পরমাণু অস্ত্র। ভারতের কাছে পূর্ণাঙ্গ পারমাণবিক ত্রয়ী রয়েছে। অর্থাৎ স্থল, বিমান ও সমুদ্র থেকে তারা পারমাণবিক বোমা নিক্ষেপ করতে পারবে। দেশটির ভূমি থেকে নিক্ষেপযোগ্য দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র অগ্নি-৩ আওতা হচ্ছে দুই হাজার মাইল।

ভারতের মতো না হলেও পাকিস্তানের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা ১ হাজার ২০০ মাইল। রাশিয়ার সঙ্গে মিলে ভারত ক্রজ ক্ষেপণাস্ত্র ব্রাহমোস নির্মাণ করেছে, যা ভূমি, আকাশ ও সমুদ্র থেকে নিক্ষেপ করা সম্ভব। পক্ষান্তরে পাকিস্তান নিজেরাই তৈরি করছে জঙ্গিবিমান। চীনের নকশা করা অত্যাধুনিক জেএফ-১৭এস মডেলেরে বেশ কয়েক বিমান তাদের হাতে রয়েছে।

বুধবার পাকিস্তান বিমানবাহিনী ভারতের দুটি বিমান ভূপাতিত করে এ যুদ্ধবিমান দিয়েই। সমুদ্রপথে কৌশলগত দিক দিয়ে পাকিস্তানের চেয়ে ভারতই এগিয়ে। দেশটির নিজস্ব প্রযুক্তিতে নির্মিত ছয় হাজার টনের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের সাবমেরিন রয়েছে। তবে পাকিস্তানের কাছে পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম সাবমেরিন নেই।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সবসময় সংখ্যায় বেশি থাকলেও প্রকৃত চিত্র উঠে আসে না। যে জায়গায় ভারত পাকিস্তানের চেয়ে পিছিয়ে সেটা হচ্ছে পরমাণু অস্ত্র। অস্ট্রেলীয় বিমানবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা ও বর্তমানে গ্রিফিথ এশিয়া ইন্সটিটিউটের গবেষণা ফেলো পিটার লেটন বলেন, কোনো কারণে প্রতিকূল পরিস্থতিতে ইসলামাবাদ পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহার করতে পারে। পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে পাকিস্তানের কৌশলগত নীতি হচ্ছে- উপযুক্ত নিুস্তরের কমান্ডাররাও অস্ত্র ব্যবহার করতে পারেন, যদি তারা সঠিক মনে করেন।’

Bootstrap Image Preview