Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৭ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

পানিশূন্য হচ্ছে কুড়িগ্রামের নদ-নদী

মোঃ মনিরুজ্জামান, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০১ মার্চ ২০১৯, ০২:৫৪ PM
আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৯, ০২:৫৪ PM

bdmorning Image Preview


শুষ্ক মৌসুমে পানিশূন্য হয়ে পড়ছে কুড়িগ্রামের নদ-নদীগুলো। জলবায়ুর প্রভাব এবং নদ-নদীর তলদেশ ভরাট হওয়ার কারণে পানির ধারন ক্ষমতা কমে যাওয়ায় প্রভাব পড়তে শুরু করেছে কৃষিসহ জীববৈচিত্রে। জেলার নদ-নদীকে বাঁচিয়ে রাখতে দ্রুত কার্যকরি পদক্ষেপ না নিলে মরুভূমিতে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।

দেশের বৃহত্তম নদীমাতৃক জেলা খ্যাত কুড়িগ্রাম। এই জেলায় রয়েছে ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, ধরলা, দুধকমারসহ ছোট-বড় ১৬টি নদ-নদী। এই বিশাল জলরাশি এখন শুকনো মরুভূমিতে পরিণত হচ্ছে। গেল বছর বন্যা না হওয়ায় এবারের শুষ্ক মৌসুমে আগাম পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। ফলে কৃষিসহ জীববৈচিত্রে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।

পানি না থাকায় মৎসজীবীরা যেমন অন্য পেশায় ঝুঁকছেন তেমনি আবাদ করতে কৃষককে গুণতে হচ্ছে বাড়তি খরচ। নদীর তীরবর্তী মানুষ হাঁস-মুরগি পালন করে যে বাড়তি আয় করতেন সেটা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন।

এছাড়া ভারতের উজান থেকে নদ-নদী দিয়ে প্রায় ২ বিলিয়ন মেট্রিক টন পলি মাটি বাংলাদেশে প্রবেশ করে। তার মধ্যে ৮০ শতাংশ পলিমাটি জেলার বিভিন্ন নদী দিয়ে আসে। ফলে নদীগুলো দ্রুত ভরাট হয়ে যাচ্ছে। জালের মতো বিছিয়ে থাকা নদ-নদী একে একে বিলিনের পথে। পানির অভাবে স্থায়ী মরুকরণের পথে নিয়ে যাচ্ছে দেশের উত্তরের এই জেলাটি।

চিলমারী নৌ বন্দরের মাঝি মালেক, হাসমত আলীসহ অনেকেই জানান, ব্রহ্মপুত্র ভরাট হওয়ার কারণে নৌ চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। পানি কম থাকায় নৌকা ঘুরে যেতে তেল ও সময় দুটোই বেশি লাগে। এতে করে মাঝিরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম রিপন বলেন, মাটিতে রস না থাকায় সেচ দিয়ে আবাদ করতে গুণতে হচ্ছে বাড়তি খরচ। দিন দিন তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় চরের ফলনও কমছে। ফলে ধার দেনা করে আবাদ করলেও লোকসানের মুখে পড়েছে চরাঞ্চলের কৃষক।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ জানান, যেসব নদীর এখনও জীবন আছে সেগুলোর পানির দ্রুত ন্যায্য হিস্যা বাস্তবায়ন না করা গেলে পানির অভাবে এ জেলা মরুভূমিতে পরিণত হবে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান প্রধান জানান, বন্যা আর বৃষ্টিপাত না থাকায় কৃষককে ঝুঁকিতে পড়তে হচ্ছে। দেশের অন্যান্য জায়গার তুলনায় কুড়িগ্রামের আবাদী জমির কম পানি ধারন ক্ষমতাকেও খরার জন্য দায়ী করেন এই কর্মকর্তা।

জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন বলেন, দ্রুত পানি শুকিয়ে যাওয়ার কারণে জেলার কৃষি এবং পরিবেশের উপর বিরুপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।

Bootstrap Image Preview