কাশ্মীরকে ভারত থেকে পৃথক করার লক্ষ্য নিয়ে ২০১০ সালে কান্দাহার বিমান ছিনতাই ঘটনার হোতা মাওলানা মাসুদ আজহার গঠন করেন জঙ্গি গ্রুপ জইশ-ই মুহাম্মদ। এর পর থেকে নানা সময়ে কাশ্মীরে ছোট-বড় জঙ্গি হামলা চালিয়ে আসছে গ্রুপটি।
সর্বশেষ গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পুলওয়ামায় দেশটির সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের কনভয়ে ভয়াবহ হামলা চালিয়ে আবারও আলোচনায় এসেছে নিষিদ্ধ ঘোষিত দলটি। যার ফলে এখন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিরাজ করছে যুদ্ধাবস্থা।
অভিযোগ আছে, পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই সরাসরি জইশ-ই জঙ্গিদের মদদ দেয়। এমনকি তাদের কাছ থেকে প্রশিক্ষণও পায় জঙ্গিরা। তবে পাকিস্তান বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। কিন্তু জইশ-ই নেতা মাসুদ আজহারকেও পাকিস্তানে নানা সময় ঘুরতে দেখা গেছে প্রকাশ্যে। আবার প্রশ্ন আসে, মারাত্মক সন্ত্রাস চালাতে যে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন দিনের পর দিন তার সংস্থান কীভাবে করছে জঙ্গিরা। যার কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি পাকিস্তান।
ভারতীয় গোয়েন্দাদের দাবি, পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের জইশ কমান্ডার মুফতি আসগরই জম্মু-কাশ্মীরে সন্ত্রাস ছড়ানোর মূল হোতা। আর এসব কর্মকা-ের জন্য হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ আনে জঙ্গিরা। এর জন্য যে নাগরিকদের আত্মীয়স্বজন দেশের বাইরে থাকেন, বিশেষ করে পশ্চিম এশিয়ার কোনো দেশে, তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি করা হয়। সেই আত্মীয়ের ঠিকানা ও অ্যাকাউন্ট নম্বরও জেনে নেওয়া হয়। পরে হুন্ডির মাধ্যমে ওই ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে টাকা আসে। অল্প অল্প করে সেই অ্যাকাউন্ট থেকে জঙ্গিদের মধ্যে টাকা সরবরাহ করা হয়। না হলে নানা রকম হুমকিও দেওয়া হয়। এ ছাড়া জঙ্গিরা মধ্যপ্রাচ্যে তাদের মতাদর্শের লোকদের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখে।
ভারতীয় গোয়েন্দারা আরও বলছেন, মাসুদ আজহার জইশের মূল মাথা হলেও তার ভাই, শ্যালক মুফতি আসগরসহ আরও দুজনও রয়েছে সন্ত্রাসের পরিকল্পনার ক্ষেত্রে। পাকিস্তানের হরিপুর ও বাহাওয়ালপুরের ঘাঁটিতে বছরে দুবার সেমিনারও করে তারা। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও স্থানীয় ট্রাস্টের নামেও অর্থ তোলা হয়। এমনকি পারিবারিক ব্যবসার অর্থও বিনিয়োগ হয় সন্ত্রাসের কাজে।