Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২০ সোমবার, মে ২০২৪ | ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

যেভাবে ধরা পড়েন পাইলট অভিনন্দন

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১ মার্চ ২০১৯, ১১:২১ AM
আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৯, ১১:২১ AM

bdmorning Image Preview


মিগ-২১ যুদ্ধবিমান নিয়ে পাকিস্তানে ঢুকে হামলা চালাতে গিয়ে গত বুধবার ধরা পড়েছেন ভারতীয় বৈমানিক উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তামন। কাশ্মীর সীমান্তে উত্তেজনা নিরসনে ভারতকে বাগে আনতে তাকেই অনেকটা ট্রাম্প কার্ড বানিয়েছে পাকিস্তান। যদিও আজ শুক্রবার তাকে মুক্তি দিতে চলেছে দেশটি।

কিন্তু এর আগে অভিনন্দনকে আটক করতে পেরে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীকে উল্লাস করতে দেখা গেছে। কিন্তু সব ধরনের যুদ্ধবিমান চালনায় দক্ষ ওই ভারতীয় বৈমানিককে কীভাবে আটক করা হয়েছে তার বর্ণনা মিলেছে পাকিস্তানের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যম দ্য ডনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে। গুলি করে ভারতীয় বিমান ভূপাতিতের এক প্রত্যক্ষদর্শী ৫৮ বছর বয়সী মোহাম্মদ রাজ্জাক চৌধুরী। রাজনীতিক ও সমাজকর্মী রাজ্জাকের বাড়ি পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখার ৭ কিলোমিটার ভেতরে হোরান গ্রামে।

বুধবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে তিনি দুটি যুদ্ধবিমানের লড়াইয়ের শব্দ শোনেন এবং ধোঁয়া দেখতে পান। এ সময় দুটি বিমানেই আগুন লেগে গিয়েছিল। যার একটি সীমান্তের ওপারে চলে যেতে পারলেও আরেকটি দ্রুত নিচে নামতে থাকে। এক পর্যায়ে বিমানটি তার বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে বিধ্বস্ত হয়। এ সময় বিমানটি যেদিকে বিধ্বস্ত হয় তার উল্টো দিকে প্যারাসুটে করে সুস্থ অবস্থাতেই নেমে আসেন এক বৈমানিক। এ সময় তাকে ধরার জন্য স্থানীয় কিছু তরুণ ছুটে যায়। তাদের দেখে ওই বৈমানিক পিস্তল বের করেন ও বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত সেনাবাহিনীর কেউ না আসছে ততক্ষণ যেন তারা বিদ্ধস্ত বিমানটির কাছে না যায়। কিন্তু তাকে ঘিরে ওই তরুণরা উল্লাস করছিল। সে সময় ওই বৈমানিক তাদের জানান, তিনি কোমরে প্রচণ্ড আঘাত পেয়েছেন, পানি খাওয়ানো যাবে কিনা। কিন্তু তাতে তরুণদের কেউ সাড়া দেয়নি।

একপর্যায়ে ওই বৈমানিক তরুণদের জিজ্ঞেস করেন, এটি ভারত না পাকিস্তান। একজন বলেন, ভারত। তখন ওই বৈমানিক স্লোগান দেন। তখন তরুণদের মধ্যে আরেকজন উল্টো স্লোগান দিলে তিনি তাদের দিকে পিস্তল তাক করেন। এ সময় তরুণরাও তার দিকে পাথর ছোড়া শুরু করলে তিনি দৌড় দেন। এভাবে শূন্যে গুলি করতে করতে প্রায় আধ কিলোমিটার দৌড়ে একটি পুকুরে ঝাঁপিয়ে পড়েন তিনি। সেখানে তিনি তার কাছে থাকা গুরুত্বপূর্ণ কিছু কাগজ গিলে ফেলেন এবং ভিজিয়ে নষ্ট করেন। তরুণরা তাকে অস্ত্র ফেলে দিতে বললেও তিনি তা করেননি। এ সময় এক তরুণ তার পায়ে গুলি করে।

পরে ওই বৈমানিক তাকে হত্যা না করার আহ্বান জানিয়ে উঠে এলে তরুণরা তাকে মারধর শুরু করে। এ সময় পাকিস্তানি সেনারা ঘটনাস্থলে এসে তাকে উদ্ধার করে ভিমবার শহরের খি ললচক এলাকায় নিয়ে যায়।

সেখানে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে ধৃত বৈমানিক জানান, তার নাম উইং কমান্ডার অভিনন্দন। কিন্তু জেনেভা কনভেনশনের কথা উল্লেখ করে নিজের পদমর্যাদা ছাড়া আর কিছু বলতে অস্বীকার করেন তিনি।

ভারতীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, ধরা পড়ার পর অভিনন্দনের কাছ থেকে পিস্তল, খালি কার্তুজের বাক্স, ছুরি, ভোজালি, রাইট ফিল্টার, কম্পাস, ম্যাপসহ আরও বেশকিছু জিনিস জব্দ করা হয়। অভিনন্দনের বাড়ি চেন্নাইতে। তার বাবার নাম এয়ার মার্শাল সিমহাকুট্টি বার্তামন। তিনি নিজেও একজন সাবেক বিমানবাহিনী কর্মকর্তা।

Bootstrap Image Preview