অজ্ঞাত একটি রোগে মাত্র ২০ দিনের ব্যবধানে একই পরিবারের ৫ জনের মৃত্যুর আলোচিত ঘটনায় ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীর ভান্ডারদহ গ্রামের আবু তাহেরের বাড়ি পরিদর্শন করেছে ঢাকা থেকে আসা রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ৫ সদস্যের একটি তদন্ত টিম।
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ৫ সদস্য তদন্ত টিমের সদস্যরা হলেন- ডা. গাজী শাহ আলম, ডা. তানজিনা নওরীন, ডা.দেবাশীষ কুমার শাহ, ডা.শাহনাজ পারভীন ও ডা.ইসমাইল খান।
বুধবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর দেড়টায় তারা মৃত পরিবারের বাড়িতে তদন্ত টিম পৌছানোর পর ওই পরিবারের অন্যান্য সদস্য, এলাকাবাসী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সাথে কথা বলেন এবং আবু তাহেরের বাড়ির ৪টি কক্ষ থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করেন।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ঠাকুরগাঁও ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন শাহজাহান নেওয়াজ সাংবাদিকদের বলেন, রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ৫ সদস্য তদন্ত টিমের সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করেছেন। রাজশাহী থেকে আরেকটি মেডিকেল টিম ওই উদ্দেশ্যে ঠাকুরগাঁওয়ে আসছেন। দুটো মেডিকেল টিমই ঠাকুরগাঁওয়ে ৩ দিন অবস্থান করবে। সংগৃহিত নমুনা ঢাকায় পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। ঢাকা থেকে পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে প্রতিবেদন আসলেই ৫ জনের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে বলে আশা করছেন তিনি।
অন্যদিকে, এলাকার লোকজন বলছেন, ঘটনাটি কোন ভাইরাস জনিত কারণ নয়। আবু তাহের পেশাগত কবিরাজ ছিলেন। দেবী-দেবতার পূজা করে আসতেন। পূজায় সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার কারণে প্রথমে তার মৃত্যু এবং পরে ধীরে ধীরে তার পরিবারের লোকজন মারা গেছেন বলে এলাকার লোকজন কুসংস্কার ছাড়চ্ছেন। তবে এসব কথা মেডিকেল টিমকে জানালেও বিষয়টি গুরুত্ব দেয়নি তারা।
উল্লেখ্য, গত ৯ ফেব্রুয়ারি অজ্ঞাত একটি রোগে ভান্ডারদহ মরিচপাড়া গ্রামের ফজর আলীর ছেলে আবু তাহের (৫৫) মৃত্যুবরণ করেন। এরপর ২১ ফেব্রুয়ারি একই দিনে মারা যান আবু তাহেরের জামাতা হাবিবুর রহমান (৩৫) ও স্ত্রী হোসনে আরা (৪৫)। এর দুইদিন পর ২৪ ফেব্রুয়ারি আবু তাহেরের দুই ছেলে ইউসুফ আলী (৩০) ও মেহেদী হাসান মৃত্যুবরণ ও ওই পরিবারের ৬/৭ জন অসুস্থ্য হলে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।
উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আক্রান্ত এলাকার ১ কিলোমিটারে চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারিসহ মুখে মাস্ক পড়ে চলাফেরা এবং স্থানীয় দু'টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয়। তবে এলাকায় এখন কোন আতঙ্ক নেয়। প্রতিষ্ঠান দু'টি আগামিকাল বৃহস্পতিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) খুলে দেয়া হবে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানা গেছে।