শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলায় তাবিয়া (১৫) নামে এক কিশোরী বিষ খেয়ে শ্বশুর বাড়িতে আত্মহত্যা করেছে।
মঙ্গলবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পালং মডেল থানা পুলিশ শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগ থেকে তাবিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেছে বলে জানা গেছে। তাবিয়া উপজেলার মহেশ্বপট্টি গ্রামের সিরাজুল ইসলাম মাদবরের মেয়ে।
এদিকে তাবিয়ার পরিবারের অভিযোগ শশুড় বাড়ির লোকজন বিশ খাইয়ে তাবিয়াকে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় তারা গোসাইরহাট থানায় অভিযোগ করেছেন।
পুলিশ, পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গোসাইরহাট উপজেলার মহেশ্বপট্টি গ্রামের মোকলেছ তপাদারের ছেলে আল আমিন তপাদার (১৭) ও একই গ্রামের সিরাজুল ইসলাম মাদবরের মেয়ে তাবিয়া (১৫) উপজেলা শহরের ইদিলপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী। গত বছর তাবিয়া অষ্টম শ্রেনী ও আল আমিন নবম শ্রেনীতে পড়া অবস্থায় তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রেমের টানে তারা দু’জন এক উকিলের মাধ্যমে বয়স এফিডেভিট করে গোপনে বিয়ে করে। বিয়ের ১৫ দিন পর জানাজানানি হলে দু’পক্ষের পরিবারই এ বিয়ে মেনে নিতে রাজি হয়নি। এর সপ্তাহ খানেক পর তাবিয়া তার পরিবারের কাউকে না জানিয়ে আল আমিনের সাথে শশুড় বাড়ি চলে যায়। এরপর তাবিয়ার সাথে তার পরিবারের কোন যোগাযোগ ছিলো না বা তাবিয়াও তার বাপের বাড়ি আর যায়নি। শশুড় বাড়ি থেকেই তাবিয়া অষ্টম শ্রেনীর জেএসসি পরীক্ষা দেয় এবং পরীক্ষায় পাশ করে। পরবর্তীতে তাবিয়া আর স্কুলে না গেলেও আল আমিন এ বছর দশম শ্রেনীর ছাত্র হিসেবে ক্লাশ চালিয়ে যায়।
মঙ্গলবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বেলা পৌনে ১১ টার সময় স্বামী আল আমিনসহ পবিারের লোকজন তাবিয়াকে গুরুতর অবস্থায় শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে পালং মডেল থানার পুলিশ তাবিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করেন এবং তাবিয়ার স্বামী আল আমিন ও শাশুড়িকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পরে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।
তাবিয়ার বাবা সিরাজুল ইসলাম মাদবর বলেন, সকাল ৮টার দিকে আল আমিন আমাকে ফোন দিয়ে বলে তাবিয়া বিষ খেয়েছে, তাকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি। এর কিছুক্ষণ পর আবার ফোন দিয়ে বলে তাবিয়া মারা গেছে। আমার মেয়েকে বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়ার পর তারা কৌশলে আমার মেয়েকে হত্যা করেছে। আমার মেয়ে হত্যার বিচার চেয়ে আমি মামলা দায়ের করবো।
গোসাইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা বলেন, মেয়ের পরিবার অভিযোগ নিয়ে থানায় এসেছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। তদন্ত চলছে, এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।