নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ভারতীয় বিমান বাহিনীর হামলায় মাত্র একজন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের ওই এলাকার গ্রামবাসী। কিন্তু ভারত দাবি করেছে, ঐ এলাকায় জঙ্গি গোষ্ঠী জয়েশ-ই-মোহাম্মদের বেশ কয়েকটি ঘাঁটি ও লঞ্চ প্যাডে হামলা চালিয়ে ৩শ জঙ্গিকে হত্যা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে ভারতের বেশ কিছু গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়, পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার জবাবে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ভারতীয় বিমান বাহিনীর হামলায় অন্তত ৩০০ সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে।
এ ব্যাপারে পাকিস্তানের গ্রামবাসী জানিয়েছে, মঙ্গলবার ভোরে চারবার ব্যাপক বিস্ফোরণের শব্দ পেয়েছেন তারা। তবে এই ঘটনায় কেউ নিহত হয়নি।
প্রত্যক্ষদর্শী ২৫ বছর বয়সী মোহাম্মদ আজমল বলেন, আমরা বেশ কিছু গাছ ভেঙে পড়তে দেখেছি এবং একটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হতে দেখেছি। সেখানে বোমা নিক্ষেপ করায় চারটি গর্ত তৈরি হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এমনকি পাকিস্তানের পক্ষ থেকেও হতাহতের খবর প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। দেশটি দাবি করেছে, নিয়ন্ত্রণ রেখা লঙ্ঘন করেছে ভারতীয় বিমান বাহিনী। তবে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
পাক সেনাবাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল আসিফ গফুর এক টুইট বার্তায় জানিয়েছেন, নিয়ন্ত্রণরেখা লঙ্ঘন করেছে ভারতীয় বিমান বাহিনী। তারা মুজাফফরাবাদ সেক্টরে অনুপ্রবেশ করেছে। পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ভারতের এয়ার স্ট্রাইকের পরপরই বেশ কয়েকটি টুইট করেছেন তিনি।
এক টুইট বার্তায় তিনি দাবি করেছেন, ভারতীয় সামরিক বিমান তাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন করার পর পাকিস্তানি জঙ্গি বিমানের ‘তাড়া খেয়ে পালানোর’ আগে বালাকোটের কাছে ‘বোমা ফেলে’ গেছে। এই ঘটনায় কোনো হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
পরবর্তীতে আরও এক টুইটে তিনি জানিয়েছেন, সময়মত উপযুক্ত সাড়া দিয়েছে পাকিস্তানের বিমান বাহিনী। ফলে পাক বাহিনীর তাড়া খেয়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে ভারতীয় সেনারা।
পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ভারতীয় হামলাকে চূড়ান্ত আগ্রাসন উল্লেখ করে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেন, ‘পছন্দনীয় সময়ে এবং সঠিক জায়গায় উপযুক্ত জবাব দেবে পাকিস্তান।’
কাশ্মীরে ভারতের বিমান হামলায় পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির সদস্যদের নিয়ে মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে জরুরি বৈঠকে বসেন ইমরান খান।
বৈঠক শেষে সম্ভাব্য সব ধরনের পরিণতির জন্য তৈরি থাকতে দেশের মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ইমরান খান।
এছাড়াও এক বিবৃতিতে ইমরান খান সশস্ত্র বাহিনী ও দেশের সাধারণ মানুষকে সমস্ত পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। এই অঞ্চলে ‘ভারতের দায়িত্বহীন নীতি’কে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের কাছে তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির জরুরি ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা ও অর্থমন্ত্রী, জয়েন্ট চিফ অব স্টাফ চেয়ারম্যান ও অন্যান্য জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।