বিশ্বজুড়েই চলছে সংঘাত। সমস্ত সংঘাত আর অশান্তিকে একই তত্ত্বের আওতায় ব্যাখ্যা হয়তো করা যায়। তবে কিছু কিছু পরিস্থিতিকে একটু গভীরভাবে দেখা জরুরি। কাশ্মীর-সমস্যা তেমন। গত প্রায় সত্তর বছর ধরে এই অনিন্দ্য সুন্দর ভূখন্ডটিকে ঘিরে ভারত আর পাকিস্তানের দ্বন্দ্বে ক্লান্ত ও বিধ্বস্ত কাশ্মীরবাসী।
অনেক যুবকরা তাদের জন্মভূমির মুক্তির লড়াইতে কেউ হাতে তুলে নিয়েছে একে-ফর্টি সেভেন, কেউ পাথরের টুকরো - আবার কেউ বা গিটার। কাশ্মীর সঙ্কটের শুরু ১৯৪৭য়ে দেশভাগের সময় কাশ্মীরের বিতর্কিত ভারতভুক্তির মধ্যে দিয়ে।
কাশ্মীরকে নিজেদের বলে দাবি করে আসছে পারমাণবিক অস্ত্রসমৃদ্ধ দুই প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তান। এর মধ্যে চিরবৈরী দেশ দুটির মধ্যে দুটি যুদ্ধ ও অসংখ্য বিচ্ছিন্ন লড়াই হয়েছে। কিন্তু স্থলবাহিনী কিংবা বিমানবাহিনীর কাশ্মীরের সীমান্তের নিয়ন্ত্রণরেখা লঙ্ঘনের ঘটনা একেবারেই বিরল। যদিও এ সীমান্তটিতে ব্যাপক সেনা মোতায়েন রয়েছে।-খবর এএফপির
হিমালয় অঞ্চল ঘিরে দক্ষিণ এশিয়ার দুই চিরশত্রুর মধ্যে যে কয়েকটি বড় লড়াই হয়েছে-
-১৯৪৭-
উপমহাদেশ থেকে ভারত-পাকিস্তান ভাগ হয়ে যাওয়ার পর ১৯৪৭ সালে দুই দেশ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। কাশ্মীরের স্থানীয় শাসক মহারাজা ভারতের নিয়ন্ত্রণ মেনে নিলে পাকিস্তান থেকে উপজাতীয় যোদ্ধারা হামলা চালায়।
-১৯৬৫-
এ বছর ভারত-পাকিস্তান এক সংক্ষিপ্ত লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়েছিল। পরে দুই দেশের মধ্যে অস্ত্রবিরতি ঘোষণা করা হয়েছে।
-১৯৮৪-
ভারতীয় বাহিনী এ বছর সিয়াচেন হিমবাহ দখল করে নেয়া। কারাকোরাম পার্বত্যাঞ্চলের এই বিচ্ছিন্ন মানববসতীহীন অঞ্চলটির দাবিদার পাকিস্তানও। ২০০৩ সালে অস্ত্রবিরতির আগে এই অঞ্চলটি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে বহু লড়াই হয়েছে।
-১৯৯৯-
পাকিস্তান সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীরা কাশ্মীর সীমান্ত অতিক্রম করে কারগিল পাহাড়ের পাদদেশে ভারতীয় সামরিক বাহিনীর একটি ফাঁড়ির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে পাল্টা লড়াইয়ে নামে ভারত। ১০ সপ্তাহব্যাপী ওই লড়াইয়ে দুপক্ষের হাজারখানেক প্রাণহানি ঘটেছে।
-২০১৬-
এ বছরের সেপ্টেম্বরে পাকিস্তানের কাশ্মীরে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালায় ভারত। এর সপ্তাহ দুয়েক আগে সীমান্তে ভারতীয় সেনা ফাঁড়িতে বিদ্রোহীদের হামলায় ১৯ জওয়ান নিহত হন।
এর পরে নভেম্বরে পাকিস্তান সীমান্তে একটি ভারতীয় সামরিকঘাঁটিতে পুলিশের ছদ্মবেশে হামলা চালালের ৯ সেনা নিহত হন।
-২০১৯-
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কাশ্মীরের পুলওয়ামায় এক আত্মঘাতী বোমা হামলায় ভারতীয় একটি আধাসামরিক বাহিনীর হামলায় ৪৪ জওয়ান নিহত হন। পাকিস্তানভিত্তিক জইশ-ই-মোহাম্মদ হামলার দায় স্বীকার করেছে।
পরে মঙ্গলবার কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে পাকিস্তান অংশে বিমান হামলায় চালায় ভারতীয় বিমানবাহিনী। যাতে ভারত ব্যাপক হতাহতের দাবি করলেও পাকিস্তান তা অস্বীকার করেছে।