বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলাটি ১২টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। এখানে প্রায় ২ লাখ মানুষের স্বাস্থ্য সেবার একমাত্র ভরসা হচ্ছে ৫০শয্যা বিশিষ্টি সারিয়াকান্দি সরকারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। কিন্তু জনবল সংকটের কারণে ৩১শয্যার হাসপাতাল পরিচালনাকারি স্টাফ দিয়েই চালানো হচ্ছে ৫০শয্যা বিশিষ্ট এ স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি। ফলে এই কমপ্লেক্সে কোন উন্নত চিকিৎসা মিলছে না, তাই ভেঙ্গে পড়েছে বর্তমান স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রম। যার কারণে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ডাক্তারদের। রোগীদের বিভিন্ন অজুহাতে পাঠানো হচ্ছে সদরের হাসপাতালে।
অফিস সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালের ১ম শ্রেণির ৩৩টি পদের মধ্যে কর্মরত আছে ৮ জন, ২য় শ্রেণির নার্স ২৮ টি পদের মধ্যে কর্মরত আছে ২৩ জন, ৩য় শ্রেণির কর্মচারী ১৪২টি পদের মধ্যে কর্মরত আছে ১২৮ জন, চতুর্থ শ্রেণির ২৯টি পদের মধ্যে কর্মরত আছে ১৭ জন। সরকার এ বৃহৎ জনগোষ্ঠীর স্বাস্থসেবা নিশ্চিত করতে ৩১ থেকে ৫০ শয্যার উন্নীত করছেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। কিন্তু প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও জনবলের অভাবে সরকারের মহৎ উদ্দেশ্য ব্যাহত হচ্ছে। ফলে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে উপজেলাবাসী।
হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ভর্তি রোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সাধারণ রোগীদের বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে রেফার্ড করে পাঠিয়ে দেয়া হয় জেলা সদরে। নারী ও শিশু ওয়ার্ডের অবস্থা আরও লাজুক। রোগীদের খাবারের পরিবেশ মানহীন। হাসপাতাল থেকে কয়েকটা ঔষুধ পাওয়া গেলেও সব ধরনের ঔষুধ বাহিরে থেকে কিনে আনতে হয়। রোগীর সংখ্যা বেশি থাকলেও অতিরিক্ত বেড না থাকাতে রোগীরা থাকার অভাবে নারী-পুরুষ মেঝেতে শুয়ে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে ভর্তিকৃতরা জানান।
এছাড়ও হাসপাতালের টয়লেট দুর্গন্ধময় পরিবেশ বিরাজ করছে। এতে একদিকে যেমন সাধারণ মানুষেরা চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অপরদিকে স্বাস্থ্য ঝুকিতে থাকতে হচ্ছে চিকিৎসা নিতে আসা অসহায় মানুষদের।
আরও জানা যায়, জরুরী বিভাগের ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারীদের দ্বারা ব্যবস্থা পত্র সেলাই ও ড্রেসিংয়ের কাজ করা হয় এখানে। ব্যবস্থা পত্র দেয়ার সময় ঔষুধ কোম্পানির লোকজন নির্দিষ্ট কোম্পানির ঔষুধ লিখতে জরুরী বিভাগের দায়িত্বরতদের ব্যবস্থা পত্র প্রভাবিত করেন। যার ফলে রোগীর অভিভাবকরা হয়রানির শিকার হয়।
এ ব্যাপারে সারিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ এস,এম,মাহমুদুর রশিদ এর সাথে কথা হলে তিনি বিডিমর্নিংকে জানান, ৩১ শয্যার জনবলে চলছে ৫০ শয্যার বিশিষ্ট হাসপাতাল। তারপরেও যেটুকু জনবল আছে তা দিয়েই আমরা আন্তরিকতার সঙ্গে রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি। রোগীদের চাপ সামলাতে সব শূন্য পদের চিকিৎসক ও জনবল নিয়োগের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছেন তিনি। তবে আশা করি অচিরেই নিয়োগ হলে রোগীদের আরও উন্নত সেবা দেয়া যাবে।