যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বিতীয় শীর্ষ বৈঠক করতে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন ট্রেনে করে ভিয়েতনামের পথে রওনা হয়েছেন।
শনিবার রাত ৯টার দিকে চীনের সীমান্ত শহর ড্যানডংয়ে পৌঁছায় তার ট্রেন। দুই হাজার ৮০০ মাইলের এ পথ পাড়ি দিতে কিমের সময় লাগবে পুরো ৬০ ঘণ্টা (আড়াই দিন)। ভিয়েতনামে কিমের পা পড়ার আগেই সেখানে পৌঁছে গেছে তার ১০০ দেহরক্ষী।
রোববার উত্তর কোরিয়ার কার্গো বিমানে চড়ে ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়ের নই বাই বিমানবন্দরে নামেন তারা। খবর ডেইলি মেইলের।
আগামী বুধ ও বৃহস্পতিবার হ্যানয়ে ট্রাম্প ও কিমের মধ্যে দ্বিতীয় শীর্ষ বৈঠকের কথা রয়েছে। হ্যানয়ের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত সরকারি গেস্টহাউসে দু’নেতার মধ্যে বৈঠক হতে পারে বলে রয়টার্সকে জানিয়েছে তিনটি সূত্র।
উত্তর কোরিয়ার এক কূটনৈতিক সূত্রের বরাতে রাশিয়ার তাস নিউজ এজেন্সি জানায়, স্থানীয় সময় বিকাল ৫টার দিকে কিম আর্মাড একটি ট্রেনে করে উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ং ছেড়েছেন।
কিম ভিয়েতনাম সফরের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন বা ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করতে রওনা হয়েছেন, এটি এখনও নিশ্চিত করেনি উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম। কিমকে বহনকারী ট্রেনটি ভিয়েতনামের সীমান্ত স্টেশন ডোং ড্যাং-এ থামবে। এখানে ট্রেন থেকে নেমে গাড়িযোগে ১৭০ কিলোমিটার দূরের হ্যানয়ে যাবেন। আবার শোনা যাচ্ছে, ভিয়েতনামে বিমানে যেতে পারেন কিম। আর খালি ট্রেন হ্যানয়ে যাবে। ফিরতি পথে ট্রেনে চড়বেন কিম।
ট্রাম্প-কিমের বৈঠককে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা জোরদার করেছে ভিয়েতনাম। শহরের রাস্তায় টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী। মোড়ে মোড়ে অতিরিক্ত চেকপোস্ট বসিয়েছে পুলিশ। ডোং ড্যাং সীমান্তের ট্রেন লাইনে বোমা শনাক্তকারী যন্ত্র দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে সেনা সদস্যরা।
তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন কিমের ১০০ দেহরক্ষী। গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, সাদা শার্টের ওপর কালো স্যুট পরিহিত দেহরক্ষীরা সারিবদ্ধ হয়ে বিমান থেকে নামছেন। বৈঠকস্থল ও যেসব পথ ব্যবহার করে নেতা চলাচল করবেন সেগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই সোচ্চার থাকবেন তারা। ভিয়েতনামের কুয়াং নিনহ ও ব্যাক নিনহ প্রদেশের শিল্প এলাকাগুলো পরিদর্শন করতে পারেন কিম। ট্রেনে বিদেশ সফর করা উত্তরের নেতার পারিবারিক ঐতিহ্য।
তার দাদা, উত্তর কোরিয়ার প্রতিষ্ঠাতা কিম ইল সাং এ ঐতিহ্যের সূচনা করেছিলেন। কিমের বাবা কিম জং ইল ২০০১ সালে ট্রেনে চড়ে মস্কো সফরে গিয়েছিলেন। সিউলের ডংগুক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কোহ ইউ হুয়ান বলেন, ‘এর মাধ্যমে উত্তর কোরিয়ানদের প্রতি এ বার্তা দেয়া হচ্ছে যে, তার দাদার ঐতিহ্যই সেরা এবং কিম পরিবার সবার চেয়ে শক্তিশালী।’