Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৭ মঙ্গলবার, মে ২০২৪ | ২৪ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

আম বাগানে পোকার আক্রমণ

নওগাঁ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২১ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৭:৪৯ PM
আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৭:৪৯ PM

bdmorning Image Preview


নওগাঁয় গাছে গাছে দেখা দিয়েছে আমের মুকুল। মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে মুখরিত চারিদিক। আবার কোন কোন গাছে মুকুল থেকে দেখা দিয়েছে আমের গুটি। এখন আমের বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন নওগাঁর আম চাষিরা। তবে মুকুলে হফার পোকার আক্রমণে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন চাষিরা। চাষিরা বলছেন, গত বছর আমের উৎপাদন ভালো হলেও ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এ বছর ন্যায্য দাম পেতে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন তারা।

বরেন্দ্র এলাকা হিসেবে খ্যাত জেলার সাপাহার, পোরশা ও নিয়ামতপুর উপজেলা এবং পত্নীতলা উপজেলার কিছু অংশ। এলাকার জমিতে বছরের একমাত্র ফসল বৃষ্টিনির্ভর আমন ধান। পানি স্বল্পতার কারণে এসব এলাকার জমি বছরের বেশির ভাগ সময় অনাবাদি পড়ে থাকে। ফলে এ এলাকার কৃষকরা এখন ধান ছেড়ে আম চাষে ঝুঁকেছেন। প্রতি বছর প্রায় ২ হাজার হেক্টরের অধিক জমিতে আম বাগান গড়ে উঠছে। আম রুপালি, আশ্বিনা, খিরসা, মল্লিকা, হাড়িভাঙা ও ন্যাংড়াসহ কয়েকটি জাতের আম চাষ করা হচ্ছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সূত্রমতে, এ বছর জেলায় ১৮ হাজার ৫২৭ হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে। এরমধ্যে সাপাহার উপজেলায় ৪ হাজার হেক্টর, পোরশায় ৯ হাজার হেক্টর, নিয়ামতপুরে ৯৫০ হেক্টর, পত্নীতলায় ২ হাজার ২০০ হেক্টর, ধামইরহাটে ৬১৫ হেক্টর, মান্দায় ৪০০হেক্টর, নওগাঁ সদরে ৪০০ হেক্টর, মহাদেবপুরে ৩৬০ হেক্টর, বদলগাছীতে ৩৪০ হেক্টর, রানীনগের ১৪৬ হেক্টর এবং আত্রাইয়ে ১১৬ হেক্টর। এ বছর আমের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ৫ লাখ মেট্রিকটন। গত বছর আম বাগান ছিল প্রায় ১৬ হাজার হেক্টর।

সাপাহার উপজেলার খুদ্রনালী গ্রামের আম চাষি তসলিম উদ্দিন বলেন, ‘প্রায় ৫০ বিঘা জমিতে বিভিন্ন জাতের আম বাগান আছে। গাছে মুকুল থেকে গুটি আসার উপক্রম হয়েছে। তবে হফার পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। পোকা দমনে কীটনাশক স্প্রে করা হচ্ছে। এতে পোকা দূর হয়ে যাবে এবং মুকুলের কোন ক্ষতি হবে না। কিছুদিন আগে সামান্য পরিমাণ যে বৃষ্টি হয়েছে এতে আম চাষিদের উপকার হয়েছে। একটু বেশি বৃষ্টি হলে সব গাছে একসাথে ঝেড়ে মুকুল বের হতে পারত।’

জয়পুর গ্রামের আম চাষি ওমর আলী জানান, বরেন্দ্র এলাকা হওয়ায় পানির সংকট। যার কারণে প্রতি বছরই বাড়ছে আমের বাগান। এঁটেল মাটি হওয়ায় এ এলাকার আমও বেশ সুস্বাদু। ধান থেকে আম লাভজনক।

বাসুলডাঙ্গা গ্রামের আবু ইউসুফ জানান, প্রায় ১৫ বিঘা জমিতে আম রুপালি ও আশ্বিনাসহ কয়েকটি জাতের আম বাগান আছে। তবে সিন্ডিকেটের কারণে চাষিরা পাকা আমের ন্যায্য দাম পাওনা থেকে বঞ্চিত হন। আগামীতে আমের মৌসুমে দামের ব্যাপারে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (উদ্ভিদ সংরক্ষণ) মাহবুবার রহমান জানান, উঁচু বরেন্দ্র ভূমি এলাকায় ধান চাষ না হওয়ায় প্রতি বছরই আম বাগান বাড়ছে। আম গাছে মুকুল এসেছে। হফার পোকার আক্রমণ দেখা দেয়ায় কৃষকরা কীটনাশক স্প্রে করছেন। আম মটর দানার মতো হলে হফার পোকা এবং ছত্রাকজনিত মোড়ক রোগ দমনে কীটনাশক স্প্রে করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আমের ভরা মৌসুমে চাষিরা দাম পান না। কারণ সব আম একসাথে বাজারে ওঠে। তবে আম রুপালি, আশ্বিনা ও বারি-৪ আমের দাম কিছুটা ভালো। কৃষি বিভাগ থেকে নতুন জাত বারি-১১ সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে আম বাজারজাত করা হলে কৃষকরা ভালো দাম পাবেন।

Bootstrap Image Preview