রাস্তার পাশে থলেতে মোড়ানো জীবন্ত নবজাতক!

রাস্তার পাশে নবজাতকের কান্নার শব্দ শুনে হঠাৎ ঘুম ভেঙে যায় মিজানুর রহমান দম্পতির। ঘরের বাইরে বেরিয়ে খুঁজতে শুরু করেন কান্নার উৎস। অবশেষে তারা কাপড়ের থলেতে মোড়ানো এক নবজাতক কন্যাকে খুঁজে পান। সাথে সাথে তারা হই-চই করে আশপাশের লোকজনকে জড় করেন। লোকজন চলে গেলেও নবজাতককে ফেলে যেতে পারেননি মিজানুর রহমান ও তার স্ত্রী। তারপর তারা শিশুটিকে উদ্ধার করে নিজেদের বাড়িতে নিয়ে যান।

ঘটনাটি ঘটেছে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার নাগপাড়া এলাকায়। খবরটি স্থানীয় প্রশাসনের কাছে গেলে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দ্বারা ওই নবজাতককে উদ্ধার করা হয়।

আজ বুধবার (২০ফেব্রুয়ারি) সকালে তিনি বিষয়টি জানার পর ইউএনওকে জানান। ইউএনও জাকিউল ইসলামের নির্দেশে দুপুরে সমাজসেবা দপ্তরের কর্মকর্তারা শিশুকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে নবজাতকের চিকিৎসার পর পুলিশের হেফাজতে দেওয়া হয়।

যোগীপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল বলেন, গতকাল মঙ্গলবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টার দিকে নাগপাড়া-সাখিদার পাড়া রাস্তার পাশে নবজাতকের কান্নার আওয়াজ পান মিজানুর রহমান ও তাঁর স্ত্রী নাজমিন আক্তার। ঘটনাস্থলে গিয়ে থলেতে মোড়ানো নবজাতককে দেখতে পান তারা। এই দম্পতি নবজাতককে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যত্ন করেন।

মিজানুর রহমান বলেন, তাদের একটি কন্যা সন্তান আছে। চিকিৎসকের পরামর্শে বাজার থেকে শিশুখাদ্য কিনে নবজাতককে খাওয়ানো হচ্ছে। প্রশাসন অনুমতি দিলে তার ছোট বোন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নবজাতককে লালন-পালন করবেন। তার ছোট বোনের কোনো সন্তান নেই।

বাগমারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক হাসান আলী বলেন, নবজাতক কন্যার বয়স এখনো ২৪ ঘণ্টা হয়নি। ওজন প্রায় তিন কেজি। সে একদম সুস্থ রয়েছে। ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরেই তাকে ফেলে যাওয়া হয়েছে।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আবদুল মমিন বলেন, নবজাতকটি সুস্থ রয়েছে। থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। পুলিশ নবজাতকের পরিচয় উদ্ধারের চেষ্টা করবে। এর সুরক্ষার জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তর সম্পূর্ণ প্রস্তুত। ইউএনওর নির্দেশনা পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।