লন্ডন থেকে পালিয়ে সিরিয়ায় গিয়ে ইসলামিক স্টেটে (আইএস) যোগ দেওয়া সেই ব্রিটিশ তরুণী শামিমা বেগম পুত্রসন্তানের জন্ম দিলেন। এটি তার তৃতীয় সন্তান। আগের দুটি সন্তান অপুষ্টি ও বিনা চিকিৎসায় মারা গেলেও সদ্য জন্ম নেওয়া শিশুটি এখনও সুস্থ আছে ।
জানা যায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে দিন ইউরোপীয় দেশগুলিকে তাদের আইএস জঙ্গিদের দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার অনুরোধ করলেন, সে দিনই সিরিয়া থেকে এক বার্তা আসে। ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিগোষ্ঠীতে যোগ দিতে ২০১৫ সালে ব্রিটেন থেকে সিরিয়া পালানো শামিমা বেগম সিরিয়ার শরণার্থী ক্যাম্পে একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছেন। ইউরোপীয় দেশ থেকে পালিয়ে আইএসে যোগ দেওয়া কোনও ব্যতিক্রমী ঘটনা নয়। কিন্তু, শামিমার বিষয়টা একটু অন্যরকম।
ব্রিটেনের ১৯ বছর বয়সি এই স্কুলপড়ুয়া ধরা পড়ার পর ক্যাম্প থেকেই সংবাদমাধ্যমকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন। গর্ভবতী শামিমার দাবি ছিল, সন্তানের নিরাপত্তার স্বার্থে তাঁকে ব্রিটেনে ফিরিয়ে আনা হোক। কিন্তু জঙ্গিদলে নাম লেখানো শামিমাকে ব্রিটিশ প্রশাসন ফেরাতে চায়নি। শামিমার ঘটনাই প্রশ্ন তুলে দিয়েছিল। সিরিয়া বা ইরাকে ধরা পড়া এই বিদেশি জঙ্গিদের কী হবে?
শামিমার পরিবারের আইনজীবী তাসনাইম আকুনজি বলেন, শামিমার সন্তানের জন্ম সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে নয়া মোড় আনল। এ বার মানবিকতার খাতিরে অন্তত শামিমাকে ফেরানোর কথা ভাবতে বাধ্য হবে ব্রিটেন।
শামীমা বেগমের জন্ম ব্রিটেনে। তাই তিনি ব্রিটিশ নাগরিক। কিন্তু তারপরও তাকে দেশে ফিরতে দেওয়া হবে কি না- তা নিয়ে ব্রিটিশ সরকার দ্বিধান্বিত, সেখানে তার সন্তানের নাগরিকত্ব কি হবে সেটা অনেক জটিল সমীকরণ হয়ে দাঁড়িয়ে।
সরকারের একজন মন্ত্রী জেরেমি রাইট বলেছেন, 'শামীমা বেগমের সন্তানের নাগরিকত্ব সোজা-সাপটা কোনো বিষয় নয়। তাকে (শামীমাকে) তার কর্মকাণ্ডের জবাবদিহি করতে হবে।'
এদিকে, ব্রিটেন থেকে যে কয়েকশ মুসলিম ছেলে-মেয়ে আইএসে যোগ দিতে সিরিয়া ও ইরাকে গিয়েছিল, তাদেরকে ফিরে আসতে দেওয়া উচিত কি উচিত নয়- তা নিয়ে তুমুল বিতর্ক চলছে।
তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ তাদের ফেরানোর পক্ষে নন। তিনি বলেছেন, আইএসে যোগ দিতে যাওয়া তরুণ-তরুণীরা যাতে না ফিরতে পারে তার চেষ্টা করে যাবেন তিনি।
তবে শামীমা বেগমের পরিবার আবেদন করেছে, শিশুটি তো নিরপরাধ, শিশুটির নিরাপত্তার জন্য মানবিক কারণে তাদের মেয়েকে ব্রিটেনে ফিরতে দেওয়া হোক।