শত্রুতার জেরে মাদ্রাসা প্রিন্সিপালকে গাড়িচাপা দিয়ে হত্যা করল শিক্ষক

সিলেটের ওসমানীনগরে মাও. শায়খুল ইসলাম (৫০) নামে এক মাদ্রাসা প্রিন্সিপালকে গাড়িচাপা দিয়ে একই মাদ্রাসার বাংলা বিভাগের শিক্ষক লুৎফুর রহমানের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের উপজেলার বুরুঙ্গা ১৯ মাইল নামক স্থানে এ ঘটনাটি ঘটে। 

নিহত মাও. শায়খুল ইসলাম সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার অনন্তপুর গ্রামের মৃত উস্তার আলীর ছেলে। ওসমানীনগরের বুরুঙ্গা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মাদ্রাসার অধ্যক্ষ।

পরিবার ও মাদ্রাসা শিক্ষকদের অভিযোগ, ওসমানীনগরের বুরুঙ্গা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মাদ্রাসার বাংলা বিভাগের লুৎফুর রহমান নামের এক শিক্ষক প্রাইভেটকারের চাপা দিয়ে ওই মাদ্রাসার প্রিন্সিপালকে হত্যা করেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকালে মাওলানা শায়েখুল ইসলাম মোটরসাইকেলযোগে বুরুঙ্গা যাচ্ছিলেন। মহাসড়ক থেকে বুরুঙ্গায় ঢোকার সময় পেছন দিক থেকে একই মাদ্রাসার বাংলা বিভাগের শিক্ষক লুৎফুর রহমান তার প্রাইভেটকার দিয়ে মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়।

এসময় ঘটনাস্থলেই মারা যান অধ্যক্ষ শায়খুল ইসলাম। ঘটনার সময় শিক্ষক লুৎফুর রহমান প্রাইভেটকার চালাচ্ছিলেন বলেও জানা যায়। 

বিষয়টি প্রথমে সড়ক দুর্ঘটনা বলে জানাজানি হলেও পরে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষসহ বিভিন্ন সূত্রে থেকে জানা গেছে, নিহত মাও. শায়খুলের সঙ্গে লুৎফুর রহমানের পূর্বশত্রুতা ছিল। সে কারণেই তিনি নিজ প্রাইভেটকার চাপা দিয়ে শায়খুল ইসলামকে হত্যা করেছেন।

ঘটনার পর তাজপুর ফায়ার ব্রিগেডের সদস্য ও পুলিশ নিহত মাওলানা শায়খুল ইসলামের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। 

শেখ ফজিলাতুন্নেছা আলিম মাদ্রাসা কমিটির সদস্য আবদুল হক বলেন, মাদ্রাসার বাংলা বিভাগের শিক্ষক লুৎফুর রহমান সময় মতো মাদ্রাসায় না আসাসহ বিভিন্ন অভিযোগের কারণে কত কয়েকদিন আগে বর্তমান অধ্যক্ষ শায়খুল ইসলাম লুৎফুর রহমানের বেতন কেটে নিয়েছিলেন। সেই সাথে নানা বিষয় নিয়ে অধ্যক্ষের সঙ্গে লুৎফুর রহমানের দ্বন্দ্ব চলছিল।

তিনি আরও জানান, ৫-৬ দিন পূর্বে অধ্যক্ষ শায়খুল ইসলামকে দেখে নেয়ার হুমকি দেন শিক্ষক লুৎফুর। এরপরই লুৎফুর রহমানের গাড়িচাপায় অধ্যক্ষ শায়খুল ইসলাম মারা যান। সবকিছু পর্যালোচনা করলে বোঝা যায় পরিকল্পিতভাবেই গাড়ি চাপা দিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে।

শেখ ফজিলাতুন্নেছা মাদ্রাসার ভাইস প্রিন্সিপাল মাওলানা আহমদ আলী হেলালী বলেন, দুর্ঘটনার পর আমার ঘটনাস্থলে এসে জেনেছি অধ্যক্ষ শায়খুল ইসলামকে চাপা দেয়া প্রাইভেটকারটি আমাদেরই আরেক শিক্ষক লুৎফুর রহমানের। এলাকার অনেকেই বলেছেন লুৎফুর রহমান ইচ্ছে করেই শাইখুল ইসলামকে চাপা দিয়ে হত্যা করেছেন। 

ওসমানীনগর থানার ওসি এসএম আল মামুন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মাওলানা শায়খুল ইসলামকে পরিকল্পিতভাবে তারই মাদ্রাসার আরেক শিক্ষক প্রাইভেটকার চাপা দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে হাইওয়ে পুলিশকে তদন্ত করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।