বুড়িগঙ্গার তীর দখল করে অবৈধ ভাবে গড়ে উঠা স্থাপনা গুড়িয়ে দেওয়ার সময় দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজলের শ্বশুরবাড়ি ভেঙ্গে দিয়েছে বিআইডব্লিউটিএর অভিযানকারীরা। এই সময় বাড়িটি রক্ষা করার আপ্রাণ চেষ্টা করেন কাজল।
বুধবার সকালে উচ্ছেদ অভিযানের তৃতীয় পর্যায়ে অষ্টম দিনে ভেঙে দেওয়া হয় কামরাঙ্গীরচরের ঝাউচর, বাদশা মিয়া স্কুল এলাকার অবৈধ স্থাপনা। ঝাউচরে ছিল কাজলের শ্বশুরবাড়ি। বাড়িটি ছিল নদীর সীমানা পিলার থেকে প্রায় একশ মিটার ভেতরে তিন তলা বাড়িটি নির্মাণ করা হয়েছে সদ্য। সাদা রঙের এই বাড়িটি এই এলাকায় সব স্থাপনার ভিড়ে ছিল অনন্য।
আশেপাশের বিভিন্ন স্থাপনা গুড়িয়ে দিয়ে অভিযানকারী দল বেলা তিনটার দিকে ওই বাড়িটির দিকে এগিয়ে যায় বুলডোজার নিয়ে। এ সময় এগিয়ে আসেন কাজল। তিনি দাবি করেন, এটি নদীর জায়গায় নয়। নির্মাণ হয়েছে ১৯৬১ সালে কেনা জমিতে। কিন্তু বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তারা তার কথা মানতে চাইছিলেন না। তখন কাজল বিভিন্ন জায়গায় মোবাইল ফোনে কথা বলতে শুরু করেন। এমনকি স্থানীয় পুলিশও নিয়ে আসেন। কিন্তু কোনো চেষ্টা কাজে আসেনি।
কারণ, অভিযান পরিচালনাকারী কর্মকর্তারা ফোন করেন বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যানকে। পরে রাজউক চেয়ারম্যানকে ফোন করে বাড়িটির অনুমোদন আছে না কি তা নিশ্চিত হন বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান। আর মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বলেন সেটি ভেঙে দিতে। এরপর আর কোনো কথা নয়, মুহূর্তেই নাই হয়ে গেল তিন তলা বাড়িটি।
গত ২৯ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া উচ্ছেদ অভিযানে একের পর এক ভাঙা পড়েছে আলোচিত ব্যক্তিদের স্থাপনা। স্থানীয় ক্ষমতাসীনদের পাশাপাশি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিমের দুটি স্থাপনাও।
আদালতের নির্দেশনায় বলা আছে, নদীর সীমানা পিলার থেকে ১৫০ মিটারের মধ্যে কোনো ধরনের স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না। তবে দেখা গেছে, কাজলের শ্বশুরের বাড়িটি নদীর সীমানা পিলার থেকে প্রায় একশ মিটার ভেতরের দিকে তৈরি করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, বাঁশ এবং রশি দিয়ে বাড়ির পেছনে নিজেরা সীমানাও তৈরি করেছেন।
এ বিষয়ে মোশাররফ হোসেন কাজল সাংবাদিকদের বলেন, ‘তারা উচ্ছেদ করছে আমাদের তো কোনো কথাই শুনতেছে না। এটা ১৯৬১সালে কেনা জমি। এটা আমাদের বৈধ জমি।’