নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে এক ভণ্ড কবিরাজ চিকিৎকার নাম করে ধর্ষণ করেছে বলে জানা গেছে। ভণ্ড কবিরাজের বাড়িতে উত্তেজিত এলাকাবাসী হামলা ও ভাংচুর চালিয়েছে। ভণ্ড কবিরাজ পলাতক রয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টায় উপজেলার রূপগঞ্জ ইউনিয়নের কেয়ারিয়া এলাকায়। এ ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ঢাকা মিরপুর-১১, পল্লবী থানার ৭ নম্বর সেক্টর এলাকার একটি মেয়ে গত মঙ্গলবার সকাল ১০টায় কবিরাজ দেখানোর জন্য রূপগঞ্জ ইউনিয়নের কেয়ারিয়া এলাকায় যান। সেখানে মৃত মদন মহন এর পুত্র কবিরাজ লাল চান বাবুর কাছে আসে সে।
এ সময় কবিরাজ ফেরদৌসিকে সম্পূর্ণ সুস্থ করতে ৪০ হাজার টাকা দাবি করে। ফোরদৌসির সাথে থাকা তার ভাবী ও ভাই ২০ হাজার টাকা দিতে রাজি হয়। ভণ্ড এ কবিরাজ তাতেই রাজি হয়ে ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় এবং রাত ১০টার আগে আসর বসবে না বলে।
এ সময় ভাই ও ভাবী ওই মেয়েকে রেখে চলে যায়। ভাই চলে যাওয়ায় সুযোগ বুঝেই ভণ্ড এই কবিরাজ লাল চান বাবু বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ওই মেয়েকে তার শয়নকক্ষে নিয়ে যেতে বলে। এ সময় ভাবী ওই মেয়ের সাথে গেলেও তাকে বের করে দেয়া হয়। 'সে বলে একা চিকিৎসা দেয়া হবে। চিকিৎসার সময় কাউকে রাখা যাবে না।'
এরপর ভণ্ড কবিরাজ ওই মেয়েকে রুমে নিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয় এবং প্রথমে তার কানে তিনটি ফু দিয়ে হাতের বাহুতে তিনটি থাপ্পর মারে। এর পরই তাকে জোরপুর্বক ধর্ষণ করে।
এ দিকে ভাবি ওই মেয়ের কোন সাড়া-শব্দ না পেয়ে বেলা পোনে বারোটার দিকে দরজায় ধাক্কা দিয়ে দেখতে পায় তাকে ধর্ষণ করছে। বাঁচাতে গেলে এই ভণ্ড লাল চান বাবু তাকেও কাপড় ধরে ধস্তাধস্তি করে।
এ সময় ভাবীর চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে ওই মেয়েকে বিবস্ত্র অবস্থায় উদ্ধার করে। এ ঘটনার পর উল্টো দেখে নেয়ার হুমকি দেয় ভণ্ড কবিরাজ। ঘটনার সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী উত্তেজিত হয়ে ভণ্ড কবিরাজ লাল চানের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুরের ঘটনা ঘটায়।
এলাকাবাসী জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ কেয়ারিয়া এলাকার কবিরাজের সহকারী মরন চানের সহযোগিতায় ভণ্ড কবিরাজ লাল চান বাবুর (৫২) কাছে হয়তো অনেকেই চিকিৎসার নামে ধর্ষণের স্বীকার হয়েছে। আজ ধরা পড়ায় তার অপকর্মের চিত্র বেরিয়ে এসেছে। আমরা তার সর্বাচ্চ শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
এ ঘটনায় ধর্ষিতার ভাই বাদি হয়ে রূপগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছে। ঘটনার পর থেকেই ভণ্ড কবিরাজ লাল চান বাবু পলাতক রয়েছে।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল হক বলেন, এ ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। ইতিমধ্যে এদের ধরার জন্য একটি টিমও পাঠিয়েছি। তারা পালিয়েছে শুনেছি, তবে তাদের আটকের জোর চেষ্টা চলছে।