Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৬ বৃহস্পতিবার, মে ২০২৪ | ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

চৌহালীতে বোরোর বাম্পার ফলনের আশা কৃষকের

ইদ্রিস আলী, চৌহালী (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
প্রকাশিত: ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৪:৪০ PM
আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৪:৪০ PM

bdmorning Image Preview


সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলায় চলতি মৌসুমে শুরু হয়েছে বোরো চাষাবাদ। ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাঠে মাঠে পানি সেচ, জমি প্রস্তুত ও চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। কৃষি কাজে সহযোগিতা করছে কৃষাণীরাও। তবে মাঝে মাঝে বিদ্যুতের লো-ভোল্টেজের কারণে কিছুটা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাদের। শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ ঠিকমতো থাকলে সুষ্ঠুভাবে ধান ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকরা। তবে লোকসান ঠেকাতে আগামী বোরো ধান ক্রয় মৌসুমে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনার দাবি জানান তারা।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে চৌহালী উপজেলায় এবার উফশী ও হাইব্রিড ১,৮১৫ (এক হাজার আটশত পনেরো) হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে ৬৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের উৎপাদন বেশি হচ্ছে। এর মধ্যে ব্রি-ধান ২৯, ব্রি-ধান ২৮, ব্রি-ধান ৫৮ সহ ২ হক্টের হাইব্রিড ধান চাষ হচ্ছে। উপজেলায় চলতি মৌসুমে চাষিদের মধ্যে বোরো চাষের ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা পরিলক্ষিত হচ্ছে। শীতের প্রকোপ কিছুটা কম থাকায় কৃষকরা কোমর বেঁধে মাঠে নেমে পড়েছে।

কৃষকরা জানান, প্রতিবছর বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়ে থাকে। এ মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। ফলে শীত এবং কুয়াশার প্রকোপ অনেক কম থাকায় বোরো ধানের চারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে কম। কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটলে এবছরও বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন চাষিরা।

উপজেলা রেহাইপুখুরিয়া  গ্রামের কৃষক সোনাউদ্দিন বলেন,  নলকূপ দিয়ে আমাদের চাষাবাদ করতে হয়। সবাই একসাথে জমিতে চারা রোপণ ও জমি প্রস্ততে নলকূপের ওপর কিছুটা চাপ পড়েছে। দিনে কয়েকবার বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করে। সাথে রয়েছে বিদ্যুতের লোডশেডিং ও লো-ভোল্টেজ। ইঞ্জিন চালিত মেশিন থেকে ঠিকমতো পানি  পাওয়ায় জমি প্রস্তুত করতে কোন সমস্য হচ্ছে না।

চৌহালীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে সরেজমিনে দেখা যায়, কৃষকেরা কৃষি বিভাগের পরামর্শক্রমে উৎসবের সহিত সারিতে বোরো ধানের চারা রোপণ করছে। সেই সাথে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি পাচিং (ভূমিতে ডাল পুতে) ব্যবহার করছে।

উপজেলা বিনানই গ্রামের কৃষক  রহিম বলেন,  বিঘাপ্রতি জমি চাষ করতে খরচ পড়ে ১০ হাজার থেকে ১১ হাজার টাকা। এর মধ্যে সার, কীটনাশক, জমি চাষ-রোপণ, পানি সেচ, ধান কাটা-মাড়াই রয়েছে। বিঘাপ্রতি ফলন হয় ২০-২২ মণ। বর্তমান বাজারে ধানের দাম ৭৫০ টাকা করে। যাদের নিজস্ব জমি আছে তাদের কিছুটা লাভ থাকে। কিন্তু যারা বর্গাচাষি তাদের কিছুই থাকে না। এতে প্রতিবছর আমাদের লোকসান গুনতে হয়। সরকার যদি সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনে তাহলে ন্যায্য দাম পাওয়া যাবে বলে তারা জানান। উপজেলা বিভিন্ন গ্রামের চাষি ও কৃষক পরিবারদের দাবি সরকার যেন সরাসরি কৃষকের কাজ থেকে ধান ক্রয় করেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জেরিন আহমেদজানান, চলতি বছরে বোরো মৌসুমে কৃষককে সার, বীজ সহায়তা এবং কৃষাণীকে এনএডিবির আওতায় সার, বীজ বিতরণসহ বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, সরকার কৃষিবান্ধব সরকারচাষিদের প্রণোদনা কর্মসূচি ও  রাজস্ব প্রকল্পসহ বিভিন্ন কর্মসূচির আওতায় বিনামূল্যে সার, বীজ, কীটনাশক কৃষকদের হাতে পৌছে দিচ্ছেন। এতে কৃষকরা অনেকটাই উপকৃত হচ্ছে। কৃষি বিভাগের পরামর্শক্রমে উৎসবের সহিত তারা সারিবদ্ধভাবে বোরো ধানের চারা রোপণ করছে। সেই সাথে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি পাচিং (ভূমিতে ডালপুতে) ব্যবহার করছে। সারিতে চারা রোপণ করলে বিঘাপ্রতি ৩/৫হাজার চারা বেশি লাগানো যায়। এতে জমিতে ভার বাতাস পায়। ফলে রোগ-বালাই, পোকামাকর কম লাগে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারও বোরো আবাদে বাম্পার ফলন হবে ইনশাআল্লাহ।

Bootstrap Image Preview