Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ সোমবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

৩০০ কিলোমিটার গতিতে ছুটবে ট্রেন

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ১১:০৫ AM
আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ১১:০৫ AM

bdmorning Image Preview


ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-কুমিল্লা-ফেনী-চট্টগ্রাম রুটে হাইস্পিড রেলপথ নির্মাণ করবে সরকার। তবে এই রেলপথ হবে ব্যালাস্টলেস। নতুন এই ব্যালাস্টলেস ট্র্যাকে ট্রেন চলবে ঘণ্টায় ৩০০ কিলোমিটার গতিতে।

ব্যালাস্টলেস রেলপথে পাথরের পরিবর্তে শুধু কংক্রিটের ঢালাইয়ের উপরেই বসানো হবে রেল ট্র্যাক। হাইস্পিড ট্রেনের জন্য এমন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।
তবে একসময় বাংলাদেশের রেলপথ মানেই ব্যালাস্ট্রেড। এই রেলপথে গ্রানাইট পাথর ব্যবহার করা হয়। এই পথ তৈরিতে ইস্পাতের স্লিপার এবং কাঠের বন্ধন ব্যবহার করা হয়। রেললাইনে পাথর দেওয়ার কারণ হচ্ছে যাতে ট্রেন লাইনচ্যুত না হয়।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ঘণ্টায় ৩০০ কিলোমিটার গতির ট্রেন চলাচলের জন্য ব্যালাস্টলেস ট্র্যাক নির্মাণ করতে হবে। ট্র্যাকের স্থায়িত্ব, নিরাপত্তা, ট্র্যাক রক্ষণাবেক্ষণ ও আয়ুষ্কাল বিবেচনায় ব্যালাস্টলেস ট্র্যাক অধিকতর গ্রহণযোগ্য।

নির্মাণ ব্যয় একটু বেশি হলেও নানা সুবিধা পাওয়া যাবে ব্যালাস্টলেস ট্র্যাকে। যেখানে ব্যালাস্ট্রেড ট্র্যাকের অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল ২৫ থেকে ৩০ বছর সেখানে ব্যালাস্টলেস ট্র্যাকের অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল ৫০ থেকে ৬০ বছর। এছাড়া ব্যালাস্টলেস ট্র্যাকের স্থায়িত্ব ও নিরাপত্তা ব্যালাস্ট্রেডের তুলনায় বেশি। সবকিছু বিবেচনায় প্রস্তাবিত দ্রুতগতির রেলপথে ৩০০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলতে হলে ব্যালাস্টলেস ট্র্যাক প্রয়োজন বলে মত দিয়েছে মন্ত্রণালয়।

সম্প্রতি ‘ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-কুমিল্লা-ফেনী-চট্টগ্রাম’ রুটে দ্রুতগতির রেলপথ নির্মাণের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা এবং বিশদ ডিজাইন’ প্রকল্পের সভা হয়েছে রেলভবনে। ব্যালাস্টলেস ট্র্যাক নির্মাণের বিষয়ে সভায় মতামত দেন প্রজেক্ট ইমপ্লিমেন্টেশন কমিটি (পিআইসি)। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক কাজী মো. রফিকুল আলম।

সভায় প্রকল্পের পরিচালক কামরুল আহসান উপস্থিত ছিলেন। ব্যালাস্টলেস ট্র্যাক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম দ্রুতগতির রেলরুটে ব্যালাস্ট্রেড ট্র্যাকের পরিবর্তে ব্যালাস্টলেস ট্র্যাক নির্মাণ করা হবে। ট্র্যাক নির্মাণে খরচ সামান্য বেশি হলেও এর স্থায়িত্ব অনেক বেশি। ব্যালাস্ট্রেড ট্র্যাক পাথর ও স্লিপারের উপর নির্মিত। অন্যদিকে ব্যালাস্টলেস ট্র্যাক কংক্রিটের ঢালাইয়ের উপর নির্মিত হবে। সহজে এই রুট ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।

তিনি আরও বলেন, প্রকল্পের ফিজিবিলিটি স্টাডি চলছে। এরপরেই আমরা মূল প্রকল্প গ্রহণ করবো। ফিজিবিলিটি স্টাডি শেষ পর্যায়ে।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ফিজিবিলিটি স্টাডি প্রকল্পে প্রথমে চারটি রুট চিহ্নিত করেছিলো পরামর্শকেরা। রুট চারটি হলো, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-কুমিল্লা-ফেনী-চট্টগ্রাম, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-কুমিল্লা-লাকসাম-ফেনী-চট্টগ্রাম, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ফেনী-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-লাকসাম-ফেনী-চট্টগ্রাম। তবে শেষ পর্যন্ত সবদিক বিবেচনা করে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-কুমিল্লা-ফেনী-চট্টগ্রাম রুট বেছে নেওয়া হয়েছে। ট্রাফিক ভলিউম ও বাণিজ্যিক লাভ বিবেচনায় প্রথম রুট বেছে নেওয়া হয়েছে।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, মূল সম্ভাব্যতা সমীক্ষা এবং বিশদ ডিজাইন প্রকল্প(পিএফএস) অনুযায়ী প্রকল্পের মোট ব্যয় ১০০ কোটি ৬০ লাখ টাকা। ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ কাজ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ছে ২০২০ সালের জুন মাস পর্যন্ত। অন্যদিকে ব্যয় বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ১১০ কোটি টাকা। প্রকল্প অনুমোদনের পর প্রশাসনিক আদেশ এবং পরামর্শক নিয়োগে দেরি হওয়ায় মেয়াদ ব্যয় বাড়ছে। সমীক্ষা প্রকল্পের সমস্ত তথ্য-উপাত্ত নিয়েই আরও ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে হাইস্পিড ট্রেন চলাচলে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে সরকার। ফলে বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন দিগন্তের সূচনা হবে।

Bootstrap Image Preview