কোলস্টেরল কম থাকায় জেলায় কদর বাড়ছে 'কাদাকনাথ' ওরফে কালো মুরগী। ভারতের কোথাও কোথাও এক কিলোগ্রাম কাদাকনাথ মুরগির মাংস বিক্রি হচ্ছে অন্তত ৮০০ টাকা কিলোগ্রাম দরে।
এই মুরগি চাষে পিছিয়ে নেই দেশটির নদিয়া জেলাও। অনেক চাষিই কাদাকনাথ ওরফে কালো মুরগির চাষে এগিয়ে আসছেন। এমনকি ‘আতমা’ প্রকল্পে সরকারও এই মুরগি চাষে খামারিদের উৎসাহ দিচ্ছেন।
কৃষ্ণনগরের রাষ্ট্রীয় মুরগি খামারের ইনচার্জ সারিকুল ইসলাম জানাচ্ছেন, এই প্রজাতির মুরগি বহুদিন ধরেই ভিন্ন রাজ্যে চাষ হচ্ছে। অন্ধ্রপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, তামিলনাড়ু প্রভৃতি প্রদেশে এই মুরগি পালন করা হচ্ছে। প্রাণিসম্পদের পাঠ্যপুস্তকে বহু দিন ধরেই এই মুরগি জায়গা করে নিয়েছে।
এ রাজ্যে দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলায় কাদাকনাথের বিক্ষিপ্তভাবে চাষ হয়। সেই সব এলাকায় কাদাকনাথের মাংস বিক্রি হচ্ছে অন্তত ৮০০ টাকা কিলোগ্রাম দরে। এরপরেই নদিয়ার চাষিরা কাদাকনাথ চাষে উৎসাহ দেখাচ্ছেন। গত কয়েক মাসের মধ্যে এই জেলায় বহু চাষি গতানুগতিক ব্রয়লায় চাষের পরিবর্তে এই প্রজাতির মুরগীর চাষ করেছেন।
সারিকুল বলেন, এক কিলোগ্রাম কাদাকনাথ মুরগী পালন করতে সর্বোচ্চ ২৫০ টাকা খরচ হয়। জেলার পুরোদমে এই মুরগির চাষ হলে দেশি মুরগীর দরে কনড়নাথের মাংস লোকজনকে দেওয়া যাবে।
তিনি বলেন, এতে কোলস্টেরলের পরিমাণ কম থাকে। বাত ও হার্টের রোগীদের ক্ষেত্রে এই মাংস বিশেষ উপযোগী। এমনকি, গবেষণায় দেখা গিয়েছে, কিছু ক্ষেত্রে ক্যানসার প্রতিরোধের ক্ষেত্রেও এই মুরগির মাংসের জুড়ি নেই। ফলে দিন দিন কাদাকনাথের চাহিদা বাড়ছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ দফতর সূত্রে জানা গিছে, এ জেলার বিদ্যানগরের তপনকুমার মণ্ডল, কৃষ্ণনগর-১ ব্লকের বিষ্ণুপুরের শঙ্কর মুখোপাধ্যায়, নাকাশাপাড়ার সৌরভ সরকার, তেহট্টের সন্দীপ কর, হাঁসখালির মিঠুন বিশ্বাসেরা এই মুরগীর চাষ করছেন।
জেলা প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন, সব থেকে বড় সমস্যা এই রাজ্যে এই প্রজাতির মুরগীর ছানা পাওয়া যায় না। ফলে তা আনতে হয় পুনে ও জব্বলপুর থেকে। আর এই কারণেই এই মুরগির চাষ রাজ্যে খরচ সাপেক্ষ হচ্ছে।
কিছুদিন আগে জেলায় ‘আতমা’ প্রকল্পের আধিকারিকেরা এই মুরগীর চাষ নিয়ে আগ্রহ দেখিয়েছেন। সেটা বাস্তবায়িত হলে জেলাতেই বড় খামারিরা মুরগীর ছানা তৈরি করবেন। তা হলে জেলার মানুষকে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা কিলোগ্রাম দরে কাদাকনাথ খাওয়ানো যাবে।