মিয়ানমারে মুসলিম রোহিঙ্গাদের পর এবার সাধারণ বৌদ্ধ ও উপজাতিদের ওপর নির্যাতন শুরু করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। ইতোমধ্যে এদের অল্পসংখ্যক পালিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশও করেছে।
আরাকান আর্মি দমনে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানের কারণে রাখাইন নতুন করে অস্থিতিশীল হওয়ায় বড় ধরনের অনুপ্রবেশের আশঙ্কা করছে বাংলাদেশ। ইতিমধ্যে কয়েকজনকে আবার সীমান্ত থেকে ফেরত পাঠিয়েছে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষীরা। আরও কিছু সংখ্যক সীমান্তে অপেক্ষা করছে বাংলাদেশে প্রবেশের জন্য।
এমন পরিস্থিতিতে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত উ লুইনকে আবারো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দণি-পূর্ব এশিয়া অনু বিভাগের মহাপরিচালক দেলোয়ার হোসেন গতকাল মঙ্গলবার রাষ্ট্রদূতকে ডেকে ঢাকার উদ্বেগের কথা জানান। মহাপরিচালক অনুপ্রবেশের প্রতিবাদ জানিয়ে ভবিষ্যতে পুনরাবৃত্তি না ঘটার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মিয়ানমারকে অনুরোধ জানান। রাষ্ট্রদূত বিষয়টি তার সরকারকে জানানোর আশ্বাস দেন।
মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে বলা হয়, গত দেড় বছরে বাংলাদেশের শতচেষ্টা সত্ত্বেও একজন রোহিঙ্গাকে ফেরত না নিয়ে নতুন করে পরিকল্পিতভাবে রাখাইন অস্থিতিশীল করে দলে দলে বৌদ্ধ এবং উপজাতিদের বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। যা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।
রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে এমন পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে এখনই ব্যবস্থা নেয়ার জন্য মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানায় বাংলাদেশ।
রাষ্ট্রদূতকে বলা হয়, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফেরার অনুকূল পরিবশে নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আহ্বান মিয়ানমারকে পূরণ করতে হবে, অন্যথায় যেকোনো অস্থিতিশলি পরিস্থিতির জন্য মিয়ানমারকেই দায় নিতে হবে।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারে সামরিক বাহিনী মুসলমান রোহিঙ্গা অধ্যুষিত রাখাইন রাজ্যে নির্বিচারে গণহত্যা ও নির্যাতন চালানোর কারণে দেশটি থেকে কমপক্ষে সাত লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে দেশটি থেকে আরও চার লাখের বেশি রোহিঙ্গা এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। জাতিসংঘের সহযোগিতায় কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ায় তাদের জন্য শরণার্থী শিবির খোলা হয়েছে। তাদের দেশে ফেরত পাঠাতে অব্যাহত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। এ অবস্থায় মিয়ানমার থেকে নতুন করে আর কাউকে আশ্রয় দিতে আগ্রহী নয় সরকার।