Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৭ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ফেলে যাওয়া নবজাতক এখন মায়ের কোলে

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৬:৩৩ PM
আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৬:৩৩ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ফেলে যাওয়া সেই নবজাতকের মায়ের খোঁজ মিলেছে।

আজ মঙ্গলবার শারমিন নামে এক নারী ওই নবজাতককে নিজের সন্তান দাবি করেন। পরে পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যাচাই-বাছাই শেষে শিশুটি শারমিন বলে নিশ্চিত হয়।

এর আগে শুক্রবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে একদিন বয়সী ওই কন্যা শিশুকে হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগে ফেলে যায় স্বজনরা। খোঁজাখুঁজির পর স্বজন পাওয়া না গেলে পাশের শয্যার এক রোহিঙ্গা নারী শিশুটিকে পরিচর্যা করেন। নিজের বুকের দুধ পান করিয়ে মায়ের মমতায় আগলে রাখেন। পাশাপাশি হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্সরা সার্বক্ষণিক নজর রাখেন।

জানা গেছে, বাড়িতেই জন্মেছিল শিশুটি। পিঠে ক্ষত দেখে তাকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। মা অসুস্থ থাকায় তাকে হাসপাতালে আনেন শিশুর নানা শেখ আহমদ। সঙ্গে পরিচিত এক নারীও আসেন।

নবজাতকের নানা শেখ আহমদ বলেন, তার মা অসুস্থ ছিল। এজন্য এক পরিচিত নারীকে সঙ্গে নিয়ে নাতনিকে হাসপাতালে আনি। ওই নারীকে দেখাশুনার করতে বলে আমি বাড়িতে যাই। খরচের জন্য দুই হাজার টাকা দিয়েছি।

শেখ আহমদ বলেন, ‘মঙ্গলবার হাসপাতালে ফিরে দেখি ওই নারী আমার নাতনিকে ফেলে চলে গেছে। চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বললে তারা আমাকে প্রমাণ হাজির করতে বলে। এরপর শিশুর মাকে নিয়ে আসলে কর্তৃপক্ষ যাচাই-বাছাই শেষে নাতনিকে বুঝিয়ে দেয়।’

এদিকে বুকের ধনকে ফিরে পেয়ে এখন খুশির ঝিলিক শারমিনের চোখে-মুখে। তবে স্বামীর খোঁজ না পাওয়াতে চিন্তার শেষ নেই তার।

শারমিন বলেন, বাচ্চাকে পেলেও স্বামীর খোঁজ মেলেনি।

শারমিন বলেন, ‘পাহাড়তলি সরাইপাড়া এলাকায় একটি পোশাক তৈরির কারখানায় কাজ করতাম। আমার স্বামী ইব্রাহীমও একসঙ্গে কাজ করতো। পরে আমাদের মধ্যে বিয়ে হয়। কিন্তু অন্তঃসত্বা হওয়ার পর সে আমাকে ফেলে চলে যায়। শ্বশুর বাড়ির ঠিকানা জানলেও কখনো যাওয়া হয়নি। মেয়ে হওয়ার পর স্বামীকে খুঁজতে আমার বাবাকে নিয়ে শ্বশুর বাড়ি যাই। কিন্তু সেখানে ইব্রাহীমের খোঁজ পাইনি। জেনেছি সে গাজীপুরে আছে। এরপর হাসপাতালে ফিরে দেখি মেয়েকে রেখে পালিয়েছে ওই নারী।’

এ ব্যাপারে হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আখতারুল ইসলাম বলেন, সন্তান দাবি করার পর আমরা পুলিশকে খবর দিয়েছি। এরপর যাচাই-বাছাই শেষে নিশ্চিত হওয়ার নবজাতককে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আলাউদ্দিন তালুকদার বলেন, ওই নারীকে গাইনী বিভাগে নিয়ে গিয়ে পরীক্ষা করানো হয়। পাশাপাশি কাগজপত্র দেখে নিশ্চিত হয়ে শিশুটিকে হস্তান্তর করি।

এদিকে মায়ের কোল ফিরে পেলেও এখন হাসপাতাল ছাড়তে পারছে না ওই নবজাতক। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, পিঠের ক্ষতের অস্ত্রোপচার করাতে হবে। এরপর সুস্থ হলে বাড়ি পাঠানো হবে তাকে।

Bootstrap Image Preview