দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণের মাত্রা দিনদিন বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে চলন্ত গাড়িতে যৌন হয়রানির ঘটনা। দেশের বন্দর নগরী চট্টগ্রামে গত তিনদিনের ব্যবধানে ঘটে যাওয়া এমনই ২টি ঘটনা জানাজানি হওয়ায় এ নিয়ে ভাবনায় পড়েছে পুলিশ।
চট্টগ্রামে ধর্ষণ-অপহরণে জড়িয়ে পড়ছেন প্রাইভেট কার (ব্যক্তিগত গাড়ি) চালকেরা। তাঁদের লক্ষ্য স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসাপড়ুয়া শিক্ষার্থী। গাড়ির মালিক কিংবা সন্তানদের স্কুল-কলেজে পৌঁছানোর পর পাওয়া সময়ে গাড়িচালকদের কিছু সদস্য এই অপরাধ করে আসছেন।এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন অভিভাবকেরাও।
চট্টগ্রাম নগর পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) এস এম মেহেদী হাসান বলেন, ব্যক্তিগত গাড়িচালকদের সংঘবদ্ধ একটি চক্র শিক্ষার্থীদের কখনো গাড়িতে তুলে ধর্ষণ, আবার কখনো অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা করছে। ব্যক্তিগত গাড়িতে স্কুল-কলেজপড়ুয়া কিংবা কোনো নারী-শিশুকে উঠতে বললে সতর্ক হতে হবে। পাশাপাশি গাড়ি মালিকদের বলা হয়েছে চালক কোথায় যান, কী করে খবর রাখার জন্য।
জানা গেছে, গত ২৭ জানুয়ারি সকালে নগরের ব্যস্ততম জামাল খান এলাকা থেকে কৌশলে গাড়িতে তুলে নিয়ে আলিম মাদ্রাসার এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করেন দুই গাড়িচালক। একটি কমিউনিটি সেন্টার চিনিয়ে দেওয়ার কথা বলে তাঁকে গাড়িতে তোলা হয়েছিল। এরপর উচ্চস্বরে গান ছেড়ে দেয় তারা। প্রায় ২০ মিনিট গাড়িটি নগরের অলিগলি ঘুরে গাড়ির সিটের সঙ্গে মুঠোফোন রেখে ধর্ষণের দৃশ্য ভিডিও করে গণি বেকারি মোড়ে ছাত্রীটিকে নামিয়ে দেওয়া হয়।
পরদিন আবার ওই ছাত্রীকে ডাকেন তারা। না এলে ধর্ষণের ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়ানোর হুমকি দেন তাঁরা। বিষয়টি পুলিশকে জানানোর পর গাড়িচালক শ্যামল দেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁর কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আরেক গাড়িচালক সাহাবুদ্দিনকে ধরতে যায় পুলিশ। রাতে নগরের ফিশারিঘাটে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন তিনি।
চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে শ্যামল দে বলেন, নিহত সাহাবুদ্দিন ওই মাদ্রাসাছাত্রী ছাড়াও আরও কয়েকজন মেয়েকে গাড়িতে তুলে ধর্ষণ করেছেন। কিন্তু কেউ ভয়ে মামলা করেননি।
এর আগে ২৪ জানুয়ারি নগরের সরকারি মুসলিম উচ্চবিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র মো. সাইফুল আলমকে কৌশলে অপহরণ করে ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয় তার পরিবারের কাছে। তিন ঘণ্টা পর পুলিশি তৎপরতায় অপহরণকারীরা তাকে রাস্তায় ফেলে যায়।
কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামরুজ্জামান বলেন, স্কুলছাত্র অপহরণকারী গাড়িচালক চক্রের সদস্যদের শনাক্ত করা গেছে। কয়েক দিনের মধ্যে তাদের গ্রেফতার করা হবে।